আমরা যারা গাঁইয়া ছোটলোকেদের রাজনীতি করি, তাদের কাছে ২০১৬ সালের এই চলতি
নির্বাচনটা খুব অদ্ভুত ঢাপুয়া বাতাস। বাংলার রাজনীতিতে পুঁজির
ব্যাখ্যাকারেদের রোল রিভার্সাল বেশ মজার কান্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে রাজনৈতিক
দলের বড় পুঁজির দালালি করার কথা - তারা না করে, পথের ব্যবসায়ীদের পাশে
দাঁড়াচ্ছে - ঘোমটা পরে নয়, সরাসরি - এতদিন যাদের পশ্চিমি উচ্চশিক্ষা
পাত্তাই দেয়নি - স্বীকারই করে নি সেটা অর্থনীতি আর প্রযুক্তি বলে - যাদের
সেই অবস্থানটি নেওয়ার কথা নয় তারা তাঁদের মান্যতা দিল - আর যাদের বড় পুঁজির
পাশে দাঁড়াবার কথাই নয়, শৃঙ্খল ভাঙার কথা - তারা কিন্তু রাজনৈতিকভাবেই বড়
পুঁজির পাশে দাঁড়াবার কাজ খুব জোর দিয়ে ক্রে চলেছেন; সেই পরিচয় বদলের
কম্মটা বিন্দুমাত্র আনন্দের নয় এবং বোধহয় নতুন করে শিক্ষা নেওয়ার সময়
এসেছে।
বড় পুঁজি নির্ভর শিল্পবিপ্লবের প্রাথমিক দর্শন হল উৎপাদনের কেন্দ্রিকতা এবং এই কেন্দ্রিকতা সফল হয় না যদি না শ্রমকে বৃহতভাবে প্রতিস্থাপন করা যায় বিপুল যন্ত্র ব্যবহার এবং বিশ্বজোড়া প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠের মাধমে। ফলে শ্রম প্রতিস্থাপনকারী প্রযুক্তি বিকাশ ঘটতে শুরু করে বিদ্যুৎবাহী স্বতঃচল মাকু চালানোর মাধ্যমে। তাতেও কাপড়ের মিলের লাভ দেখা যায় নি যতদিন না পলাশী উত্তর সময়ে বাংলা লুঠের সম্পদ লন্ডনে যায় নি আর ভারতের বস্ত্রশিল্পকে গায়ের জোরে উচ্ছেদ আর দেশিয় বাজার দখল করে মিলগুলির খুব খারাপ উৎপাদন এই বাজার গুলোতে বিক্রির ব্যবস্থা করা যায় নি।
বড় পুঁজির এই দখলদারির কাজে সরাসরি সাহায্য করেছে ঔপনিবেশিক প্রযুক্তি আর শিক্ষায় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং তাঁদের উচ্চমধ্যবিত্ত হয়ে ওঠার প্রণোদনা। সে এই সম্পদ লুঠ আর শ্রম প্রতিস্থাপনের কাজে বড় পুঁজিকে নিঃশর্ত সাহায্য করে গিয়েছে এবং সিঙ্গুরের কারখানার একটা হিসেব দেখেছি, ১৫০০ কোটি টাকার কোম্পানিতে সরাসরি কাজ হওয়ার কথা মেরেকেটে ১০০০-১৫০০ সাদা কলারের শ্রমিকের। সেটা সরাসরি আসত মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই। ফলে বড় পুঁজির বিকাশের সঙ্গে মধ্যবিত্তের স্বার্থ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত - ফলে বড় পুঁজির দখলদারির স্বার্থ মধ্যবিত্ত দেখবে এটা আর আশ্চর্যের কি?
আমরা যারা ছোট গ্রামীন উতপাদকেদের রাজনীতিতে জড়িয়ে রয়েছি, তারা মনে করি ভারতের/এশিয়ার গ্রামীন উৎপাদন ব্যবস্থা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দর্শন - যেখানে হাজারো বিক্রেতা, হাজারো উৎপাদক বিরাজ করে - পুঁজির, লাভের মালিকানা একজন বা কয়েকজনের হাতে জড়ো হয় না, সারা সমাজে ছড়িয়ে যায়। ফলে সামাজিক সাম্য বজায় থাকে। তেমনি বড় পুঁজি প্রণোদিত হোস্টাইল টেকওভারের মত শুধুই গায়ের জোরে, বড় পুঁজির তৈরি প্রশাসনের আইনের লাঠি দেখিয়ে অনিচ্ছুক উতপাদকের উৎপাদন পরিকাঠামো কিনে নেওয়ারও সুযোগ নেই গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থায়। এই উৎপাদন ব্যবস্থা অনেক বেশি গণতান্ত্রিক, অনেক বেশি পরিবেশ বান্ধব, কম অপচয়ী, প্রযোজনভিত্তিক, স্থানীয় অর্থনীতিকে জোরদার করে, স্থানীয়ভাবে কর্ম সৃষ্টি করে, স্থানীয় জ্ঞানভিত্তিক - লাভ দূর দেশে বসে থাকা একজন বা কয়েকজনের হাতে গিয়ে জড়ো হয় না। ফলে আমরা সরাসরি এই শ্রম প্রতিস্থাপন দর্শনের বিরোধী, বড় পুঁজির গায়ের জোরে দখলদারির বিরোধী, শ্রমের অবমাননার বিরোধী।
অবশ্যই এই ব্যবস্থায় বড় পুঁজির ব্যবস্থাপক মধ্যবিত্তের পুনর্বাসনের জায়গা নেই। স্বাভাবিকভাবেই এই দর্শনটি যে মধ্যবিত্ত তাঁদের স্বার্থেই অপছন্দ করবেন এবং করছেনও। গত কয়েক দশক ধরে বড় পুঁজি, জমি, মালিকানা, উৎপাদন পদ্ধতি বিষয়ে সারা ভারতে যে বিতর্ক উঠেছে তা মনের জানালা খুলে দেয়। নতুন করে ভাবতে শেখায়।
বড় পুঁজি নির্ভর শিল্পবিপ্লবের প্রাথমিক দর্শন হল উৎপাদনের কেন্দ্রিকতা এবং এই কেন্দ্রিকতা সফল হয় না যদি না শ্রমকে বৃহতভাবে প্রতিস্থাপন করা যায় বিপুল যন্ত্র ব্যবহার এবং বিশ্বজোড়া প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠের মাধমে। ফলে শ্রম প্রতিস্থাপনকারী প্রযুক্তি বিকাশ ঘটতে শুরু করে বিদ্যুৎবাহী স্বতঃচল মাকু চালানোর মাধ্যমে। তাতেও কাপড়ের মিলের লাভ দেখা যায় নি যতদিন না পলাশী উত্তর সময়ে বাংলা লুঠের সম্পদ লন্ডনে যায় নি আর ভারতের বস্ত্রশিল্পকে গায়ের জোরে উচ্ছেদ আর দেশিয় বাজার দখল করে মিলগুলির খুব খারাপ উৎপাদন এই বাজার গুলোতে বিক্রির ব্যবস্থা করা যায় নি।
বড় পুঁজির এই দখলদারির কাজে সরাসরি সাহায্য করেছে ঔপনিবেশিক প্রযুক্তি আর শিক্ষায় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং তাঁদের উচ্চমধ্যবিত্ত হয়ে ওঠার প্রণোদনা। সে এই সম্পদ লুঠ আর শ্রম প্রতিস্থাপনের কাজে বড় পুঁজিকে নিঃশর্ত সাহায্য করে গিয়েছে এবং সিঙ্গুরের কারখানার একটা হিসেব দেখেছি, ১৫০০ কোটি টাকার কোম্পানিতে সরাসরি কাজ হওয়ার কথা মেরেকেটে ১০০০-১৫০০ সাদা কলারের শ্রমিকের। সেটা সরাসরি আসত মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই। ফলে বড় পুঁজির বিকাশের সঙ্গে মধ্যবিত্তের স্বার্থ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত - ফলে বড় পুঁজির দখলদারির স্বার্থ মধ্যবিত্ত দেখবে এটা আর আশ্চর্যের কি?
আমরা যারা ছোট গ্রামীন উতপাদকেদের রাজনীতিতে জড়িয়ে রয়েছি, তারা মনে করি ভারতের/এশিয়ার গ্রামীন উৎপাদন ব্যবস্থা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দর্শন - যেখানে হাজারো বিক্রেতা, হাজারো উৎপাদক বিরাজ করে - পুঁজির, লাভের মালিকানা একজন বা কয়েকজনের হাতে জড়ো হয় না, সারা সমাজে ছড়িয়ে যায়। ফলে সামাজিক সাম্য বজায় থাকে। তেমনি বড় পুঁজি প্রণোদিত হোস্টাইল টেকওভারের মত শুধুই গায়ের জোরে, বড় পুঁজির তৈরি প্রশাসনের আইনের লাঠি দেখিয়ে অনিচ্ছুক উতপাদকের উৎপাদন পরিকাঠামো কিনে নেওয়ারও সুযোগ নেই গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থায়। এই উৎপাদন ব্যবস্থা অনেক বেশি গণতান্ত্রিক, অনেক বেশি পরিবেশ বান্ধব, কম অপচয়ী, প্রযোজনভিত্তিক, স্থানীয় অর্থনীতিকে জোরদার করে, স্থানীয়ভাবে কর্ম সৃষ্টি করে, স্থানীয় জ্ঞানভিত্তিক - লাভ দূর দেশে বসে থাকা একজন বা কয়েকজনের হাতে গিয়ে জড়ো হয় না। ফলে আমরা সরাসরি এই শ্রম প্রতিস্থাপন দর্শনের বিরোধী, বড় পুঁজির গায়ের জোরে দখলদারির বিরোধী, শ্রমের অবমাননার বিরোধী।
অবশ্যই এই ব্যবস্থায় বড় পুঁজির ব্যবস্থাপক মধ্যবিত্তের পুনর্বাসনের জায়গা নেই। স্বাভাবিকভাবেই এই দর্শনটি যে মধ্যবিত্ত তাঁদের স্বার্থেই অপছন্দ করবেন এবং করছেনও। গত কয়েক দশক ধরে বড় পুঁজি, জমি, মালিকানা, উৎপাদন পদ্ধতি বিষয়ে সারা ভারতে যে বিতর্ক উঠেছে তা মনের জানালা খুলে দেয়। নতুন করে ভাবতে শেখায়।