হাওড়া জেলার জগত্্বল্লভপুরের পাঁতিবাল গ্রামপঞ্চায়েতের বাদেবালিয়া নিজবালিয়া, গড়বালিয়া, রামপুর মৌজার গ্রাম যমুনাবালিয়া, শিয়ালডাঙা পঞ্চায়েতের নিমবালিয়া আর মৌজা ইছাপুরে বাদাই গান প্রচলিত। তবে লোকসংস্কৃতির অবনুক্তির পথ ধরে বিগত ২০-২৫ বছরে বাদাই গান অবলুপ্তির পথে।
পার্বন জন্মাষ্টমীর সময় থেকেই বাদাই গান গাওয়া হয়। ফলে গানের অক্ষদণ্ড শ্রীকৃষ্ণেরজন্ম কাহিনী - পিতা বাসুদেব, মাতা দৈবকীর ভাগ্য বিড়ম্বনা, পালক পিতা নন্দ আর যশোদার উচ্ছ্বাস, শেষে ঈশ্বরের আরাধনা। রসের বিচারে ভক্তিরসই প্রধান। আত্মনিবেদনের ভাবও থাকে স্পষ্ট। গানের মধ্যে চপলতা থাকলেও তা ঢেকে যায় ভক্তি প্রদর্শনে।
আসরের প্রথমেই মাঙ্গলিক গীত, দেবদেবীর আরাধনার গান, আসর বন্দনা। এরপর প্রস্তাবনা। থকে নন্দ উত্সবের গান। অন্যান্য লোক সাহিত্যের মতই বাদাই গানে শুধু যে বিনোদনের পর্ব সাধিত হয় তা নয়, এর সঙ্গে থাকে লোকশিক্ষাও - য়া আদতে ধর্মতত্বের ব্যাখ্যান, লোক সমাজের উপযোগী করে শিক্ষাদান।
শ্রদ্ধেয় শিবেন্দু মান্না উল্লেখ করছেন বাদেবেলিয়ার এক গায়ক সুরকার, গীতিকার নগেন্দ্র চক্রবর্তীর কথা। তিনি তাঁর সাক্ষাত্কার নিয়েছিলেন ১৯৭১এ। এছাড়াও খ্যাত ছিলেন যমুনাবেলিয়ার গোরাচাঁদ বেরা, শিয়ালডাঙার ভজহরি জানা, ঈশানচন্দ্র জানা, কুঞ্জবিহারী জানা, জহরলাল জানা - যাঁরা আজ আর নেই। কিশেরী, রাইচরণ বা রসিরচন্দ্রের ভনিতা পাওয়া গেলেও নতুন কোনও গীতিকারের জন্ম হয়নি।
তাই আজ বাদাই গান প্রায় মৃত - নতুন প্রতিভার উন্মেষ ঘটছে না। বাদাইএর অবলুপ্তি ঘটছে পচা পাঁকে।
(শিবেন্দু মান্নার লেখা থেকে নানা তথ্য গৃহীত)
No comments:
Post a Comment