Tuesday, August 30, 2016

ভারতের সমুদ্রযাত্রা জ্ঞানচর্চার অন্তত দুজাহার বছরের অচেনা ইতিহাস - অযোধ্যার রাজকন্যা শ্রীরত্নর সমুদ্র যাত্রার গল্প


কয়েকদিন পুর্বে বন্ধু সৈকত ভট্টাচার্য কোরিয় রাজবংশে ভারতীয় এক রাজকন্যার বিবাহের সূত্র পাঠান। সেই সুত্র ধরে ভারতীয় জ্ঞানচর্চার ইতিহাসে ফিরে যাওয়ার সে গল্প আপনাদের জানানোর লোভ সামলাতে পারছি না।
৪৮ সালে অযোধ্যার রাজারাণী স্বপ্নাদিষ্ট হলেন তাদের কন্যার জন্য দূর দেশের এক রাজা অপেক্ষা করছে। তাকে সেখানে বিয়ের জন্য পাঠাতে হবে। কোরিয় দেশেও এক আকাশজাত রাজা কিইম সুরোও একই প্রত্যাদেশ পান।
স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী রাজকন্যা সুরি রত্ন - শ্রী রত্ন পূর্ব ভারতের কোন এক বন্দর থেকে রওনা হন। কোরিয়া পৌঁছন - মনে রাখতে হবে কোরিয়ায় বৌদ্ধপন্থ গিয়েছে তারও ৩৫০ বছর পর। তাঁদের বিবাহ হয় - সন্তানদের কেউ কেউ মায়ের উপাধি বহন করেন। আজও। দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ৫০-৬০ লক্ষ মানুষ মনে করেন তারা সুরিরত্নের উত্তরাধিকার বহন করছেন।
ভারতীয়রা ভুলে গেলেও কোরিয়রা সেই স্মৃতি আজও ভোলেন নি। তারা রাজা সুরো আর রাণী সুরির বিবাহের দিন স্মরণ করতে ফাল্গুণ চৈত্র মাসে অযোধ্যায় আসেন। গোষ্ঠী অধিপতিরা সেখানে রাণীর একটি স্মৃতিস্তম্ভ বানিয়ে দিয়েছেন।
এই সাধারনতম চমকহীন গল্প বিশ্লেষণের দুটি অংশ একটা ভারত-কোরিয়া দৌত্য অন্যটি পূর্ব ভারতের দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রার ইতিহাস। আমাদের আকর্ষণের অংশ দ্বিতীয়টি। অযোধ্যা কিন্তু উপকূল থেকে বহুদূরে অন্তত ৫০০ ক্রোশ। তাও ষোড়শী রাজকন্যা বা তার পিতামাতা সমুদ্র যাত্রায় পরান্মুখ হন নি - এবং যে দেশে যাচ্ছেন সেটাও পূর্ব ভারতের আকছার সমুদ্র যাত্রা করা নাবিকদের কাছে খুব চেনা দেশ নয় - প্রতিবছর নাবিকেরা ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া বা চম্পা পর্যন্ত সহজেই যেতেন বাণিজ্য বা দৌত্য বা যুদ্ধ যাত্রায় - কিন্রু কোরিয়ায় খুব যেতেন এম্ন ইতিহাস বোধহয় নেই - কিন্তু সেটাও তারা করলেন। মনে হয় ভারতে তখন সমুদ্র যাত্রা খুব সাধারণ ঘটনা ছিল - তা রাজ্যবেষ্টিত অযোধ্যা হলেও রাজারানী কিন্তু মেয়েকে দীর্ঘ তিনমাসের সমুদ্র যাত্রায় পাঠাতে দুবার ভাবেন নি।।
আমরা কল্পনা করতে পারি, সুরি রত্ন আর তার সঙ্গীরা বঙ্গোপসাগরের পুরী বা তাম্রলিপ্ত থেকে বেরিয়ে দক্ষিণ এবং উত্তর চীন সমুদ্র হয়ে দীর্ঘ তিন মাসের সমুদ্র পথ পেরিয়ে পৌছলেন কোরিয়ায় এবং সেখানে সাদর আমন্ত্রণ পেলেন। দুহাজার বছর আগে খুব সাধারণ ঘটনা ছিল না।
বা এই ধারণা 'দুহাজার বছর আগে খুব সাধারণ ঘটনা ছিল না'ভাবাটা হয়ত আজ ঔপনবেশিক আমার ভদ্রলোকিয় মেকলের উত্তরাধিকার বহনের মানসিকতা - তিনি বা ট্রেভলয়নের তৈরি করা পশ্চিমি বিশ্ব-ইতিহাস প্রযুক্তির বিকাশের একরৈখিক ভাবনা গাঁথা মনে তাই মনে হচ্ছে। কিন্তু তখন হয়ত বণিক-নাবিকরা শুদ্রদের বিকশিত কলন আর মহাকাশ বিদ্যা চর্চা করতেন অবলীলায় - তাদের কাছে তা ছিল জলবত্তরলং।
কোরিয়ায় সুরি রত্নের একটি সমাধি রয়েছে রবং তা ভারতীয় এবড়োখেবড়ো পাথরে তৈরি - সেই পাথরটির আশ্চর্য নাম সমুদ্র দেবতাকে শান্ত করা পাথর। সেই পাথর কিন্তু আশ্চর্য কন্যা শ্রীরত্ন নিজে বহন করে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের ধারণা তার যাত্রাপথ সুরক্ষার একটা ব্যবহারিক কারণের জন্যও বটে। সেগুলি জাহাজের খোলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যাতে সমুদ্র পথে তীব্র ঝড়ঝঞ্ঝায় জাহাজ উলটে না যায় - দাঁড়িয়ে থাকে। ততদিনে নাবিকদের দীর্ঘ দিনের সমুদ্রযাত্রা পথে জাহাজের খোল ভারি করার অভিজ্ঞতাটি হয়ে গিয়েছিল - ঠিক যেমন করে ডাচেরা বাঙলার সোরা সরকার সারণ থেকে জাহাজের খোল ভারি করে নিয়ে যেতেন তার প্রায় দেড় হাজার বছর পরে ভারতীয় নাবিকদের দেখান রাস্তায়।
অর্থাৎ গল্পগুলি নতুন করে আমাদের বের করা দরকার। দরকার এই জনই যে দীর্ঘদিন ধরে দেশিয় জ্ঞানচর্চা নিয়ে ইতিহাস রচনায় ভদ্রলোকিয় ঔপনিবেশিক অবহেলা থেকে বেরোনো আর নিজেদের ঐতিহ্যকে সুকঠিন এক ভিত্তিভূমিতে দাঁড় করানো।
জয়াদি বলেন যে নিজের ইতিহাস জানেনা সে খড়ের মানুষ।
আমরা নিজেদের ইতিহাসে ফিরতে চাই।
সুরি রত্নের ইতিহাস আলোচনা সেপথে আমাদের এগিয়ে দেয়।

Monday, August 29, 2016

শিক্ষা নিয়ে কিছু ভাবনা

অনেক কিছু তো বলা আছে তো বললাম - ভেবে দেখা গেল কিন্তু সত্যিই কি কিছু বলার পক্ষে উপযুক্ত ব্যক্তি/সংগঠন? মনে হয় না - মাস্টারের ঘরের জন্মেছি আর সঙ্গঠনের সঙ্গে চলতি পড়াশোনার নিয়ে যোগায়োগ কিছুই নেই - এইটুকু নিয়েই যদি বলার আধিকার জন্মায় তাহলে তো চিত্তির। একজন ভদ্রলোকসমাজসদস্য হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে কিছু তো বলার থাকে - তাই ওগরাতে বাধ্য হয়েই চাবি টেপা।
নিজের মাটি, ভাষা, সমাজ, মানুষ, তার জ্ঞানচর্চা, তার ইতিহাস - লেখ্য মৌখিক, চলতি ভাষায় লুকিয়ে থাকা(যেমন টানপোড়েন প্রমান করে বাংলা এক সময় তাঁতের ধাত্রী ছিল ইত্যাদি) ইতিহাস নিয়ে গর্ব খুব জরুরি - কিন্তু সেটা যেন অন্য কারোর স্বাধীনিতা গর্ব হত্যা-আঘাত করে করা না হয়(যেমন বার বার আমরা খাপ পঞ্চায়েত তার কন্যাভ্রুণ হত্যা নিয়ে জাট এলাকাকে ঠোনা মারি - এ কথা একদা জয়া দি বলেছিলেন - এক গ্রামের অভদ্রলোকীয় মহিলাকে প্রশ্ন করায় তিনি বলেছিলেন মেয়েরাই তো সমাজে কাজ করে তাকে মারলে সমাজের চলবে কি করে(এ নিয়ে জয়াদির সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে - সে বিষয় এখন থাক))।
দীপঙ্করদা যা আলোচনা করেছেন তা নিয়ে আমার বলার যোগ্যতা নেই - তিনি অন্যতম যোগ্য মানুষ। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে শুধু বলব শিক্ষা যে উভয়ত পরম্পরাগত এবং পাঠশালা ভিত্তিক। এই দুটো বিষয়ই বাংলায় বহুকাল ছিল - ব্রিটিশ শাসনের পর পরম্পরাগত শিক্ষার মূল্য অন্তত ভদ্রলোকিয় সমাজে হ্রাস পেয়েছে(যেমন পরম্পরার ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তানের খুব বেশি পড়াশোনার ধার ধারতেন না - কাজ করতে করতেই তাদের হাতে কলমে শিক্ষা হয়ে যেত - যেমন করে গ্রামবাংলায় পরম্পরার পরিবারগুলোর হয়।
য়ে পড়াশোনাটার ভার আমাদের ওপর আজও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা হল চাকরি করার মানসিকতা তৈরি। এই বন্ধটার একটা দাবি দেখলাম ছেলেমেয়েদের চাকরির ব্যবস্থা - ব্যবসা করতে উৎসাহ নয় - কারণ এনলাইটমেন্ট শিখিয়েছে ব্যবসা মানেই ঠকানো - এবং সে সময় ইওরোপের রাষ্ট্রগুলো তাইই করত - ফলে ব্যবসা সামাজিক হয়ে ওঠেনি আমাদের সনাজের মত।
আমাদের চলতি পড়াশোনার মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে শ্রমের গুরুত্ব প্রায় শূন্যের কোঠায়। দীপঙ্করদইয়েযেকানে পড়ান সেখানে কিন্তু পড়ানো হয় কর্পোরেট চাকুরে তৈরির জন্য, অথচ নাম বিজনেস স্কুল - কালে ভদ্রে একজন দুজন যারা ব্যবসায়ী পরিবার থেকে আসে তারা ব্যবসায় জুতে যায়, বাকি ৯৯% চাকরি করে।
তাই ঐতিহাসিকভাবেই বাংলার পাঠ্যক্রমে শ্রমবিমুখতা জন্মায়, দেশ সম্বন্ধে মেকলিয় উন্নাসিকতা জন্মায়। তা ছাড়া আমরা ধরেই নিই যে ইওরোপের পাঠ্যক্রমই অনুসরণযোগ্য। আমেরিকার অঙ্ক পড়ানো নিয়ে বিশদে লিখেছেন চন্দ্রকান্ত রাজু তার ব্লগে, নেটে রয়েছে দেখে নিতে পারেন - তিনি একটা উদাহরণ দিয়েছেন এনসিইআরটির অঙ্ক বই নিয়ে যেটি সমপাদনা করেছেন এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী - তিনি জয়ন্ত বিষ্ণু নার্লিকর আর্যভটকে আর্যভট্ট মানে উচ্চবর্ণ দাগিয়ে দিয়েছেন - নবম দশম শ্রেণীর অঙ্ক বইতে আলেকজান্দ্রিয়ার অঙ্কবিদদের ছবি সব ককেসাসিয় চেহারার - কিন্তু তারা তো আফ্রিকার মিশরের - তাহলে তাদের চেহারায় আফ্রিকার মানুষের ছাপ থাকবে - রাজু প্রশ্ন করতে শিক্ষক বললেন তার এ বিষয়ে জ্ঞান নেই - তিনি বলতে পারবেন না (http://ckraju.net/hps-aiu/Escaping-Western-superstitions.pdf) - ছোটবেলা থেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই মেকলিয় জাতিবাদী ধারণা - ইওরোপ জ্ঞানে সর্বোচ্চ - তার আশেপাশে কেউ নেই - এ প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মাথায় প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়(সেই জন্য মধ্যবিত্তকে প্রভাবিত করতে কলকাতা লন্ডন করতে হয় আর দার্জিলিং সুইজারল্যান্ড বানাতে হয়)।
তো পড়াশোনার গোড়ায় গলদ। আজও সরল রৈখিক কার্টিসিয়ান অঙ্কের জ্যামিতির রমরমা, রাজু বলছেন জ্যামিতি বাক্স অকাজের যন্ত্র, ভারতীয় সুতো মাপন অনেক বেশি কাজের(দেখুন http://ckraju.net/papers/MathEducation2RopeTrick.pdf) এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন না এদেশের সূত্রধরেদের ব্যভার করা সুতো মাপনের বিদ্যার কথা তুললেই গেল গেল রব উঠবে - শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে বলা হবে - এবং এত দিন মোটামুটি বলে দেওয়া হয়েছে সেগুলি বৈজ্ঞানিক নয়। তাহলে?
তাহলে শুধু একটা শাঁখ, একটা বাঁশের কাজ, একটা পাথরের কাজ দেখিয়ে কি হবে - আপনি বলছেন অডিও ভিসুয়াল 'আধুনিক শিক্ষা' তাহলে হস্তশিল্প কি বর্তমানের শিক্ষা নয়! এই লেখার মধ্যেই কিন্তু আপনিই পার্থক্য টেনে দিচ্ছেন আধুনিক আর পরম্পরায় - ফলে শিক্ষার্থীরা শিখবে তারা আধুনিক পদ্ধতিতে শিখছে পরম্পরা যা নিরবে বলে দেওয়া হল আদতে কার্যকর নয়।
আমার ধারণা দীপঙ্করদা কাঠামো নিয়ে বলেছেন, আমি পাঠ্যক্রম নিয়ে একটা ইঙ্গিত দিলাম। এরকম হাজারো কথা বলা যায় - কিছুটা পরমের নানান সংখ্যায় আলোচনা করেছি। আদতে পুরো ব্যাপারটা খোল নলচে বদলাতে হবে। বাংলার নাবিকেরা চাষিরা, তাঁতিরা কলন বিদ্যা জানত - তা নিউটন বা লিবনিতজ থেকে আসেনি সে তথ্য তাদের কে দেবে? হাজার হাজার বছর ধরে শুদ্রদের জ্ঞানচর্চায় কলণবিদ্যা ভারতে বিকশিত হয়েছে - এটা কোন পাঠ্যক্রমে শেখানো হয়? সব অঙ্ক বইতে পড়ানো হয় নিউটন আর লিবনিতজ কলনবিদ্যার জনক। তার আগে যা ছিল তা প্রোটোক্যালকুলাস।
পড়া হয় নি, কিন্তু পরমেশ আচার্য এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে খুব গালাগালি দিয়েছেন - এই সূত্রটা পেয়েছি - অনেকের মতই তার ধারণা ছিল এটি সামন্ততন্ত্রের পৃষ্ঠপোষক - কিন্তু এডামের শিক্ষা সমীক্ষা নিয়ে আমরা দেখিয়েছি, এটি শুদ্রদের পড়াশোনার যায়গা ছিল হাতে কলমে কাজ শেখা ছাড়াওও - গত সহস্র বছর ধরে বাংলা উদ্বৃত্ত অর্থনীতির অর্থনীতির অংশ ছিল তার কিছুটা শ্রেয় যায় ১৫৬০০০ বাংলা-বিহারের গ্রামের এক লক্ষ পাঠশালার তার পাঠ্যক্রমের, তার গুরুমশাইএর, তার ব্যবস্থার, তার সমাজের - শুধু ব্রিটিশপূর্ব গ্রাম সমাজ সামন্ততন্ত্রএ ডুবে থাকা বলে দাগিয়ে দিলেই হয় না - সেই গ্রাম সমাজে চালিকা শক্তি ছিলেন শুদ্ররা - তারা সমাজের কেন্দ্রে না থেকেও তৈরি করেছিলেন একটা শুদ্র উতপাদন বিতরণ ব্যবস্থা - কিকরে? সেটাই শেখার আজও এই কেন্দ্রিভবনের সময়ে।
তো বটুদের কি শেখানো হবে, কিভাবে শেখানো হবে তা ভাবা দরকার খুব। মূলের স্বাদ নিতে এডামের শিক্ষা প্রতিবেদনের তিন খণ্ড নেটেই পাওয়া যায় - পড়ে নিতে পারেন - এটি একমাত্র শিক্ষা সমীক্ষা - যাতে দেশিয় ভাষায়- বাংলায় নয় শুধু - পড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল - যা কোনকালেই মানা হয় নি - তথাকথিত স্বাধীন ভারতেও নয় - সেই সমীক্ষা আমার কাছে রয়েছে - মেল নম্বরটা পাঠালে পাঠাতে পারি।
যাইহোক আমরা মনে করি এই যে পাঠ্যক্রম প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ভারতে চলছে তার একটাই লক্ষ কর্পোরেট বন্ধু ইওরোপিয় এবং আমেরিকিয় জীবনযাত্রা অনুসারী আনুগত শ্রমিক গড়ে তোলা। এটাকে পাল্টাতে গেলে বিদ্যালয়ী শিক্ষায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন দরকার - তা কোন সরকারের করার কলজেতে নেই - হ্যাঁ আমি আমাদের রাজ্যের পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন বিষয়ে লক্ষ্য রেখেই কথাটা বললাম।
যে মানুষদের সঙ্গে আমি জুড়ে রয়েছি - শিখছি - শিখছি শুধু শিখেই চলেছি - তারা হাজার হাজার বছর ধরে অকেন্দ্রিভূত একটা দর্শন গড়ে তুলেছিলেন - পাঠ্যক্রমেও সেই দর্শন বজায় ছিল - কলকাতার হাতিবাগানের পড়ুয়া যা পড়ত, তার কাছের ২৪ পরগণা বা নদীয়ার বটু তা পড়ত না। শিক্ষা ছিল স্থানীয় প্রয়োজন কেন্দ্রিক। এখন শিক্ষা বিশ্বজনীন অর্থে ইওরোপিয় স্বার্থবাহী - তাই কেউ সামনাসামনি, কেউ ঘোমটা পরে ইওরোপ আমেরিকার দেখাদেখি বিদ্যালয়ে কর্পোরেট পাঠ্যক্রম তৈরি করছেন - আদতে বিদ্যুত উতপাদনের মত সব কিছুই কেন্দ্রিয়ভাবে যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
আমরা চাইলেই এখন ইচ্ছে মত বিকেন্দ্রিয় পাঠ্যক্রম তৈরি করা যাবে না - দেশের মানুষ, দেশের প্রযুক্তির, দেশের উতপাদন ব্যবস্থার কথা বললেই - সঙ্ঘী দেগে দেওয়া হচ্ছে - অথচ সঙ্ঘীরা মূলত ইওরোপিয় ঘরাণার এক জাতি, এক ধর্ম এক ভাষার অনুগামী - আমরা তার ঠিক উল্টো পথের - এত ভাববে কে আর কেন?
এই কেন্দ্রিভূত দর্শনের শিক্ষা ব্যবস্থায় দেশের কথা আলঙ্কারিকভাবে বলা যায়, তাতে কাজের কাজ কিস্যু হয় বলে আমার মনে হয় না - যে দেশটার গ্রামগুলির গোড়াটায় কেন্দ্রই নেই, তাকে আমরা বিদ্যালয়ে বাংলার বোর্ড, বা দিল্লির বোর্ডের সঙ্গে জুতে দিলে বাংলার কর্পোরেট স্বাভিমান বা দিল্লির ইওরোপিয় জাতিবাদী স্বাভিমানকে এগিয়ে নিয়ে যাব। কিন্তু গ্রাম বাংলার বিকাশ হবে না। আদতে বাংলার স্বাভিমান বলতে আমরা বুঝি রাজবংশী, সাঁওতালি, মুণ্ডারি, লিপিহীন শবরদের স্বাভিমান এবং তাদের সমাজ আর কৃতি তা কখোনোই শুধু বাংলার বোর্ডের কেন্দ্রিয় শিক্ষা ক্রমে থাকা সম্ভব নয়- প্রত্যেকের জন্য নিজস্ব পাঠ্যক্রম চাই। প্রত্যেককে ইওরোপিয় ধাঁচে তৈরি করে গড়ে তোলায় ইওরোপের লাভ হবে - তাতে গ্রাম বাংলার কি? কর্পোরেট দাস তেরি করা এই পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা প্রায় আসম্ভব।
তাহলে?
তাহলে যা হবার তাই হচ্ছে - একদিকে মধ্যবিত্তের দুর্ভাবনা বাড়িয়ে দেশে কোটি কোটি নিরক্ষর, মধ্যবিত্ত পশ্চিমে, ইন্ডিয়ার ভদ্রলোকেদের কাছে মুখ দেখাতে পারে না - এত নিরক্ষর নিয়ে ভারত কি করে বিশ্বসভায় ঠাঁই পাবে ভেবেই আকুল। অন্যদিকে আমরা দেখছি - শিক্ষায় যত কর্পোরেটিকরণ বাড়ছে, যত কেন্দ্রিভবন বাড়ছে, তত গ্রামীন মানুষ, সেই পরিকাঠামো থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
এটা আগামী দিনে ঘটবে যতক্ষণনা কর্পোরেটবাদ না হারবে। এটা আমার ভাবনা।
ভারত যতদিন তার নিজস্ব প্রযুক্তি, তার পড়াশোনা, তার দর্শনে অটল ছিল ততদিন সে উদ্বৃত্তের সংসার করেছে - তার জগত খোলা ছিল - বাণিজ্য খোলা ছিল - শিক্ষাও খোলা ছিল - আদান প্রদান ছিল - কিন্তু নিজের জোর তার যতদিন তৈরি হবে না, যত দিন তার সমাজ জাতিরাষ্ট্রের দ্বারা নিপীড়িত হবে, বঞ্চিত হবে, ততদিন এই 'পিছিয়ে পড়ার' হাত থেকে মধ্যবিত্তকে বাঁচার উপায় নেই - গ্রাম বাংলা বাঁচবে - কিন্তু মধ্যবিত্তের?

Saturday, August 27, 2016

ভারতীয় পশ্চিমী জ্ঞানচর্চায় সামরিকতার পদধ্বনি - যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে সামরিক গবেষণার জন্য ১০০ কোটি


 দীপঙ্কর শিবুদা ফেবু প্রকাশনায় এই খবরে কপাল কুঁচকেছেন; এবং সেটি পড়ে গেল গেল রব উঠেছে প্রগতিশীল সমাজে।
খুব ভাল। খুব ভাল। বন্দে বঙ্গমাতরম বলা বোধহয় ছাড়তে হবে।
এত দিন ভারতে সামরিক সাহায্যের প্রবণতা ছিল কিন্তু হাতে গোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে, যারা ডিআরডিওর ভর্তুকি পেত। ভারতের মধ্যবিত্ত জীবনযাত্রায় পশ্চিমি সমস্ত আদবকায়দা নকল করছে, জ্ঞানচর্চায় তাদের পায়ে নিজেদের মাথা ঢেলে দিয়েছে। ক্রমশ সামরিকতার কেন্দ্রিকতা চেপে বসছে সারা ভারতীয় ভদ্রলোকিয় সমাজে আরও বেশি বেশি করে। কেন যে সেই সামরিকতার পশ্চিমি প্রবণতা ভারতের মধ্যবিত্তিয় জীবনযাত্রায় কেন ব্যপ্ত হবে না, তা এক জন গ্রামীন মানুষের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার আন্দোলনের কর্মী হিসেবে বুঝে পাই না - কেন ভারতের মধ্যবিত্ত সামরিকতা বুঝতে শুধু যুদ্ধ বুঝবে - তার আগেও যে মারণ গবেষণার সলতে পাকানো হয় সেগুলিতে কেন 'আমাদের বুদ্ধিমান' ছেলেমেয়েদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে না? কেন? কেন? কেন? পশ্চিম যদি তার সমাজকে ধ্বংস করে সামরিক জ্ঞানচর্চা নির্ভর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে তাহলে ভারত কেন পিছিয়ে থাকবে?
যুক্তি বুঝে পান না ভদ্রলোক সমাজ।
পশ্চিমের আগ্রাসী প্রাতিষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় খ্রিষ্ট ধর্মের যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশগুলির পরম্পরার জ্ঞানী, পাগানদের জ্ঞান, প্রযুক্তি, জীবনযাত্রা লুঠ, ধ্বংস, হত্যা করে। নিজেদের দেশে উপনিবেশ তৈরি করাই পশ্চিমের ক্রমশঃ। পাগান ধ্বংস ক্রিয়ার সাফল্যের অভজ্ঞতা তারা ছড়িয়ে দিতে থাকে দেশে দেশে দিকে দিকে। সামগ্রিকভাবে সমগ্র ইওরোপ হয়ে ওঠে সামরিক সভ্যতার বিকাশ। সারা রাষ্ট্রের(সমাজ তখন মৃত, ব্যক্তিগত সামাজিক উদ্যোগ রাষ্ট্রের পায়ে মাথ কুটছে বেঁচে থাকার জন্য, যদি তা সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের সামরিক এবং পীড়নশীল বিকাশের অংশীদার না হয়)।
লগে লগে 'এনলাইটমেন্ট'এর যুগ এল, পূর্ব থেকে সামাজিক, প্রাযুক্তিক, জ্ঞানের নানান দিক নথিকৃত(এবং চুরি - যার প্রধান বাহক হল ঝেঁটিয়ে দক্ষিণ ভারতের উপকূলে নামা নানান দেশের, মূলত ইতালির এবং ফ্রান্সের জেসুইট পাদ্রিরা) হয়ে চলে যাচ্ছে, তারা দেখছে ভারতে রাষ্ট্রীয় সামরিক উদ্যমের বাইরেই সামগ্রিক বিকাশ ঘটছে সগর্বে - গ্যালিলিও, নিউটন, লিবিনিতজ ইত্যাদি 'মহান'ও কাজ করেছেন রাষ্ট্রীয় সামরিক বিদ্যা বিকাশের লক্ষ্যে এটা যেন ভুলে না যাই।
এমতাবস্থায় কিছু ভাবুক সামরিকতার জ্ঞান চর্চার বাইরে রেরোতে চাইছিলেন। অথচ প্রায় প্রত্যেকটা জ্ঞানের ধারায় সামরিকতার উচ্চকৃত দখল। তাই তৈরি হল সিভিল উপসর্গ যোগে নানান শিক্ষা চর্চা (এঞ্জিনিয়ারিং)। কিন্তু সেটা খুব একটা বড় ভূমিকা পালন করে নি। আজও ইওরোপ আমেরিকার প্রযুক্তির বিকাশ ঘটে প্রাথমিক সামরিক প্রয়োজনে সামরিক রাষ্ট্রের উদ্যোগে সাধারণের পকেট কেটে - বিভিন্ন যুদ্ধাঙ্গনে সেটা পরীক্ষিত হয় বাস্তবিকভাবে মানুষ মেরে; পরে সেটা তুলে দেওয়া হয় কর্পোরেট নেতাদের হাতে, আরও বেশি মানুষকে কেন্দ্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য, লুঠের জন্য।
আরও বেশি লুঠের জন্য প্রয়োজন মধ্যবিত্তকে আরও বেশি সামরিকী করণের আওতায় আনা।
সেই প্রবণতা বোধহয় বাংলায় ছিল না।
ভদ্রলোকেদের পরিবেশ সামরিকীকরণ শুরু হল।
বাংলা সেই প্রবণতার আওতায় এল।
জয় হিন্দ!
সূত্র - http://economictimes.indiatimes.com/news/defence/drdo-to-start-rs-100-crore-research-centre-at-jadavpur-varsity/articleshow/52884655.cms?from=mdr

Tuesday, August 23, 2016

মসলিনের নামে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান - বাংলার এবং বাংলার তাঁতির সম্মান রক্ষা করুণ


এম জি গ্রামোদ্যোগ সেবা সংস্থান সম্প্রতি মসলিন নিয়ে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে(আইআইইএসটি) এবং তুলা আর সায়েন্স কমিউনিকেটর ফোরাম এর সঙ্গে মিলে শিবপুরে একটি প্রদর্শনী আর আলোচনা সভা ডেকেছে।
এম জি গ্রামোদ্যোগ সেবা সংস্থান সম্বন্ধে সাবধান। তারা অন্য তিনটি বিখ্যাত সংস্থার নাম ভাঙাচ্ছে।
এম জি গ্রামোদ্যোগ সেবা সংস্থান মসলিন নামে ভারত জুড়ে যে কাপড় বিক্রি করছে সেগুলি মসলিন নয় - মানুষকে ওরা ভুল বোঝাচ্ছে - মসলিন হতে গেলে সুতোকে ন্যুনতম ৫০০ কাউন্ট হতে হয় - সেগুলি তা নয় - আমারা সাঙ্গঠনিকভাবে সুতো কাটাই আমরা জানি। এদের থেকে দূরে থাকার অনুরোধ করছি। বাংলায় এখন আর মসলিন হয় না। এ নিয়ে দেবল দেবের সঙ্গে দিন কয়েক আগে কথা হচ্ছিল।
এই অনুষ্ঠানে আমাদের কেউ নেমন্তন্ন করেছিলেন। কিন্তু আমরা যাছি না। কৃষিবিদ অনুপম পাল এবং আমরা এই মিথ্যা নিয়ে প্রচার করছি।
দেবল দেবকে এই নিয়ে সক্রিয় হতে অনুরোধ করছি।
আর যেহেতু দেখছি সায়েন্স কমিউনিকেটর ফোরাম এর সঙ্গে যুক্ত, আমি Satyabrataদাদাকে অনুরোধ করছি আপনি এই বিষয়ে বিশদে খোঁজ নিন। প্রয়োজনে কৃষিবিদ অনুপম পালের সঙ্গে কথা বলুন - দেবলের সঙ্গে কথা বলুন। অনুপমদার উদ্যোগে আমরা তুলো চাষ করছি। তাঁর বন্ধু বীজ জোগাড় করে দিয়েছেন। বাংলার সরকারের কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে একটা আলোচনা সভা হয়েছে - সেখানে তিনজন কৃষক তুলো চাষ করছেন।
আমাদের এই মিথ্যের মুখোশ খুলে দিতে হবে।
কারোর কোন সংশয় হলে অনুপম পালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমাদের আশংকা শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সায়েন্স কমিউনিকেটর ফোরামের মত প্রখ্যাত সংগঠন এই বিষয়ে যুক্ত থাকায় মিথ্যা মসলিন মান্যতা এবং স্বীকৃতি পেয়ে যেতে পারে।
বাংলার তাঁতিদের স্বার্থে, বাংলার দীর্ঘ তাঁতের ঐতিহ্যের স্বার্থে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

উপনিবেশবাদ বিরোধী চর্চা - মেকলের কল্পিত পিঠচাপড়ানি আর বাঙালি মধ্যবিত্ত এবং বাংলা ভাষায় পড়ানো


মেকলের এই কল্পিত উদ্ধৃতিটি ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেবুতে। না এটা মেকলের 'প্রগতিশীল' ইংরেজি শিক্ষিত পুত্রকন্যানাতিপুতিরা দেবেন না তা বলাই বাহুল্য (তারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মেকলেবাদে আজও বিশ্বাস পেশ করেন), দিচ্ছেন দেশপ্রেমী সঙ্ঘি বন্ধুরা। তাদের বক্তব্য মেকলে ভারতীয়দের দারুণ প্রশংসা করে গিয়েছেন; এবং দেশপ্রেমিকেরা ইওরপিয়দের সঙ্ঘিদের তত্ত্বের অনুসারী পিঠচাপড়ানি পেতে ভালবাসেন, সেহেতু তারা এই উদ্ধৃতিটাকে ঘুরিয়ে ফিরয়ে এক মাস দু মাস অন্তর ব্যবহার করছেন। যে কোন ইওরোপিয় আমেরিকিয় প্রযুক্তি(তারা বলেন বিজ্ঞান)র পূর্বাধিকার তারা দাবি করেন, ইওরোপিয় আমেরিকিয়রা যা যা আবিষ্কার করেছে তা সব তাদের পুর্বপুরুষ(পুরুষ!) আবিষ্কার করে গিয়েছিলেন বলে তাদের দাবি। 

তো আমরা বাংলায় কোম্পানির উত্তরাধিকারি ইংরেজি শিক্ষিত মধ্যবিত্তের গ্রামীণদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বিষয়ে কিছু খোঁজ খবর করা শুরু করেছি, তাতে মেকলের চরিত্র সম্বন্ধে যা দেখেছি, তা আপনাদের সামনে তুলে দিলাম।
মেকলে সাম্রাজ্যবাদি, ব্রিটিশ জাতিবাদী, ভারতীয়দের দুচোখে দেখতে পারত না, ভারতীয়দের ব্রিটিশদের দাস বলে মনে করত সবই ঠিক - কিন্তু Ajayদার মত বুদ্ধিশুদ্ধি ওয়ালা মানুষও সঙ্ঘীদের ফাঁদে পা দিলেন। তিনি এক সঙ্ঘীপুত্রের ব্যবহার করা ভারত বিদ্বেষী মেকলের যে উদ্ধৃতিটি দিয়েছেন তা সর্বৈব ভুল, ঐ তারিখে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মেকলে কোন বক্তৃতাই দেন নি।
মেকলে কোন দিন ভারতীয়দের সম্বন্ধে কোন ভাল কথা বলেন নি, বরং যখন বাংলায় সংস্কৃত না ইংরেজি ভাষায়(লক্ষ্য করুণ বাংলা ভাষা নিয়ে কারোর কোন উতসাহই নেই) পড়ানো হবে তা নিয়ে ইংরেজপন্থী বাবুরা দ্বিধাবিভক্ত, ঐ তারিখে ঐ বিষয়ে নেওয়া সরকারি এক ঐতিহাসিক একটি মিনিটের ১০ নম্বর অনুচ্ছেদে বলেছেন তার সংস্কৃত বা আরবিতে বিন্দুমাত্র বুতপত্তি নেই কিন্তু তিনি মনে করেন ভারত আরবের মোট সাহিত্য একজন ব্রিটিশ পাঠকের গ্রন্থাগারের একটা তাকের বইএর সমান ...তার ভাষাতেই শোনা যাক ...I have no knowledge of either Sanscrit or Arabic. But I have done what I could to form a correct estimate of their value. I have read translations of the most celebrated Arabic and Sanscrit works. I have conversed, both here and at home, with men distinguished by their proficiency in the Eastern tongues. I am quite ready to take the oriental learning at the valuation of the orientalists themselves. I have never found one among them who could deny that a single shelf of a good European library was worth the whole native literature of India and Arabia. The intrinsic superiority of the Western literature is indeed fully admitted by those members of the committee who support the oriental plan of education.
এবারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় আপনাদের।
সূত্র কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট http://www.columbia.edu/.../txt_minute_education_1835.html

Monday, August 22, 2016

প্রায় অনৈতিহাসিক ইতিহাস চর্চা - বাংলা-সিংহল ঐতিহাসিক যোগ

স্ক্রোলে আজ সঞ্জীব সান্যাল বাংলা-ওডিসার সঙ্গে সিংহলের ঐতিহাসিক সামুদ্রিক যোগাযোগ বিষয়ে একটি মূল্যবান প্রবন্ধ লিখেছেন, তাঁর নতুন বই The Ocean Of Churn: How The Indian Ocean Shaped Human History থেকে। লেখায় যে কিছুটা অনৈতিহাসিকতা রয়েছে তা পাঠকের নিশ্চই চোখ এড়াবে না - বিশেষ করে বৃহত্তর-বাংলার নাবিকদের সমুদ্র বাণিজ্য যাত্রা বিষয়ে।
সঞ্জীব মন্তব্য করেছেন - The Bengali-Odiya mariners were not capable of sailing directly across the Indian Ocean at this early stage. Instead, they would have hugged the shore and traded their way down the Andhra and Tamil coast. At some stage they seem to have sailed across to Sri Lanka and begun to settle there.
অথচ পরম পত্রিকায় আমরা শীলা ত্রিপাঠির লেখা অনুবাদ করে দেখিয়েছি, কিভাবে সোজাসুজি এবং একই সঙ্গে ভারতীয় উপকূল বেয়ে শ্রীলঙ্কা হয়ে ১০ ডিগ্রি চ্যানেল বেয়ে বাংলা(বৃহত বাংলার)র নাবিকেরা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যে যেতেন। শ্রীলা ত্রিপাঠি বলছেন হিপ্পালাসের মৈসুমী বায়ূ 'আবিষ্কারের' বহু পূর্বেই বৃহৎ বাংলার নাবিকেরা বাণিজ্য যাত্রায় যেতেন মাঝসমুদ্র দিয়েই, - কেন যেতে পারতেন? তাদের নৌযাত্রার আগেই যথেষ্ট অঙ্কবিদ্যার বিকাশ ঘটে গিয়েছে শুদ্রদের অঙ্ক চর্চায়, মহাকাশবিদ্যায় - আকাশের মানচিত্র আর তার কাছে নতুন বিষয় নয় - ফলে ডাঙ্গা অবলম্বন আর নিরূপণ করে সমুদ্র যাত্রা করা ছাড়াও নাবিক কলন বিদ্যা আর মহাকাশবিদ্যা অবলম্বন করে মাঝ সমুদ্রে দিকনির্ণয় করতে পারছেন সহজেই। চন্দ্রকান্ত রাজু বলছেন প্রাথমিক স্তরে পাঠশালায় কলণবিদ্যা পড়ান হত ভারতে - রাজু বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই বিদ্যা মাত্র সাত দিনে শেখানোর পাঠ্যক্রম তৈরি করে দিয়েছেন, যাতে যাদের অংক পড়া নেই তারাও কলনবিদ্যা শিখতে পারে - যাইহোক - সেই কলনবিদ্যা প্রয়োগ করতেন বাস্তবে ভারতীয় সমুদ্রবিদ নাবিক, তাঁতি আর কৃষক।
আর সঞ্জীব বলছেন নাবিকেরা প্রাথমিকস্তরে উপকূল ধরে বাণিজ্যে যেতেন সমুদ্রে দিক নির্ণয় করতে পারতেন না বলে। কিন্তু ইতিহাস বলছে এক ধরণের নাবিক উপকূল ধরে বাণিজ্য করতে করতে বাংলার চাল, তেল, চিনি, গুড়, লাক্ষা, সুতো, নুন, ইত্যাদি নানান দ্রব্য নিয়ে সিঙ্ঘলে গিয়ে সেখান থেকে পূর্ব এশিয়ায় যেতেন (সমুদ্রে না যেতে পারার অপারগতার জন্য নয়)। অন্য দল বাংলা বা ওডিসার বন্দর থেকে যেতেন সরাসরি পূর্ব এশিয়ায়, যার জন্য বালি যাত্রা উতসব আজও কটকে পালিত হয়, পূর্ব ভারতের মেয়েরা আজও জৈষ্ঠ সংক্রান্তিতে কলার ভেলা তৈরি করে ভাসান নাবিকদের স্মৃতিতে মৌসুমী বায়ু নজরে রেখে। কে বলে বাংলার সাধারণ মানুষ বাংলার মেয়েরা ইতিহাসের চর্চা করে না! অবশ্যই ইওরোপিয়রা যেভাবে করে সেভাবে করে না।
আর শ্রীলংকীরা কি আগ্রহে আমাকে জানিয়ে ছিল তারা যে আদতে বাঙালি, সে চোখ খোলা গল্প অন্য এক দিনের জন্য তোলা থাক।


http://scroll.in/article/814562/are-the-sinhalese-people-descendants-of-bengali-and-odiya-sea-merchants

বিশ্বায়ন বিরোধী চর্চা - বড় পুঁজির ঘোমটা উন্মোচন


জন পার্কিনস তার নতুন বই The New Confessions of an Economic Hit Man: Objective Reality vs. Perceived Realityতে লিখছেন, As described in my book The New Confessions of an Economic Hit Man, my job was to convince heads of state of countries with resources our corporations covet, like oil, to accept huge loans from the World Bank and its sister organizations. The stipulation was that these loans would be used to hire our engineering and construction companies, such as Bechtel, Halliburton, and Stone and Webster, to build electric power systems, ports, airports, highways and other infrastructure projects that would bring large profits to those companies and also benefit a few wealthy families in the country, the ones that owned the industries and commercial establishments. Everyone else in the country would suffer because funds were diverted from education, healthcare and other social services to pay interest on the debt. In the end, when the country could not buy down the principal, we would go back and, with the help of the International Monetary Fund (IMF), “restructure” the loans. This included demands that the country sell its resources cheap to our corporations with minimal environmental and social regulations and that it privatize its utility companies and other public service businesses and offer them to our companies at cut-rate prices.
আর আজকের মুক্তচিন্তকদের গুরু মিল্টন ফ্রিডম্যান ১৯৭৬এ নোবেল পাওয়ায় বলেছিলেন among other things, that the only responsibility of business is to maximize profits, regardless of the social and environmental costs. This was a perceived reality that became the defining goal for businesses. It convinced corporate executives that they had the right – some would say the mandate – to do whatever they thought it would take to maximize profits, including buying public officials through campaign financing, destroying the environment, and devastating the very resources upon which their businesses ultimately depend.
আমরা যারা গ্রামীন আদার ব্যাপারী তাদের আর জাহাজের খবর জেনে লাভ কি?
আসুন জন পার্কিনসের কথা শোনা যাক।
http://evonomics.com/the-new-confessions-of-an-economic-hit-man-perkins-reality/

Saturday, August 20, 2016

উপনিবেশবাদ বিরোধী চর্চা

বাংলার উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা ধ্বংস
দীপঙ্করদাদার প্রকাশনার উত্তরে কিছু কথা
Dipankar Shibu দাদা https://www.facebook.com/dipankar.dey.583/posts/1223217114375915 সূত্রে বাংলার উপনিবেশিকতা নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন।
দার্শনিকভাবে তাঁর মতের সঙ্গে সামগ্রিকভাবে একমত। তথ্য আর ভাবনায় কিছু বলার আছে। হয়ত ফেবুর জন্য ছোট করতে গিয়ে ভাব প্রকাশে ঝামেলা হয়েছে বলে মনে হয়েছে।
কয়েকজন পাঠকের মন্তব্য অত্যন্ত আপত্তিকর, বাংলা বিষয়ে অনৈতিহাসিক। তাঁরা আমার শ্রদ্ধেয়। তাঁদের মতেরও বিরোধিতা সাধ্যমত করেছি।
১) নীল বা পাট বাংলার খুব পুরোনো চাষ।১৭৮০র আগে বাংলায় নীলকরের মত ভয়ঙ্কর অত্যাচারী শব্দটার অস্তিত্ব ছিল না আর নীল চাষ লুঠেরা ব্যবসায় পরিণত হয় নি। নীল চাষের বাংলা(বৃহত বাংলা> দীনেশ্চন্দ্র সেন) বিশ্বে বিখ্যাত ছিল কয়েক হাজার বছর ধরে যেজন্য থেকে ভারতের নাম হয় ইন্ডিগো>ইন্ডিয়া। নীল ব্যবসা ব্রিটিশদের আগে অত্যাচারী আর, কেন্দ্রিভূত ব্যবসাও ছিল না।
পাট হত উত্তরবাংলায়, পরে এসেছে দক্ষিণে - কিন্তু এটাও পুরোনো উতপাদন ব্যবস্থার অংশ।
২) তো বিদ্যুতচালিত মাকু তৈরি করার পর দেখা গেল বাংলার ছট আঁশের তুলোয় যন্ত্র ভাল চলে না, দ্বৈত শাসন ব্যবস্থায় নুন, তামাক চাষ, সুপুরি ব্যবসা, আফিম, বাঁশ, চট, সোরা, ধাতু, ইত্যাদি ব্যবসা দখল নিয়ে ছিয়াত্তরের আগেই বস্ত্রশিল্প ধ্বংস করেছে তারা। 'তুলো চাষ মার খেলো' অনৈতিহাসিক বাক্য, বলা দরকার ছিল সেই চাষ ব্যবস্থাকে পরিকল্পনা করে ধ্বংস করা হল - বাংলার ছোট আঁশের ফুটি এবং নানান রঙ্গীন সাদা বাহারী তুলো ধ্বংস করে বাংলায় চাষ হতে শুরু করল বিদ্যুতচালিত যন্ত্রের জন্য বড় আঁশের আমেরিকার আর মিশরীয় তুলো - আজও যার প্রচার বিজ্ঞাপনে দেখা যায় - মার খেল বাংলার মহিলাদের রোজগার - যাদের নাম চরকা কাটনি - কারণ ভাল কাপড়ের জয় সবার আগে প্রয়োজন ভাল সুতোর - সেটা চরকা কাটনিদের দান - এবারে তুলো উতপাদন ধ্বংস করে মহিলাদের রোজগার খেয়ে নেওয়া হল - তাঁতিদের নির্ভর করানো হল মিলের সুতোর ওপর যে সুতোয় আজও ভাল কাপড় তৈরি হয় না।
৩) আমার আরও ধারণা কৃষি ব্যবস্থা এজ চাষের জন্য ধ্বংস হয় নি - এই চাষ বহুকাল ধরেই ছিল। হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে তোলা সেচ আর জলাধার ব্যবস্থা ধ্বংস করে রপ্তানির জন্য বড় বড় রাস্তা তৈরি করা, তার পরে রেল রাস্তা তৈরি করা তার বড় কারণ। বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া, মাটি, খাদ্য শৃঙ্খল ইত্যাদি বিবেচনা করে নিজস্বভাবে গড়ে ওঠা সমাজ নির্ভর সেচ ব্যবস্থা ধ্বংস হল - ফলে ধ্বংস হল বাংলার কৃষি ব্যবস্থা। রেল ব্যবস্থা তৈরি হল বড় বড় বাঁধের মত রাস্তা তৈরি করে, নদীর ওপর সেতু বানিয়ে - ফলে সেচের নালাগুলো দ্গ্বংস হয়ে গেল। ১৭৫৭ থেকে প্রায় মার্ক্সের একশ বছর পরের প্রণোদনা সত্যি করে(এ পরিকাঠামো ধ্বংস না করলে নতুন ইওরোপিয় ধাঁচের ভারত গড়ে উঠবে না) শহুরেদের পূর্বপুরুষেরা ব্রিটিশ লুঠের ছোট তরফ হতে ব্রিটিশ পদপ্রান্তে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন আর বিপরীতে গ্রামীনেরা ১৭৬৩ থেকেই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়ছে। ফলে ব্যপক গ্রামীন বিশিল্পিয়ায়ন, ব্যাপক সম্পদ লুঠ, দক্ষ কারিগর খুন, আর উতপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস বিষয়ে মাথা ঘামাতে পারল না ভারতীয় সমাজ।
৪) যে সঙ্ঘীরা বলেন বাঙ্গালির শিরদাঁড়া বেঁকানো ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে ব্রিটিশ বাবাদের কিস্যু করার ছিল না তারা নিজেদের পূর্বপুরুষের ব্রিটিশ লুঠের ভাগিদার হওয়ার কৃতজ্ঞতায় ব্রিটিশিয় 'গণহত্যার' সত্যে উপনীত হতে চান না। বিয়াল্লিশ নিয়ে যত কাজ হয়েছে ছিয়াত্তর নিয়ে তত কাজ হয় নি সত্য কিন্তু হাতে গোণা নাছোড়বান্দা বাঙালি যেমন কামিনী রায়ের পিতা চণ্ডীচরণ সেন অসাধারণ উপন্যাস নন্দকুমার লিখে জেলে পর্যন্ত গিয়েছিলেন যেখানে তিনি ফোর্ট উইলিয়মের নথিপত্র ঘেঁটে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন ব্রিটিশ লুঠ ধ্বংস আর অত্যাচারের কাহিনী উপন্যাসের আদলে লিখে। আজও পর্যন্ত ঔপনিবেশিক সাহিত্য ব্যবস্থার উপজাত এক জনও সাহিত্যিক ছিয়াত্তর নিয়ে লেখেন নি - আনন্দমঠের বঙ্কিম বাদ দিয়ে, সেখানেও তিনি চাকুরিদাতাদের সম্মানে, তাদের হত্যালীলা যতটা পারা যায় উজ্জ্বল এবং কালিমামুক্ত করে দেখাবার চেষ্টা করেছেন।
৫) এ নিয়ে কোন তর্কই উঠতে পারে না যে বামপন্থীরা বরাবরই ব্রিটিশ প্রণোদিত বাংলার পরম্পরার পরিকাঠামো ধ্বংসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। কার্ল মার্ক্স জোর গলায় চেয়েছিলেন অশিক্ষিত, অজ্ঞানী, সভ্যতার ষোড়ৈশ্বর্যবোধহীন, নিরক্ষর গ্রামীন শুদ্রদের হাতে গড়ে তোলা এই ভারতের গ্রামীন সভ্যতার ধ্বংস। এ কাণ্ডটা না ঘটালে ইওরোপের জ্ঞানচর্চা, প্রযুক্তি আর জীবনধারণ পণ্যের বাজার তৈরি হয় না। ভারতীয় হিসেবে আমরা জানি গুরু বাক্য অমান্য করা পাপের থেকেও ভয়ঙ্কর।

Monday, August 15, 2016

এ কোন স্বাধীনতা


এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় শুদ্র সভ্যতাকে উচ্চবর্ণিক সভ্যতার ঘোমটা পরানো হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় বিশ্বকে কাপড় পরতে শেখানো হাজারো দক্ষ জ্ঞানী তাঁতিকে প্রতিদিন উচ্ছেদ হতে হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় শহুরে শিক্ষিতরা গ্রামীন পরম্পরার মানুষদের অশিক্ষিত দাগিয়ে দেন
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় গ্রামীন উদ্যোগীদের কাজ সবলে আইন করে কেড়ে নেওয়া হয়,
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় গ্রামীনদের কাজ, বাসস্থান সংস্কৃতি থেকে উচ্ছেদকেই প্রগতি বলে ঘোষণা করা হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় গ্রামীনদের গাঁইয়া গোঁয়ার মুর্খ দাগিয়ে দেওয়া হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় চাষীদের রোজ বিষ পান করানো হয় বড় পুঁজির কৃষির স্বার্থে রাষ্ট্রীয় প্রণোদনায়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় গ্রামের মানুষ নিজের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে ভিনদেশি অজানা অচেনা প্রতিযোগিতাময় শহরে উদ্বৃত্ত হয়ে বেঁচে থাকে
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় গ্রাম্য হাজার হাজার বছর ধরে বিকশিত দক্ষতার মানুষ শুধু রাষ্ট্রের দয়ায় ১০০ দিনের শ্রমিক হয়ে যায়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় দেশ-সমাজ গড়ার কারিগর শুদ্রদের লাঞ্ছনা হত্যা করা হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় চাহিদাহীন মানুষকে গরীব ঘোষণা করে ১০০ দিনের কাজ জুতে দেওয়া হয়, যাতে কর্পোরেটদের মধ্যবিত্ত পরিকাঠামো গড়ে ওঠে রাষ্ট্রজুড়ে
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় শুধুই কর্পোরেট পুঁজির বিকাশকেইরাষ্ট্র আর মধ্যবিত্ত বিকাশরূপে মান্যতা দেয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় হাজার হাজার বছরের ভারতের শুদ্র সভ্যতার উদ্বৃত্ত মধ্যবিত্ত, ইন্ডিয়ায় কর্পোরেট অসভ্যতার দাস হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় আমার ভাষায় কথা বলাকে অবাঞ্ছিত বলা হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় গ্রামীন্দের আশিক্ষিত, মুর্খ, উদ্যমহীনরূপে দাগিয়ে দেওয়া হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় পকেটে যাদের অর্থ রয়েছে তাদের সব স্বাধীনতা, বাঁচার আধিকার কিনে নেওয়ার আধিকার তৈরি হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় দেশ আর সমাজ জাতি রাষ্ট্রের পায়ে বলিপ্রদত্ত হয়
এ কোন স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতায় জাতি রাষ্ট্রের এক ভাষা, এক জাতি, এক ধর্মই মান্যতা পায় ইংরেজি শিক্ষিতদের কাজ কর্মে
এ কোন স্বাধীনতা?
এ কোন স্বাধীনতা?
এ কোন স্বাধীনতা?
আমার স্বাধীনতা আমায় ফিরে পেতেই হবে