Monday, May 27, 2019

উপনিবেশবাদ বিরোধী চর্চা - নবজাগরনীয় ভদ্রলোকিয় হিন্দুত্ববাদ - ২০১৯এর লোকসভা নির্বাচন

জোনসের উদ্যমে ভদ্রবিত্তরা পুনর্বাসিত হয়ে মুক্তির স্বাদ অর্জন করেছে এবং কার্যত বিইস্লামিকিকরণের উদ্যম নেওয়া শুরু করেছে - যে রাজত্বে তারা মন্ত্রীও হয়েছিল। অথচ উপনিবেশিক সরকারে তাদের মন্ত্রী হতে আরও দেড়শ বছর অপেক্ষা করতে হবে - বহু কষ্টে ভদ্রলোকেরা উঠতে পারত হল শুধুই ডেপুটি পদ পর্যন্ত - কিন্তু তাতেই কি দাসত্ব উতসাহ। ১৮২০/২৫ থেকেই বঙ্গীয় নবজাগরণের আড়ালে হিন্দুত্বের জিগির উঠতে আরম্ভ করেছে, সেইরকম ভাষা লব্জ তৈরি হচ্ছে একেরপর এক।শুধু ইসলাম নয় গ্রামীনের খিস্তি করাটাও নবজাগরণীয় সাহিত্যের ফ্যাশানে রূপান্তরিত হচ্ছে ভদ্রলোকিয় লন্ডনীদের দেখাদেখি।
প্রথমে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে গিলক্রিস্টিয় নব্য বাংলা ভাষার হায়ারার্কি তৈরি করছে - সাহেব চাকুরেদের কি নামে ডাকা হবে, অভদ্রলোকেরা কিভাবে তাদের সামনে সম্মান দেখাবে সেই সব নির্দেশাবলী লেখা হচ্ছে। এটা সামগ্রিকভাবে একটা ভদ্রলোকিয় প্রকল্প।
পরে এটা গতি পাবে বিদ্যাসাগরের হাতে যখন তিনি সেখানে যাবেন। তিনি এবং তাঁর সহকারী সমবিব্যহারে শুরু হবে সাহিত্যে, কথ্য ভাষায় যবনী মিশেল বাদ দেওয়ার উদ্যোগ। সাধু নামক একটা বাংলা ভাষা পরিকল্পিত হবে। একই সঙ্গে প্রমিত হিন্দি তৈরি হবে সঙ্গে কেটেকুটে - যা আজ ভাজপার মুখের ভাষা। এই হিন্দুয়ানির জোয়ারে মুসলমান সমাজ ভদ্রবিত্ত 'হিন্দু' সমাজ থেকে বর্জিত হল, সঙ্গে বর্জিত হল অভদ্ররাও, কিভাবে পরের স্তবকে আলোচনা করছি। বিদ্যাসাগর মিলের ভারত ইতিহাস অনুবাদ করলেন। মিল কোন দৃষ্টিতে ভারত ইতিহাস লিখেছিলেন আমরা জানি। প্রাচ্যবাদের ঘুর্ণিপাকে ঢুকে পড়ে মুসলমান বিরোধী হিন্দুবাদী নবজাগরনীয় বাঙ্গালিত্ব নির্মান ঘটল। আজ বাঙ্গালির খাওয়া, সাজ, পোষাক, জীবনধারণ, কথাবার্তা, সম্পর্ক, কৃষ্টি ইত্যাদি বলতে যা বুঝি সে সবের নির্মানপর্ব চলছিল হিন্দুত্ববাদী নবজাগরণের প্রথমপর্বে।
মুসলমানত্বকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীনদের পিছিয়েপড়া দাগিয়ে দেওয়া শুরু হল - নাহলে লুঠেরা নবজাগরণ যে প্রগতিশীল কাজ সেটা বোঝানো যায় না। ১৭৬৩ থেকে ফকির-সন্ন্যাসী লড়াই শুরু হয়েছে, গ্রাম বাংলা তেতে আছে ছোটলোকেদের লড়ায়ে - সেনা লেলিয়ে দিয়েছে গণহত্যা ঘটাচ্ছে সাম্রাজ্য। ইংরেজদের সঙ্গে খুন অত্যাচার আর লুঠকর্মে নিযুক্ত শহুরে নবজাগরিত ভদ্রবিত্ত গ্রামে লড়াইরত গ্রামীনদের সরকার বিরোধী ছোটলোকামিতে ক্ষুব্ধ। কোম্পানির হাতে পরিকল্পিত হিন্দুত্ববাদী নবজাগরণ প্রকল্প ততদিনে কলকাতায় শেকড় গেড়েছে। ঔপনিবেশিক রাজত্বে লুঠের ছোটতরফ ভদ্রলোকেদের দাসত্বমূলক সুখাহারের প্রসাদ গ্রহণে ব্যাঘাত ঘটছিল গ্রামীনদের লড়াই। ভদ্রলোকেদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলেই গাঁইয়া ছোটলোকেদের গালাগালি দেওয়াটা জায়েজ হয়ে গিয়েছিল ভদ্রলোকেদের - পরে দিকে মার্ক্সবাদীরা আরও বড়ভাবে দেবে।তাই ঔপনিবেশিক হিন্দুত্ববাদী নকুলে ভদ্র সাহিত্যে চাঁড়াল, চাষা, কুসংস্কারচ্ছন্ন, অশিক্ষিত, মুচি ক্যাওট, অসভ্য, ইতর, সাঁওতাল ইত্যাদি নির্বিচারে গালাগাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের মুচিরাম গুড় হল ছোটলোককে কিভাবে দেখা হবে তার বয়ান আর আনন্দমঠে ফকিরদের বর্জন করে লড়ায়ের ইতিহাস কিভাবে লেখা হবে তার বয়ান তৈরি করে গেলেন।
আজকের ভদ্রলোকেদের ভাষা এবং ভদ্রবিত্তীয় হিন্দুত্ববাদীদের ভিত সেই তাত্ত্বিক অবস্থান থেকে গড়ে উঠেছে। এবং খুব গুরুত্বপুর্ণ হল ভদ্রলোক হিন্দুত্ববাদীরা গত ৮০-৯০ বছর ধরে তাদের উচ্চবর্ণিক হিন্দুত্ববাদ বাংলার বিশাল পরিমানে তথাকথিত অভদ্রলোকেদের খাওয়াতে পেরেছে। ফেসবুকে এই প্রবণতা স্পষ্ট। একটু খেয়াল করে যদি দেখেন অধিকাংশ ভাজপা বা সঙ্ঘী ট্রোল অভদ্রলোকিয় উপাধিধারীরা।
২০১৯এর নির্বাচন এই তাত্ত্বিক অবস্থানকে পাকা করল এবং আগামী দিনে হিন্দুত্ববাদের শেকড় আরও গভীরে যাবে তার ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি হল। এটা স্পষ্ট যতদিন যাবে এই বিভাজন আরও বাড়বে।

Monday, May 6, 2019

৬০০ বছর আগের রান্নার বই - নিয়ামাতনামাই নাসিরশাহী

গত বছ তিথির সূত্রে পেয়েছিলাম এই খবরটি যে ২০১৬ সালের নেহা ভার্মার মুঘল অন দ্য মেনুঃ আ প্রোব ইন্টু কালনারি ওয়ার্ল্ড অব দ্য মুঘল এলিট প্রকাশ সূত্রে মালবের সুলতান ঘিয়াসালদিন খলজি(শাসন কাল ১৪৬৯-১৫০০)র সময়ে রচিত নিয়ামাতনামাই নাসিরশাহী নিয়ে লন্ডনে আলোচনা হয়। এই বইতে মুঘল অভিজাতদের উপযোগী কিছু খাদ্য তৈরি এবং তার উপাদানের কথা বলা হয়েছে। এই উপাদানগুলির রগ সারাবার গুণের কথাও লেখা আছে। সুলতানের সিংহাসনে আরোহনের স্মৃতিতে এই বইটি লেখা হয়। ব্রিটিশ লাইব্রেরির যে ব্লগে এই বইটা নিয়ে বিশদে আলোচিত হয়েছে সেটির উল্লেখ করা গেল।
নিয়ামাতনামায় সিঙ্গাড়া(সমোসা) তৈরির পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে -
Mix together well-cooked mince with the same amount of minced onion and chopped dried ginger, a quarter of those, and half a tūlcha [a measure] of ground garlic and having ground three tūlchas of saffron in rosewater, mix it with the mince together with aubergine pulp. Stuff the samosas and fry (them) in ghee. Whether made from thin course flour bread or from fine flour bread or from uncooked dough, any of the three (can be used) for cooking samosas, they are delicious.
ঝোল তৈরিরও বর্ণনা আছে
pīchha, namely the surplus water that is removed from the cooking pot after cooking rice and separating it. Put mūng pulse into the water and boil it. Chop fresh sandal and take its juice. Put the myrobalan and cardamoms into it and cook it. Put in salt. When it is cooked add some mint leaves and serve it.
শরবত তৈরির পদ্ধতিও বলা হয়েছে
mince coconut and leave it (to soak) in sweetened water. Strain off the coconut milk and, if desired, put the syrup in it and also mangoes if so wished. Then drink it with bhāt and add fresh ginger, onions, lime juice, cardamoms, cloves, pepper, turmeric and fenugreek and flavor it with asafoetida. Then drink it with bhāt [cooked rice or maize].
সবুজ তরকারি করার পদ্ধতি
Another recipe for green vegetables: boil vine greens in dūgh and water. Then take them off, squeeze them well and open them out and fan them. Then having roasted and ground cumin, salt and sesame seeds, add them.
পানের উপকারিতা সম্বন্ধে লিখছে
The qualities of that tanbūl are that the teeth are strengthened, diseases of the tongue, lips, gullet, throat and windpipe are prevented, as is inflammation of the chest. All the foregoing diseases are prevented and the intellect is strengthened, the eyes made bright, the quality of hearing is improved, the nose is purified, halitosis is banished and all illnesses are repelled. Hair becomes longer and shinier and is strengthened, broken bones mend and food that is bound up in the stomach is dissolved and digestion of food is assisted. Phlegm is prevented, the stomach is soft and an appetite for food is enhanced and it makes for a life of beauty and chastity. Coarse wind that may be in the stomach is relieved. It is astringent so bile and excess blood are decreased and phlegm is prevented. Blood is purified, ejaculation is delayed, gripes are cured and the stomach is tightened. If it is rubbed on the skin of the body, leprosy is driven away and the colour of the skin is made white and bad odours are prevented. It is the jewel of the mouth, the mouth is purified and the ardour of passion is increased.

https://scroll.in/article/822109/a-samosa-recipe-and-other-culinary-delights-from-a-rare-15th-century-book
Tithi সূত্রে এই ব্লগটির পাত্তা পেয়েছিলাম।
https://blogs.bl.uk/asian-and-african/2016/11/nasir-shahs-book-of-delights.html?fbclid=IwAR0UfaJwxa52uqHtW9ovYtnnqEaCoYdJFNJTpJBIH1sq9UTJOvH9vHkIqhA