ইংরেজি বছর প্রায় শেষ হতে গেল। দীর্ঘ উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ, তার পরে শহরে এসে কম্পিউটার খারাপ হয়ে যাওয়ায় খুব বেশী কিছু লিখতে পারিনি। সঙ্গে জুটেছে পরম প্রকাশের তাড়া। জানুয়ারির তিন তারিখ বাংলা আকাদেমিতে পরকাশ পাচ্ছে। এটি নিয়ে আমি জেরবার। কেননা লেখা থেকে সম্পাদনা থেকে বানান দেখা পাতা সাজানো সব আমাকে একা হাতে করতে হচ্ছে।
ভালোও লাগছে এত ব্যস্ততার মধ্যে লোকফোকে আসা বন্ধুর সংখ্যা প্রায় ৭০০০০ ছুঁতে চলল।
তার মধ্যেই খুঁজছি আমার সোনার বাংলার শেষ কয়েকটা লাইন। শেষে পেলাম এই ফেবুতে https://www.facebook.com/ritaroymithu/posts/585008598212580।
অনুমতি না নিয়েই তুলে দিলাম, আর ওনার লেখাটা নিশ্চয়ই আমাদের গভীরভাবে ছুঁয়ে যাবে। পাদপূরণ হিসেবে শেষ কয়েকটা পঙক্তি ব্যাবহার করব।
মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অথবা আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র থেকে " আমার সোনার বাংলা " গানটির সম্পূর্ণ অংশ প্রচারিত হতো। রেডিও শুনে শুনে এতবড় গানটি আমি মুখস্থ করে ফেলেছিলাম। আরও অনেক গানের সাথে এই গানটিও গাইতাম, এমনি নিজের মনেই গাইতাম। সবচেয়ে ভাল লাগতো " তোমার এই খেলাঘরে, শিশুকাল কাটিলরে" প্যারাটি।
গানটি কবি গুরু ১৯০৫ সালে রচনা করেছিলেন, [ ইংরেজ শাসক কর্তৃক বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে]। বাংলার এই অপরূপ শোভা উনি দেখেছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে থাকাকালীন সময়টিতে। শিলাইদহে কবি 'গগন হরকরার' দেখা পান, গগন হরকরার কন্ঠে গীত," আমি কোথায় পাব তারে'র বাউল সুরের অনুকরণে এই গানটিতে সুরারোপ করেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই গানের প্রথম দশ লাইনকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনোনয়ন করেছিলেন। জাতীয় সঙ্গীত কমপোজ করেছিলেন সুরকার সমর দাস !!
২০০১ সালে আমার মেয়ে মৌটুসী আন্তঃস্কুল ডিবেট কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। গর্বিত পিতামাতাদেরকেও ঐ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিশাল বড় কোন এক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিল এক ঝাঁক কিশোর-কিশোরী। সৌভাগ্যক্রমে আমাদের মৌটুসীও ঐ দলে ছিল। জাতীয় সঙ্গীত যখন শুরু হয়, গ্যালারীর সকলেই দাঁড়িয়ে পড়ে, [কিছু মানুষ বসে ছিল], কিশোর-কিশোরীদের সাথে অনেকেই কন্ঠ মিলিয়েছিল, আমিও তাদের একজন। বলতে বাধা নেই, গানটি করার সময় আমি অঝোর ধারায় কাঁদছিলাম। ততদিনে আমাদের আমেরিকা চলে আসার সকল প্রস্তুতি শেষ, ১লা অক্টোবারের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ চূড়ান্তভাবে পরাজিত, পূর্ণিমা শীলেরা ধর্ষিত, ঠিক এমনই এক সময় আমি আকুল হয়ে কাঁদছিলাম।
**কি জানি কেনো, এত বছর পরেও, যে কোন সময়, জাতীয় সঙ্গীতের সুর যখন বেজে উঠে, তখনই আমি নয়ন জলে ভাসি**
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস
আমার প্রাণে, ওগো আমার প্রাণে বাজায় বাঁশী।
ওমা ফাগুণে তোর আমের বোলে, ঘ্রাণে পাগল করে,
ওমা অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে কি দেখেছি মধুর হাসি।
কি শোভা, কি ছায়াগো, কি স্নেহ কি মায়াগো
কি আঁচল বিছায়েছো বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মত
মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়নজলে ভাসি।
তোমার এই খেলাঘরে, শিশুকাল কাটিলরে
তোমার এই ধূলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানিক।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কি দীপ জ্বালিস ঘরে
তখন খেলাধূলা সকল ফেলে
তোমার কোলে ছুটে আসি।
ধেনু চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে
সারাদিন পাখীডাকা ছায়ায় ঢাকা তোমার পল্লীবাটে।
তোমার ধানে ভরা আঙ্গিণাতে জীবনের দিন কাটে
ওমা, আমার যে ভাই তারা সবাই, তোমার রাখাল তোমার চাষী।
ওমা তোর চরণেতে, দিলেম এই মাথা পেতে
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ওমা গরীবের ধন যা আছে তাই দেবো চরণতলে
আমি পরের ঘরে কিনবো না তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসী।।
ভালোও লাগছে এত ব্যস্ততার মধ্যে লোকফোকে আসা বন্ধুর সংখ্যা প্রায় ৭০০০০ ছুঁতে চলল।
তার মধ্যেই খুঁজছি আমার সোনার বাংলার শেষ কয়েকটা লাইন। শেষে পেলাম এই ফেবুতে https://www.facebook.com/ritaroymithu/posts/585008598212580।
অনুমতি না নিয়েই তুলে দিলাম, আর ওনার লেখাটা নিশ্চয়ই আমাদের গভীরভাবে ছুঁয়ে যাবে। পাদপূরণ হিসেবে শেষ কয়েকটা পঙক্তি ব্যাবহার করব।
মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অথবা আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র থেকে " আমার সোনার বাংলা " গানটির সম্পূর্ণ অংশ প্রচারিত হতো। রেডিও শুনে শুনে এতবড় গানটি আমি মুখস্থ করে ফেলেছিলাম। আরও অনেক গানের সাথে এই গানটিও গাইতাম, এমনি নিজের মনেই গাইতাম। সবচেয়ে ভাল লাগতো " তোমার এই খেলাঘরে, শিশুকাল কাটিলরে" প্যারাটি।
গানটি কবি গুরু ১৯০৫ সালে রচনা করেছিলেন, [ ইংরেজ শাসক কর্তৃক বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে]। বাংলার এই অপরূপ শোভা উনি দেখেছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে থাকাকালীন সময়টিতে। শিলাইদহে কবি 'গগন হরকরার' দেখা পান, গগন হরকরার কন্ঠে গীত," আমি কোথায় পাব তারে'র বাউল সুরের অনুকরণে এই গানটিতে সুরারোপ করেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই গানের প্রথম দশ লাইনকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনোনয়ন করেছিলেন। জাতীয় সঙ্গীত কমপোজ করেছিলেন সুরকার সমর দাস !!
২০০১ সালে আমার মেয়ে মৌটুসী আন্তঃস্কুল ডিবেট কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। গর্বিত পিতামাতাদেরকেও ঐ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিশাল বড় কোন এক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিল এক ঝাঁক কিশোর-কিশোরী। সৌভাগ্যক্রমে আমাদের মৌটুসীও ঐ দলে ছিল। জাতীয় সঙ্গীত যখন শুরু হয়, গ্যালারীর সকলেই দাঁড়িয়ে পড়ে, [কিছু মানুষ বসে ছিল], কিশোর-কিশোরীদের সাথে অনেকেই কন্ঠ মিলিয়েছিল, আমিও তাদের একজন। বলতে বাধা নেই, গানটি করার সময় আমি অঝোর ধারায় কাঁদছিলাম। ততদিনে আমাদের আমেরিকা চলে আসার সকল প্রস্তুতি শেষ, ১লা অক্টোবারের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ চূড়ান্তভাবে পরাজিত, পূর্ণিমা শীলেরা ধর্ষিত, ঠিক এমনই এক সময় আমি আকুল হয়ে কাঁদছিলাম।
**কি জানি কেনো, এত বছর পরেও, যে কোন সময়, জাতীয় সঙ্গীতের সুর যখন বেজে উঠে, তখনই আমি নয়ন জলে ভাসি**
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস
আমার প্রাণে, ওগো আমার প্রাণে বাজায় বাঁশী।
ওমা ফাগুণে তোর আমের বোলে, ঘ্রাণে পাগল করে,
ওমা অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে কি দেখেছি মধুর হাসি।
কি শোভা, কি ছায়াগো, কি স্নেহ কি মায়াগো
কি আঁচল বিছায়েছো বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মত
মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়নজলে ভাসি।
তোমার এই খেলাঘরে, শিশুকাল কাটিলরে
তোমার এই ধূলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানিক।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কি দীপ জ্বালিস ঘরে
তখন খেলাধূলা সকল ফেলে
তোমার কোলে ছুটে আসি।
ধেনু চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে
সারাদিন পাখীডাকা ছায়ায় ঢাকা তোমার পল্লীবাটে।
তোমার ধানে ভরা আঙ্গিণাতে জীবনের দিন কাটে
ওমা, আমার যে ভাই তারা সবাই, তোমার রাখাল তোমার চাষী।
ওমা তোর চরণেতে, দিলেম এই মাথা পেতে
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ওমা গরীবের ধন যা আছে তাই দেবো চরণতলে
আমি পরের ঘরে কিনবো না তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসী।।