এই সভার উপস্থিত সদস্যদের নাম উল্লেখ করলে বোঝা যাবে
জমিদার কাশীকান্ত বা শিক্ষা দপ্তরের উচ্চপদের চাকুরে রসময় শুরুতেই সভার আগামীদিনের
কি আলোচনা হবে তাঁর কথা কেন বলেছিলেন। সেদিন উপস্থিত ছিলেন শ্রীযুত রামজয়
তর্কালঙ্কার ও শ্রীযুত উমানন্দ ঠাকুর ও শ্রীযুত চন্দ্রকুমার ঠাকুর ও শ্রীযুত
দ্বারিকানাথ ঠাকুর ও শ্রীযুত রাধামাধব
বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীযুত প্রসন্নকুমার
ঠাকুর ও শ্রীযুত কাশীকান্ত ঘোষাল ও শ্রীযুত কাশীনাথ তর্কপঞ্চানন ও শ্রীযুত গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার ও শ্রীযুত লক্ষ্মীনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ও শ্রীযুত শিঞ্চরন ঠাকুর ও শ্রীযুত বিশ্বনাথ মতিলাল ও শ্রীযুত তারাচাঁদ চক্রবর্তী ও শ্রীযুত ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীযুত রামদুলাল দে, ও শ্রীযুত রাধাকান্ত দেব ও শ্রীযুত কালাচাঁদ বসু ও শ্রীযুত রামচন্দ্র ঘোষ ও শ্রীযুত রামকমল সেন ও শ্রীযুত কাশীনাথ মল্লিক ও শ্রীযুত বীরেশ্বর মল্লিক ও শ্রীযুত রসময় দত্ত।
সেই সময়কার কলকাতার বিশেষ গণ্য মানুষজনের উপস্থিতিতে
গুরুত্বপূর্ণ এক সমিতির তৈরি হওয়ার প্রস্তাবে, আলোচনার বিষয়বস্তুর এই পরিচয়। তবে
ধর্ম বিষয়ে আলোচনা আর কয়েক দশকে পালটিয়ে হেঁটমুণ্ড ঊর্ধপদ হবে ডাউন উইথ হিন্দুইজম
এই স্লোগানে; কিন্তু শহুরে চাকুরীজীবী, ধনী এবং ব্যবসায়ী সভ্যদের রসময়ী মানসিকতা
অন্ততঃ রাজসংক্রান্ত বিষয়ে যে পাল্টায় নি তাঁর প্রমাণ গ্রামের স্বাধীনতা
সংগ্রামে সভ্য বাবুদের নিশ্চুপ থাকা। সতীদাহ নিয়ে রামমোহন রায় উচ্চবাচ্য করলে ভবানীচরণ
রামমোহনের সংগ ত্যাগ করেন, কিন্তু তিনিও রামমোহনের মত গ্রাম্য স্বাধীনতা আন্দোলনের
নিশ্চুপ থেকে যান। এই ধরণের গুড়ুম সভাতে না হলেও ইয়ং বেঙ্গলী আলালদের সভাগুলিতে
সাম্রাজ্যের উচ্চপদস্থ সামরিক এবং সিভিলিয়ান কর্ণধারেরা উপস্থিত থাকতেন। রসময় তাঁর
কেরিয়ার বাঁচাতে এবং তাঁর দলের রক্ষণশীল সভ্যদের চকিত করে দিতে, সরব হয়ে এ সব কথা
বলে ফেলেছেন বটে, কিন্তু ইয়ং বেঙ্গলীসভ্যেরা নিজেদের সম্ভাব্য চাকরি, চালু চাকরি,
দালালি, বেনিয়ানি বাঁচাতে নীরব থাকলেও, হয়ত কখনো কখনো রসময়ের বক্তব্যগুলি মনে মনে
আবৃত্তি করতেন।
No comments:
Post a Comment