ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জোরজরদস্তির লুঠেরা
বাণিজ্যের সঙ্গে, ব্রিটিশ সরকারের দুষ্কাজকর্মের পার্টনারশিপের জোড়কলম অবস্থাটা
বোঝা না গেলে, সনাতন ভারতের সাধারণ গ্রামীণদের দেড়শ বছরের বাস্তবে অসফল, অথচ
বীরত্বপূর্ণ স্বাধীণতা সংগ্রামের লড়াইএর ব্যপ্তিটি বোঝা অসম্ভব হবে পড়বে। আগামী দিনগুলোতে যখন কৌম
স্বাধীণতা সংগ্রামের এই ইতিহাসের ওপর বিস্মৃতির ধুলোর পলেস্তেরা পড়তে শুরু করবে,
তখনই নতুন করে জাগিয়ে তুলতে হবে লুঠেরা শাসক-বণিকের ধংসলীলা কর্মের পৌণপুনিক
বিশ্লেষণ। অতীতের লুঠ আর তার
পিঠেপিঠি স্বাধীণতার লড়াইএর দ্বন্দ্বে উঠে আসা অমৃত-গরলই তৈরি করবে, একদা ব্রিটিশ
সরকারের বৈদেশিক এজেন্ট, মাত্র দেড় শতকেই বিশ্বের ইতিহাস বদলে দেওয়া, বিশ্বের
দৌর্দন্ডপ্রতাপ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিংশ শতকের উত্তরাধিকারী বিশ্বায়ণের
লুঠেরা কর্পোরেটদের, অবাধ সম্পদ লুন্ঠনের বিরুদ্ধে সমগ্র ভারত জুড়ে চলতেথাকা
নানান আন্দোলনের মিলনবিন্দু।
সনাতন সমাজের বিরুদ্ধে জাগতিক সম্পদই লুঠের কাহিনী
জনসমক্ষে বর্ণনাই নয়, তাদের পারমার্থিক সম্পদগুলির লুণ্ঠন প্রক্রিয়ার ধারাবাহিক
ইতিহাসের কাহিনীগুলিকে উদ্ধার করে তুলে আনতে হবে সর্বসমক্ষে, তবেই একদা ব্রিটিশ
সরকার আর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিশ্বের প্রথম পিপিপি মডেলের বিরুদ্ধে বাংলার
ব্রিদ্রোহী শহিদদের স্মৃতি তর্পণে কিছুটা হলেও শুদ্ধ হয়ে ওঠা যেতে পারে। আগামীর বাংলা তথা ভারত
সশ্রদ্ধায় স্মরণ করুক এই উদ্ধার কাহিনীর মুখপাত ঘটিয়ে যাওয়া, আজকের ভারতের
জ্ঞাণসূত্র আনয়নের প্রধাণ ভগীরথ ধরমপালজীকে, যিনি লন্ডনে দীর্ঘ সময় কৃচ্ছসাধন করে,
লুঠেরা ব্রিটিশদের শাসনে লুঠ হয়ে যাওয়া দেশজ জ্ঞাণ-প্রযুক্তির লুপ্ত সূত্রগুলিকে
সযত্নে উদ্ধার করে, প্রথিত করেছেন ভারতের মাটিতে, তৈরি হচ্ছে নতুন বোধ আর বোধির
প্রজ্ঞা। আজ সেই স্মরণের মাধ্যমে
লুঠের কাহিনী, নতুন করে জানা, বোঝা আর চর্চার সময় এসেছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের শৈশবেই কোম্পানির শাসনের সঙ্গে প্রায়
জুড়ে যাওয়া সরকারের নাম আলাদা করতে ঔপনিবেশিক বুদ্ধিজীবিদের নানান দার্শনিকতার
আশ্রয় নিতে হয়েছে, হচ্ছে, হবেও। আজকের ব্রিটেনে নানান ঔপনিবেশিক ঐতিহ্যবাহী সম্পদগুলোর
সরকারি পৃষ্ঠপোষণা থাকলেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অতীতের নানান নিদর্শণ বাস্তবে
ধরে রাখতে, আজকের ব্রিটিশ প্রজন্মের প্রায়-অস্বস্তিকর নীরবতা লক্ষ্যনীয়।
No comments:
Post a Comment