Wednesday, July 31, 2013

বিশ্বায়নের গুরু সিপিএম এবং কংগ্রেস বুঝতে পারছে না তৃণমূল ২০১৩র ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় একতরফা জিতল কেন২? Why bolt from blue in 2013 Panchayat Election in West Bengal! Is It unbelievable? For us it is not. Low-intelligent organizers like us, who used to fight against Globalization, could understand. A synopsis of analysis2

এবারে মূল বিষয়
বাঙলায় সিপিএম বিশ্বায়নের বাঙালি দালাল গ্রামীণেরা বুঝে গেছেন বুদ্ধবাবুকে দেখে। তার ধাক্কা খেল সিপিএম।
২১/৬/১৩র আনন্দ বাজার পত্রিকার দু স্তম্ভের প্রতিবেদনশহরের জমি দখল রাখার ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিতে বনিক সভা লবি করবে। ববি মমতা এই কাজে সংগ দেয় নি বলে তাদের গলা কাটা হয়েছে এবিপিতে, ২৪ ঘণ্টায়, বনিক সভায়। রোজ রাতে, প্রত্যেক মিটিঙে। গারডেনরিচতো ছুতোমাত্র। জমি বেচু সিপিএম, বুদ্ধবাবুর সময় শহরের জমির ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিতে খুব চেষ্টা করেছিল। যাতে বাকি বন্ধ কারখানাগুলো তুলে দিয়ে, বস্তি উচ্ছেদ করে প্রোমোটারদের থেকে কামাই করা যায়। পারেনি। ফবর বিরুদ্ধে লড়াই করে মেট্রোকেস্পেন্সারকে বাংলায় ঢুকিয়ে দিয়ে গিয়েছে। আরএসপির বিরুদ্ধে লড়ে কেমিকেল হাব প্রায় বানিয়েই ফেলেছিল। ফবর বিরুদ্ধে গিয়ে এপিএমসি আইন বদল প্রায় হয়েই গিয়েছিল। শুধু ফ্রন্ট বেচারা হেরে গেল বলে, আর শরিকেরা দালালি করতে করতে, কিছুটা মুখ বাঁচাতে লড়াই করল বলে। 
সিপিএমের আমলেই তৈরি হয়েছে এমন আইনযাতে হকারি করে ধরা পড়লে ৬ মাসে বিনা বিচারে জেল হয়। বেল মিলবে না। ধর্ষণ করলেখুন করলে বেল হবে। হেরে না গেলে ম্যাকিনসেকে দিয়ে চুক্তি চাষের কৃষি নীতি প্রয়োগের জন্য তৈরি হয়েই গিয়েছিল। জ়েনেটিক বীজ নিয়ে মনসান্তো বাঙলায় পা রেখেছিল তাদেরই আমলে। কোকাকোলা আর পেপসিও। গনশক্তিতে বিজ্ঞাপন ছিল গোটা এক পাতা জোড়া। ভুলে গেলেন? বাংলার মানুষ ভোলেনি, পঞ্চায়েতের ফল তার প্রমান। 
এমের বড় কৃষক নেতাজয়া মিত্রদিদিকে ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন আপনারা চাষাকে চাষাই রাখতে চান। আমরা চাকরি দিতে চাই। তার উন্নয়ন চাই। কলকাতা টিভিতে সেই বিখ্যাত কথা-বারতার এখনও রেকরডিংটি থাকলেও থাকতে পারে। ইতিহাস লিখতে কাজে লাগবে। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত একদিকে গৌতমএর ক্যাডার একদিকে বুদ্ধএর পুলিসকে সম্বল করে গ্রাম তুলেচাষ তুলেচা বাগান তুলেগ্রামের মানুষকে বন্দুক আর ক্যাডারের গুঁতোর সামনে ফেলেবাংলাজুড়ে নতুন নতুন শহরীকরণএর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছিল। গ্রামের মানুষ ভোলেনি। ভোলেনি নন্দীগ্রামে বড় পুঁজির দালালি করে কেমিকেল হাব, সিঙ্গুরে টাটার দালালি করে ন্যানো, চাঁদমনিতে চা বাগানের মালিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রোমোটারিরাজ কায়েম করা, মহম্মদবাজারে খাদান মালিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করা আদিবাসীদের বিরুদ্ধে জোটকরা। নন্দীগ্রামের আন্দোলন তৃণমূল ভুলেছে, দলাদলি করেছে। সেখানের মানুষ তাকে এই ভোটে চোখ রাঙ্গানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। লোবাতে জিতলেও অস্বস্তি রয়েছে।
জেএনএনয়ুআরএমের সব থেকে বড় সমালোচক আর একই সঙ্গে খাতক ছিল বামফ্রন্ট, যে প্রকল্প শহরের গরিবের জমি কেড়ে নিয়ে কর্পোরেটদেরকে দেওয়ার জন্য তৈরি আমেরিকার ছক। সেই ছকের বাংলার দালাল সিপিএম। এখন তৃণমূলএর অনেক নেতা। মমতা অনেকটা আটকেছেন। মানুষ কিন্তু দেখছে। 
জরুরী অবস্থায় সিআরপিএফএর ধারনার বিরুদ্ধে লড়াই করা বামফ্রন্ট, তাদের বাঙলায় সাদরে নিয়ে এল। যাতে কোলগেট থেকে কোটিকোটি টাকা কামানো জিন্দালেরাব্রিটিশদের সঙ্গে মিলে আফিম ব্যাবসা করে পুঁজি জোগাড় করা টাটারা বাঙলা লুঠতে পারে। গ্রাম তুলে নতুন বিমান বন্দরনতুন স্বাস্থ্য শহরের(মানে কি??)ও পরিকল্পনা করেছিল। প্রায় প্রত্যেকটা নীতির বিরুদ্ধে দিল্লিতে ধরনা দিয়েছেদেশজুড়ে আন্দোলন করেছেটিভিতে বকবক করেছে দ্বিচারী সিপিএম। এত সহজে ভুলেগেলে হবে কমরেডআমরা কিন্তু সহজে ভুলিনি, গ্রামের মানুষও ভোলেন নি। তাই পঞ্চায়েতে ঢেলে দিয়েছেন তাঁকে।
মমতা খুচরো বাজারে বাঙলায় এফডিআই আসতে দেন নি। মমতা বাঙলায় একটাও এসইজেড হতে দেন নি। সিপিএম এসইজেড করে গিয়েছে একের পর এক - সল্ট লেক যান, নিউ টাউনে যান। দেখবেন। মমতা বড় শিল্পএর বিরুদ্ধে। সরাসরি। 
মমতা বড় বড় রাস্তা হতে দিচ্ছেন না বেশি। মনে নেই উত্তরবঙ্গ গেলে রাস্তা চওড়া না হওয়ার জন্য কেমন করে মমতার শাপশাপান্ত করি! বাংলার বাইরে তৈরি হওয়া রাজপথ দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোরের বিরোধী। কিন্তু বাংলায় সেধরণের একটি চাই। কি বিপ্লবীপনা! রাস্তা বড় হয় নি, চওড়া হয় নি, আমেরিকারমত হয় নি! বেশ হয়েছে। আর কত কর্পোরেট দালালি করবেন কমরেড! একবার নিজের ভেতরে ঢুকে দেখুন। পঞ্চায়েততো হাতছাড়া হল। শুধু আর দুটো জেলায় ঘাড় ধাক্কা খেতে বাকি।
এই বিষয়গুলো নিয়ে ২৪ ঘণ্টা, আবাপ কি চায়, সিপিএম কি চেয়েছে, আমরা পিছিয়ে পড়ারাসকলেই জানি। সিপিএমকে ঘোমটার আড়ালেক্যামেরার সামনে গ্রামের জনগণকে বোড়ে করে বিভিন্ন ভাবে মমতাকে প্রভাবিত করতে চেষ্টা করছেন। যেভাবে ন্যানোর সময়নন্দীগ্রামের সময় চেষ্টা করেছিল। স্বভাবমত তেলেবেগুনে জ্বলে উঠছেন। মাঝে মাঝে মাথার পোকা নড়েওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে যা বলার নয় তাই বলেন। বেশ করেন। সুভদ্র ভাষায়, সাদা ধুতিতে, সুন্দর মুখে মানুষ খুন, বামপন্থী মুখোশ পরে কর্পোরেট দালালি ৩৪ বছরে অনেক দেখেছি। মমতার সেই ঘোমটা নেই। মমতা এখনও পর্যন্ত প্রভাবিত হন নি।  এইটুকুই আশ্বাস।
আবাপ, ২৪ ঘন্টা ঘুটি সাজাচ্ছে। তারা ভেবেছিলহয়ত সিপিএমের থেকে বড় উন্নয়নবাজ হবেন মমতা। তাদের বাড়া ভাতে চাই পড়েছে। গ্রামের ঘাড়ে হাত দিয়ে তাই আবার সিপিএমের ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। বড় পুঁজিও চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত দুএকবার দেখা করে গিয়েছেন। হিলারিও চেষ্টা করছেন। এডিবির ঋনের টোপও দেওয়া হচ্ছে। মমতাকে নাড়ানো যাচ্ছেনা বিন্দুমাত্র। সিপিএম ক্ষমতায় এলে এগুলো করবেই করবে। কায়দা করে। বামপন্থী মধ্যবিত্তের উন্নয়নের ঘোমটা পরিয়ে। আর আমরা যারা জনগন, যারা পিছিয়েপড়া তারা ....৩৪ বছরএর বামপন্থী ফান্দা আর ডাণ্ডা এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাব কমরেড??? গ্রামের সর্বংসহা মানুষেরা ২০০৬ পর্যন্ত সিপিএমকে অনেক সুযোগ দিয়েছেন। তার পর ২০১৩র পঞ্চায়েতে ঘাড়ধাক্কা। 
পঞ্চায়েতের সন্ত্রাস নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন! কোথায় ছিলেন কমরেডযখন দুবরাজপুরে লড়াই করা সাঁওতাল যুবক-যুবতীদের খাদান মাফিয়ারা পুলিস দিয়ে পেটাচ্ছিলআর সিপিএম আদিবাসী আর মুসলমানদের মধ্যে কৌশলে দাঙ্গা লাগাবার চেষ্টা করছিলকোথায় ছিলেন কমরেড যখন মরিচঝাঁপিসহ হাজারো গণহত্যা হয়েছিলকোথায় ছিলেন কমরেড যখন জন মেজর কলকাতায় এলে কলকাতা আর বাংলাজুড়ে রাতের আঁধারে হকার উচ্ছেদ আর দোকান লুঠ  হয়েছিলকোথায় ছিলেন কমরেড যখন কলকাতার খালপাড়গুলোতে সংস্কার উন্নয়ন আর সৌন্দর্যায়নের নামে পুলিসক্যাডার লাঠি আর বন্দুক ঘুরিয়ে ঝুপড়ি তুলে বহ্নুমহোৎসব করছিলকোথায় ছিলেন কমরেড যখন ডিএফাইডির ৮০ কোটি টাকা দান নিয়ে রুগ্ন কারখানার শ্রমিকদের, কারখানা থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে, সেই জমি প্রমোটারদের বেচে দিয়ে নিজের আর পার্টির তবিল বাড়ানোর কাজ করছিলেনকোথায় ছিলেন কমরেড যখন রাজারহাটে, বরধমানে, জলপাইগুড়িতে কৃষকদের  ভিক্ষেমুষ্টি দিয়েপুলিসের জল কামান লেলিয়ে কিছু জলাআর অধিকাংশ উর্বর জমিগুলো কেড়ে, চা বাগানের শ্রমিকদের উছেদ করে প্রমোটারদের হাতে তুলে দিয়েছিলেনকোথায় ছিলেন কমরেড যখন সারদারাটাওয়ারেরা জেলা থেকে মুঠি মুঠি টাকা তুলছিল আর আপনাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো সেই তোলা টাকা থেকে কোটি কোটি টাকা দান নিয়ে সমাজ সেবা করছিলকোথায় ছিলেন কমরেড যখন এপ্রিল ১৩য় এডিবি দিল্লিতে এজিএম করছিলমানুষ উচ্ছেদের জন্য উন্নয়নের টাকা বরাদ্দ করছিল আর দিল্লি বা দেশ সে খবর জানতেই পারে না। কি আন্দোলন করেছিলেন তখনবড় পুঁজি খেপে যাবে তাই চুপআর সব নানান কাণ্ড ঘটনা এর আগে বহুবার বলা হয়েছেনতুন করে বলার  নেইস্মৃতি জেগে উঠবেচোখ জলে ভেসে যাবে। সিপিএম এখনও চিনেরইউরোপেরআমেরিকার দেখানো পথের মত করে উন্নয়ন চায়। ইয়িচুরিবাবু ছত্তিসগড়ে তাইই দাওয়াই দিয়েছেন। বাংলার মানুষ কি রায় দিয়েছেন তা স্পষ্ট।
মমতা বামপন্থীদেরমত ইউরোসেন্ট্রিক নন। এলিট নন। আজকের দিন পর্যন্ত এটাই ভরসা। বাংলার মানুষ তা জানে। তাই এই ফল। এ ফল অপ্রত্যাশিত নয়। অভাবনীয়ও নয়।

তবে মমতা যদি কোনোদিন সিপিএমের পথে হাঁটতে চান তাহলে, আজ সিপিএমের যা হয়েছে, বুদ্ধবাবুর যা হয়েছে, তার আর তার দলের তাই হবে। আমাদের ধারণা এই তথ্যটুকু মমতা আজকে অন্ততঃ জানেন। কাল কি হবে? জ্যোতিষী বা সমাজতাত্বিকদের জিজ্ঞেস করুন।

Tuesday, July 30, 2013

বিশ্বায়নের গুরু সিপিএম এবং কংগ্রেস বুঝতে পারছে না তৃণমূল ২০১৩র ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় একতরফা জিতল কেন১? Why bolt from blue in 2013 Panchayat Election in West Bengal! Is It unbelievable? For us it is not. Low-intelligent organizers like us, who used to fight against Globalization, could understand. A synopsis of analysis1

বিশ্বায়নের মিত্র সিপিএম, আর তাদের বিশ্বায়ন ভাবনার গুরু কংগ্রেস এবং বাংলার সংবাদ মাধ্যমেরা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বিজয়ে হয় নিঝুম, বা পাগল, নাহলে বুঝভুম্বুল। কেউই সম্যক বুঝে উঠতে পারছেন না, কেন এই ঘটনা ঘটল। সিপিএম ছাড়া গ্রামবাংলায় অন্য কোনও দল পা রাখতে পারে এই ধারনাটাই বিগত ৩৪ বছরে লোপ পেয়ে গিয়েছিল। পূর্বমেদিনীপুর আর মুর্শিদাবাদ দুটি ব্যতিক্রম ধরে নেওয়া হত।

কেন? কেন? কেন?
এমন কেন ঘটল? যারা বাংলার রাজনীতির একটুও খবর রাখেন, তারা কি গত কয়েক বছরের ইতিহাস ভুলে গেলেন? সত্যিই বাংলার ২০১৩র পঞ্চায়েতের ফল আকস্মিক? বিশ্বায়নের উচ্চমেধার পৃষ্ঠপোষক আবাপও মেনে নিতে পারছে না। আমরা যারা নিম্নমেধার মানুষ, যারা তথাকথিত অজ্ঞ, সামন্ততন্ত্রে ডুবে থাকা, উৎসাহহীন, ইতিহাসের বোধহীন, চাহিদাহীন গ্রামীণদের দৈনন্দিনের রাজনীতির(দলীয় নয়) সঙ্গে জুড়ে থাকি, যারা সংগঠন করি বিশ্বায়নের প্রতিভূ এবং তাদের সিপিএম-কংগ্রেসএর ঘোমটা পরা ভারতীয় দালালদের বিরুদ্ধে, তারা হয়ত আন্দাজ করছি, বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক কিছু ঘটনাক্রম ঘটে চলেছে বাংলার গ্রামেগঞ্জে। সেই ঘটনাক্রমকে কেউ কেউ হয় জেনে বুঝে নজ়র-আন্দাজ় করছেন, নয়তবা গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করছেন না।  সেগুলোর কয়েকটিমাত্র আমরা এখানে তুলেধরার চেষ্টা করব।  মুখড়া হিসেবে দু-তিনটি বিষয় আলোচনা করে মূল বিষয়টিতে যাব।

প্রথম। গ্রাম বাংলা জুড়ে ব্যাপক সন্ত্রাসএর বাতাবরণের অভিযোগ। ভারতীয় রাজনীতিতে ক্ষমতা দখলের রাজনীতিওয়ালারা ঘোরতর শাক্ত। সে বাম, ঘোরতর বাম, দক্ষিণ বা মধ্য, যে পন্থীই হোন না কেন। কেউই ধোয়া তুলসিপাতা নন। সুযোগ থাকলে জনগণের নামে পেশীশক্তি ফলান। যেমন বাম আমলে আধিকারী পরিবার বা বাম এবং তৃণমূল আমলে অধীর এবং শঙ্কর সিং। কিন্তু আমরা যারা সংগঠন করি, তারা বিশ্বাস করি, শুধু পেশি শক্তি দিয়ে ক্ষমতা রিগ করে টিকে থাকা যায় না। পেশি শক্তি ফলাতে জোরদার সংগঠন চাই - শুধু পুলিস আমলা দিয়ে হয় না। বিশ্বের ইতিহাস প্রমান। বামেদেরও পক্ষে প্রবল জনমত ছিল। ৪০-৫০ শতাংশের কাছাকাছি। শুধু রিগিং করে ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকা যায় না। মমতা বা তার দলকে শুধু দোষ দিয়ে লাভ নেই। সবার বগলে ঘেমো গন্ধ। যখন সমর্থন চলে যেতে থাকে, ক্ষমতাধারীরা বগল চাপা দিয়ে গন্ধ আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পারা যায় না।

দ্বিতীয়তঃ বিপুল সংখ্যক আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা। এ বিষয়ে একটাই উত্তর। ১৯৭৮এর পর ২০১৩র আগে কত সংখ্যক আসন ফ্রন্ট ভোট করার আগে লড়াই না করে জিতত! সে হিসেবটা নেওয়া দরকার। শুধু তৃণমূলে দোষ চাপিয়ে লাভ কার! গতবারের বর্ধমান। পঞ্চায়েতে ৪৫৭টা আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল ফ্রন্ট। সিপিএম একাই ৪১৯; উচ্ছিষ্ট পেয়েছিল সিপিআই ২০, আরএসপি ৬, ফরওয়ার্ড ব্লক ১০, অন্যান্য ২। একটাও তৃণমূল জেতেনি। এবার উল্টো ফল। গতবারের সকলেই উচ্ছিষ্ট। আগের পঞ্চায়েতের ফলগুলো লক্ষ্য করলে তাইই হয়ত দেখা যাবে। শুনছিলাম ১৯৭৮এর পঞ্চায়েতে অনেক জেলায় নাকি কংগ্রেসএর আসন প্রায় শূন্য ছিল। পঞ্চায়েত-ঘাঁটা আমলা দেবুবাবু বলছেন, বাংলা জুড়ে ১৯৮২তেও সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার মত সংগঠন ছিল না সিপিএমের, সেইজন্য অন্য দলের সংগঠন দখল করতে হয় সিপিএমের। সেই ট্র্যাডিশন তৃণমূল ধরে রেখেছে। যে রাজনীতির খেলা ফ্রন্ট শুরু করেছে, সেই রাজনিতিতেই তাদের নিয়মে খেলে, তাদেরই পরিষ্কার ১০ গোলে হারিয়েছে তৃণমূল ২০১৩র ভোটে।(http://bardhaman.nic.in/election/pan_result08/gpview_uc.asp 

তৃতীয়তঃ দুবছরের এত আন্দোলন বিফলে গেল? কিসের আন্দোলন কমরেড? আন্দোলনতো বাংলার শহর জুড়েও হয়েছে বলা যাবেনা। শঙ্খ বাদনে শুধুই কলকাতা কেঁপেছে। গাড়ি বোঝাই করে গ্রামএর মানুষকে দুই রাজধানীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাতে বামপন্থীদের শহরভিত্তিক আন্দোলন আন্দোলন খেলার অহং পরিপূর্ণ হলেও, গ্রামের রাজনীতির কী এসে গেল? মমতা শুধু শুধু আবাপর খেলায় উত্তেজিত হচ্ছিলেন। শক্তিমান ঘোষ মনে রাখতে পারেন, তার সঙ্গে ঠিক এই লাইন ধরে আলোচনা করেছি হাওড়া নির্বাচনের আগে ও পরে।
আর অম্বিকেশ? পার্ক স্ট্রিট? ছাত্র নেতার মৃত্যু? শহরে কোনও সরকারি প্রেক্ষাগৃহে মিটিং করতে গেলে পুলিসের অনুমদন লাগবে? সব কটিই হয়ত খুব খুব খুব খারাপ। কিন্তু তাতে গ্রামের মানুষের কি এসে গেল? গ্রাম ইন্সটলমেন্টে আন্দোলনএর খেলা করে না। যখন করে তখন, হয় নন্দগ্রাম, নয় সিঙ্গুর, বা ১৯৭৭ বা ২০১১ হয়। গ্রাম জানে এসবই মধ্যবিত্তের শহরভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমে মুখ দেখাবার রাজনীতি। আর ৪০,৫০,৬০, ৭০ হাজারি সরকারি আর সওদাগরি আপিসের আগুন খেকো বাবুদের নেতাদের আর বাড়িতে বউদের সামনে মহান সেজে মুখ বন্ধ রাখা। আর সঙ্গে আপিসে মাইনে বাড়াবার আন্দোলন জোরদার করার জন্য নামী নেতাদের নিয়ে এসে পরিচালকদের ওপর চাপ বাড়াবার অন্যতম কৌশল। আর বাড়তি পাওনা, সংবাদ মাধ্যমে এসে রাজা উজির মারা। এ ফন্দিফিকির গত ১৫ বছরে অনেক দেখেছে গ্রাম।
যখন বীরভূমের খাদান মালিকেদের সঙ্গে মিলে গ্রামের পর গ্রাম দখল করেছিল দল নির্বিশেষে নেতারা, তখন কি করছিলেন আগুন খেকো শহুরেরা? তারা তাদের পাশে দাঁড়ান নি। বিপ্লবীরা কলকাতায় একটাও মিটিং করেন নি। বর্ধমান, রাজারহাট, চাঁদমনিতে জমি লুঠ হচ্ছিল, তখন সেখানে কে কোথায় কত টাকার ফ্ল্যাট কিনবেন, তার লটারিতে অংশ নিতে অফিসে, স্কুলে, কলেজে মাথার চুল ছিঁড়ছিলেন। ব্যাঙ্কে কত আছে, কত সুদ আর কত ইএমআই পড়বে তাই নিয়ে অঙ্ক কষছিলেন। শহরের মানুষের ওপর আঘাতের নানান ঘটনায় কি এসে গেল গ্রামের? শহরের পাশে সংবাদ মাধ্যম আছে, নানান সংগঠন আছে, উপরন্তু মানবাধিকার কমিশন আছে। গ্রামে আন্দোলন শুরু করতে হয় একা একা, পুলিস, ক্যাডারএর মার খেয়েই। গ্রাম জানে, তাদের চামড়ার ডুগডুগি বাজিয়ে, ন্রেগা প্রকল্পের লেবেঞ্চুস দিয়ে সরকারি চাকুরে বাবুরা নিজেদের মাইনে যাচ্ছেতাই পরিমাণ বাড়িয়ে নিলেন। বাড়িতে দুজন সরকারি চাকুরে মানে বড়লোক - ১ লাখের কাছাকাছি বা ওপরে রোজগার। একজন রোজগেরে মানে, মাসে অন্ততঃ ২০ হাজার টাকা। হাতের নাগালেই গাড়ি, বাড়ি, বিদেশ। অফিস কেটে আন্দোলন আন্দোলন খেলায় রাতে মোবাইলে নেতার আর গৃহিণীর পিঠ চাপড়ানি।
কংগ্রেসেরমতই বামপন্থীরা উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন বেশি, করেছেনও অনেক। তারা মল সংস্কৃতিকে বাহবা দিয়েছেন। কলকাতায় কোল দিয়েছেন। উন্নয়নের কোল্যাটারাল ড্যামেজ বিষয়ে তাদের আবার বিবেক দংশন কম। তারা আজ বড্ড নেহরুর সমর্থক। বাজারে জিনিষের দাম বাড়লে ৩০, ৪০, ৫০ থেকে ১০০ হাজারি সরকারি বামপন্থী আন্দোলনরত অধ্যা., আপিস, ম্যাস্টরবাবুরা পরের দিন ডিএ বাড়াবার জন্য তদ্বির-আন্দোলন করে, বাড়ি ফেরার পথে ১০০০ টাকার ইলিশ কেনেন- এই জেনেই, বাজারে দাম বাড়ার পেছনে তাদের মাইনে বাড়ারও একটা অবদান আছে। তাদের জীবনযাত্রা ভাল হল। ছেলে মেয়েদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়িয়ে কর্পোরেট যোগ্য করলেন। তাতে গ্রামের মানুষের কি? বরং মাইনে বাড়ার ফল সইতে হচ্ছে গ্রামীণদের। ২০, ৩০ হাজারিরা  শুধুমাত্র ন্যানো কিনতে পারবেন, তাই সিঙ্গুরের চাষিদের থেকে জমি কেড়ে নেওয়া হল। ৭০, ৮০, ৯০, ১০০ হাজারিরা বর্ধমান, চাঁদমনি, রাজারহাটে কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনবেন, ১০ লাখি চার চাকা কিনবেন, তার জন্য উর্বর জমি, চা বাগান, কারখানাগুলো রুগ্ন করে কেড়ে নেওয়া হল। এগুলো গ্রামের মানুষেরা দেখছেন না? আমরা যারা নিম্নমেধার মানুষ, তাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তারা আবার এতশত বুঝিনা। শুধু বুঝি গ্রামের মানুষেরা মন ঠিক করলে ২০১৩ বা ১৯৭৭ হয়।

Monday, July 29, 2013

Craftspersons of Patna, পাটনার কারু শিল্পীরা

পাটনার কারু শিল্পীরা। ১৮২০-৩০ সালের মধ্যে আঁকা। 














Sunday, July 28, 2013

An Unusual Bullock Cart - An Examination, একটি অন্যরকম গরু গাড়ি

একটি অন্যরকম গরু গাড়ি। 

আমাদের বাংলা কথা
বিষয়টি একটি গরুর গাড়ি বিশ্লেষণ। অনেকদিন পর ইংরেজিতে পোষ্ট লিখলাম। 
আমরা বাংলায় ইংরেজি লেখা খুব পছন্দ করি না। এমন নয় যে আমাদের ইংরেজি ভাষা অপছন্দ। এই ভাষা আমাদের  দখলে নেই। অনেক গালি সহ্য করে বাধ্য হয়ে অনেক বড় বয়সে ইংরেজি বলতে, পড়তে আর লিখতে শিখেছি। এই বৃদ্ধ বয়সের মুখে দাঁড়িয়েও বাংলা লেখায় বড় ইংরেজি উদ্ধৃতি দেখলে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করি, যদি সেটি মূল প্রবন্ধ পড়ায় অসুবিধা না করে।
গত কয়েক দশকে মাতৃভাষার দোহাই দিয়ে বাংলা, হিন্দি অন্য ভারতীয় ভাষার ওপর আধিপত্য কায়েম করছে। ক্ষমতাবানদের হাতে ইংরেজিও আরও বড় আধিপত্য বিস্তার করছে। সেটিতো ক্ষমতাবানেরা করছেন। ভাষার দোষ কোথায়? আমরা ভাষার আধিপত্য রোধ করার পক্ষে। ইংরেজির বিপক্ষে নই। 
গত শতকে বাংলার ইতিহাস, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, জ্ঞান, ভাষা (যেমন ওডিবিএল) ইত্যাদি ইংরেজিতে প্রচুর লেখা হয়েছে। মুলটি বাংলাতে চাই,অনুবাদে নয়। অক্ষয় মৈত্রেয়/দত্ত, হরপ্রসাদ, প্রফুলচন্দ্র, দীনেশ্চন্দ্র, সুনীতিকুমার, নির্মল বসু, বিনয় সরকার/ঘোষ, আশু ভটচাজ এবং আরও বহু জ্ঞানী মানুষ ইংরেজির পাশাপাশি গুরুত্ব দিয়ে বাঙলার অতি গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি নিয়ে অনেক কিছু বাংলা ভাষায় লিখেছেন, বলেছেন, নিজের কেরিয়ারের দিকে নজর দিয়েও। ইংরেজের(বর্তমানে আমেরিকার) পদলেহন করেন নি। 
সাবঅলটার্ন বিষয়ের লেখকেরা ছুটমুট কয়েকটা এলেবেলে কাজ ছাড়া অধিকাংশ প্রথমে ইংরেজিতে লিখেছেন। সম্প্রতি কয়েকটা বাঙলায় অনুদিত হয়েছে। ক্ষমতা ভাঙতে গেলেন ক্ষমতারই দর্শন অবলম্বন করে। 
ইংরেজিতে লিখে অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ, সমাজতাত্বিক, নৃতত্ববিদেরা বিদেশে ভাল চাকরি, প্রচুর তাবিজওালা সম্মান, অর্থ উপার্জন করে শেষ বয়সের বানপ্রস্থে বাঙলায় এসে গুরুগিরি কপচাচ্ছেন। কেউ আবার মাঝে মধ্যে দয়া করে কলকাতায় এসে, বাংলার কিসে ভাল, তার নিদান দিয়ে, আবার বিশেষ বিমানে বিদেশে উড়ে যান।   
যাই হোক, প্রথমের দিকে আমরা ইন্টারনেটে বাংলা সামাল দিতে পারিনি, অনেকটা ইংরেজিতে লিখিছি, টুকেছি। যখন পারলাম, তার পরে বাংলাতেই লেখার চেষ্টা করে গিয়েছি।
গত পরশু জয়া মিত্রদিদি এই ভাবনাটি ইংরেজিতে লিখতে বল্লেন। নিচে প্রথমে সেই বিশেষ গাড়ির ছবিটা দিলাম। পরেরগুলোর কয়েকটা অর্বাচীন সময়ের। তুলনার জন্য। পড়বেন। দেখবেন।
ব্যাস। 
জয় গুরু! জয় বাংলা!

An Explanation
This is not right that we don't want to write in English. We fight those powers, who used English as a power weapon to dominate other languages. This is true for Bengali as well as Hindi also. 
The irony is that, those fought tooth and nail against Urdu hegemony in Banagladesh, used  Bangla as a power weapon do destroy other languages. This is true in West Bengal also. Power mongers used the sentiment value of a language to dominate others.
In this blog, we hardly write in English nowadays. We stared this Blog in 2009. That time could not handle Bengali in internet. Later we equipped ourselves. Then on we used to write the body in Bangla and try to translate the heading in English. We put a translation tool for those who do not understand Bangla.
Nowadays hardly researchers on Bengal's knowledge & history, write in Bengali. Their target is the British and American education system. It is a historical fact that, Deshabhimanis like Haraprasad, Dineshchandra, Niharranjan, Binoy Ghosh/Sarkar, Nirmal Bose and many others though wrote in English, their Bengali writings are more powerful than their English. We need to focus on Bangla, Bangla and more Bangla bhasa. 
As we are not as learned, as educated, as visionaries like researchers, we hardly know English. We have learnt English on vary later stage for very practical reason. But our expressions are not fluid. Still we are learning Bangla. Writing in English is a luxury today for us. And our target is not the learned persons, common person like us.
Joya Mitra asked us to write this in English. She is our one of the mentor. We obey our Guru.
Joy Guru! 
Joy Bnagla!

This is an unusual Bullock Cart. Picture Curtsy Illustrated London News. The bottom line says bullock hackneys for carrying grains.

The view of LOKFOLK and Kalaboti Mudra of this drawing is, this is one of the cart of those reminiscent era of Bengal, when this part of the world was the granary of the World. The Bengal Suba also used to produce most of the industrial products of the world. Businesspersons from all over Europe, Africa, Asia, America used to pay visit to this place to buy hundreds of industrial & firm produces. Bengal those days are a cosmopolitan world.
Before the 1757 Palasy(wrongly written Plassy) treachery of MirZafar with the help of the British WarLord Clive, Bengal was the centre of the earth. Various other places outside Bengal Subah developed a descent growth in material world, Bengal was the SARTAJ of them. Thus Europeans named their business houses as East India Company.

Saptagram became Box Port, described by the Portuguese, as uncounted boxes containing numerous goods items of Bengal were exported. To do business in Asia, the European need to carry bullions like gold, silver precious metals and stones. India(and Bengal) was then a surplus economy. 


It is also a fact that the historians are overwhelmingly researched sea-bound business of India, mostly with Europeans, rather than the chain of internal trade within India. And it is a fact that the external trade is a negligible portion of the internal produces of India. Which about only 10%. Naturally the rest 90% of the produces were marketed in Indian sub-continent. These produces need to carry to the various towns & villages. That's why the need of these type of heavy Bullock Cart came into exists. The boats used to be one of the best carriers of these bulk goods.

The Special Cart
But the Bullock Cart in the must head of this piece is a special one. I have traveled most of the parts of India & Bengal. I have seen various kinds of bullock goods carriage. I have studied lots carts in the old paintings also. But I have not seen these types of cart.


One can see the wheel first. This is heavier than any of bullock carts shown below. The wheel thickness of this cart is of 2-3 wheels joined together. It is one of the thickest of all the carts shown here. The Spokes are also thick and heavy so that it could hold the burden of excess weight of the carried goods in the muddiest village roads, may be in the rainy season also. There are 10 visible spokes. It is certain that there are more hidden behind the axle guard. Wheels are made of piece of wood, joined together. If one can watch minutely, can see atleast three visible joining points - two in upper portion, one touches at the road.

I have seen camel carts in the streets of outer Delhi carrying tonnes of grains from the hinterland of UP, Rajasthan, Hariyana, Punjab, Chandigarh. But these carts are fitted with small fat tires - smaller in radius than this. Does this a reminiscent of the bygone days of these thick wooden wheels?  I am not sure. But these now a day carts used to carry heap of grains. That's why it needs thick tires.


Then I will ask the reader to view the axle guarder of the cart. Still today I have not seen any axle guarder in any of the bullock carts any where in India. If any one sees please let me know. This is a thick solid (perhaps) wood log which attached with both the wheels fitted in two sides. In the middle of this log, there was also a thick pin, which seems attached with the wheel. This is a visibly square log with four hand. With these four hands, it carries the load of the goods.



these two are Delhi carts








Saturday, July 27, 2013

বিশ্বের কর্পোরেটিকরণই হল বিশ্বায়নের রাজনীতি৩, Politics of Globalization is Corporetaization of the World3

ইতিমধ্যে রবার্ট ম্যাকনামারার বিশ্ব বড় পুঁজি বিনিয়োগের দিকনিরদেশের নিয়ন্তা হিসেবে উত্থান ঘটল। আসলে পুঁজির যে সামরিকীকরণ ঘটছিল বিশ্বজুড়ে সম্পদ, বাজার দখলের লড়াইতে, সেখানে বড় পুঁজির একটি সামাজিক মুখ তৈরি করা জরুরি হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। সেই কাজটি অসম্ভব দক্ষতায় সম্পন্ন করতে পেরেছিলেন, বড় পুঁজির তাত্বিক এই মানুষটি। 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার সেনা বাহিনীতে বিমান দপ্তরের পূর্ব-এশিয়ায় বিশ্লেষকের চাকরি করেন ম্যাকনামারা। সেখান থেকে ফোরড মোটর কোম্পানির প্রধান। ফোরড পরিবারের বাইরে তিনিই একমাত্র ফোরড মটরসের ডিরেক্টর। ১৯৬০এ কেনেডি তাকে প্রতিরক্ষা সচিব করে সরকারি কাজে ফিরিয়ে আনেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকাকে জড়িয়ে ফেলএন ম্যাকনামারা। ভিয়েতনাম যুদ্ধের উত্তুঙ্গ সময়েই কেনেডির স্ত্রীর সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন তিনি বিশ্বব্যাঙ্ক প্রধানের চাকরিতে যান। ১৯৬৮ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন। 
তাঁর সময়ে বিশ্বব্যাংক প্রথম পুঁজি বিনিয়োগে দারিদ্র দূরীকরণকে অন্যতম শর্ত হিসেবে চিহ্নিত করে। তাঁর অন্যতম নীতি ছিল In order to do good, you may have to engage in evil আজকের বড় পুঁজির লব্জ, ইনক্লুসিভ গ্রোথ তত্বের(এই লব্জটি যদিও অনেক পরের তৈরি) সর্বপ্রথম প্রবক্তা তিনি। গরিবি হটাওকে ঘোমটা করে, বিশ্বে কর্পোরেট পুঁজি বিনিয়োগের, প্রযুক্তি প্রয়োগের নতুন দিশা নির্দেশ করেছিলেন ম্যাকনামারা। তিনি ফোরড কোম্পানির উৎপাদনের দর্শন ছড়িয়ে দিলেন বড় পুঁজি নির্ভর, সহজে লাভ কামানোর নানান উদ্যমে। কনভেয়ার বেল্ট নির্ভর শিল্প হিসেবে অন্যান্য শিল্প-সেবা পরকাঠামো দর্শন গড়ে উঠতে লাগল। সাধারণ কর্মীদের আরও বেশি বিনিয়োগ করে দক্ষ করে তোলার প্রয়োজন হল না। ফলে গাড়ি কারখানার ছাঁটাই শ্রমিককে কাজে লাগাতে পারল চট জলদি খাবার শিল্প বা স্বাস্থ্য শিল্প।
ভারত এই চক্রে ঢুকবে বহুকাল পরে, আইএমএফের অবসরকালীন ভাতাখাওয়া, এক প্রাক্তনীর হাত ধরে। এই আমলা, আটের দশকে সউথ-সউথ সমীক্ষা লিখে বামপন্থী জগতে ঝড় তুলে দিয়েছিলেন। তিনি মনমোহন সিং। ইন্দিরা পথের উল্টো দিকে ঘুরে রাজীব যে পথের সুচনা করেছিলেন, সেই পথকে মহাসড়কে পরিনত করবেন প্রথমে নরসিংহ-মনমোহন জুড়ি। নতুন সহস্রাব্দে মনমোহন-চিদাম্বরম-প্রণব-মন্টেক ঘোঁট তাকে পৌঁছে দেবেন নবতম উচ্চতায়। চক্ষুলজ্জাহীনভাবে ভারতে শুরু হবে কর্পোরেট বন্দন এবং তাকে যতটা পারা যায় সুবিধা দেওয়ার রাজনীতি।

এই বিশ্বায়নের রাজনীতির বলি হলেন ২২ লক্ষ তাঁতিসহ আরও আড়াই কোটি দক্ষ গ্রামীণ। ভারতে এখন প্রয়োজন অনেক শিল্প আর শহর গড়ার বেশি শ্রমিক। তাই পারম্পরিক শিল্প থেকে ছাঁটাই করে যত সম্ভব শিল্পীকে পরিকাঠামো শিল্পে জুড়ে দেওয়া যাবে, ভারত তত বেশি করপোরেটাইজেসনের দিকে এগোতে থাকবে। গ্রাম ধংস করে সহরীকরনের যে তত্ব আর দর্শন ভারত সরকার আর ভারতের রাজনৈতিক দলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখতে হবে এই বস্ত্র শিল্পীদের কমার ঘটনা। এর সঙ্গে জুড়েছে মিল মালিকদের স্বার্থ। মিল মালিকদের স্বার্থ আসলেতো কর্পোরেট স্বার্থ। আর এখন কর্পোরেট স্বার্থ দেখা সরকারের প্রাধান্য। দেশ জোড়া হাতে টানা তাঁতিদের সংগঠন নেই বললেই চলে। তাই সরকার এদের বাজেট বরাদ্দ বছরের শেষে কেটে মিল মালিকের জন্য ব্যয় করে। কেউ বলার নেই। শুধু বঙ্গীয় পারম্পরিক কারু ও বস্ত্র শিল্পী সঙ্ঘ ছাড়া। 

বিশ্বের কর্পোরেটিকরণই হল বিশ্বায়নের রাজনীতি২, Politics of Globalization is Corporetaization of the World2

দ্য ইকনমিক হিট ম্যান, ফাস্ট ফুড নেশন, ডেথ অ্যান্ড লাইফ অফ গ্রেট আমেরিকান সিটিজেরমত গবেষণা নির্ভর বইগুলোয় আমেরিকায় বড় পুঁজির কর্মক্ষেত্র হিসেবে মধ্যবিত্ত সমাজে মতামত তৈরির ছকের পথ দেখানো হয়েছে। আরও দেখানো হয়েছে ছোট পুঁজিকে গিলে খেয়ে, বহুত্ববাদকে ধংসকরে, একদেহী(মোনোলিথিক) তিমিঙ্গিল হয়ে ওঠার ইতিহাস। বলা যাক, ভারতের মধ্যবিত্তের স্বপ্নের দেশ আমেরিকাতেও এই উন্নয়ন খুব একটা পুরনো গল্প নয়। ঐতিহাসিকভাবে বিংশ শতকের শুরুর তিন-চার দশক আমেরিকা ছোট-মাঝারি পুঁজির দেশ ছিল। ইয়োরোপীয় কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর বিশ্বজোড়া লুঠ আর আধিপত্যে, আমেরিকার স্বাধীনতাকামীরা দেখেছিলেন, কোম্পানিগুলো কিভাবে দেশগুলিকে শোষণ করে, ছোট পুঁজি ধংস করে, বড় পুঁজি নিয়ন্ত্রিত ইয়োরোপীয় রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি করেছে। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেনের কব্জা থেকে আমেরিকাকে মুক্ত করে, বিশাল গণতান্ত্রিক দেশে, ছোট পুঁজি নির্ভর, ব্যক্তিগত উদ্যমে, পরস্পরের সঙ্গে মিলে মিশে চলার রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্ম দিলেন তাঁরা।
বড় পুঁজি, আমেরিকার সেই আর্থ-রাজনৈতিকভিত্তি ভেঙ্গেচুরে দিল, বিংশ শতকে চার, পাঁচ ছয়ের দশক থেকে। গোটা আমেরিকায় করপোরেটিকরনের উদ্যমের বুলডোজার, গুঁড়িয়ে দিল ছোট উদ্যমের পুঁজি। সরকারি মদতে এবং বিনিয়োগে হাইওয়ে তৈরি কোম্পানি, জটিল বৈদ্যুতিন প্রযুক্তি নির্ভর জুয়া খেলা কোম্পানি, মুফতে জমি নিয়ে বাড়ি তৈরির কোম্পানি, সিনেমা প্রযোজক, গণমাধ্যম কোম্পানি, গাড়ি কোম্পানি, বিশাল বিশাল খুচরো বাজার- যা পাইকারি বাজারের থেকেও বড়, চটজলদি খাওয়ার কোম্পানি, প্রতিরক্ষা উদ্যম, আণবিক কোম্পানি, বড় বাঁধ তৈরির কোম্পানি, স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিনিয়োগ আর অর্থ বিনিয়োগেরমত (ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিউসন) অন্যান্য হাজারো কর্পোরেট কোম্পানি, পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলাল নতুন ধরণের আমেরিকা(ভবিষ্যতে বিশ্ব) গড়ার জন্য। সরকারের নানান সুযোগ-সুবিধে কাজে লাগিয়ে, নতুন এক জীবনযাত্রা নির্ভর আমেরিকা গড়ায় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করল তারা। 
এই কাজে সফল হতে গেলে উদ্দেশ্যপুরনভাবে খতম করে দিতে হল আমেরিকার স্বাধীন মাঝারি, ছোট ছোট ব্যবসা। আমেরিকা সরকারের নানান পরিকল্পনায় তাত্বিক ইনপুট দিয়ে কর্পোরেট নির্ভর নতুন ধরণের আমেরিকা গড়ে তুলতে উদ্যমী হল বড় পুঁজি। যেখানে অসুবিধা, সেখানে বড় পুঁজি সরকারের নানান দপ্তরের সাহায্য নিয়ে, ছোট পুঁজির করপোরেটিকরণ করে ফেলল[যেমন করে ইয়োরোপ, আমেরিকা, পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে রাস্তার খাবার বিক্রি করা হকারদের করপোরেটাইজেসন সম্পন্ন হয়েছে। যেমন করে বাংলাদেশে সেলফ-হেল্প দল গড়ার নাম করে, বিশাল সংখ্যক গ্রামীণদের খুব খুব ছোট পুঁজি(বিশ্বেন্দু নন্দ আর পার্থ পঞ্চাধ্যায়ীর সম্পাদনায় “হকার কথা” বইটিতে সুতনু ভট্টাচার্যর প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য), বড় ব্যাঙ্কের আওতায় চলে এসেছে, যেমন করে, ছোট গলি, চার রাস্তায় রূপান্তরিত হয়ে হাইওয়ে নাম পেয়ে তার করপোরেটাইজেসন সম্পন্ন করেছে, যেমন করে পাড়ার ছোট ছোট ক্রেতার পুঁজি দখল করতে, এলাকা এলাকায় হাইপার মল তৈরি করে, ছোট বাজারকে ভাতে মেরে মধ্যবিত্তের করপোরেটাইজেসন সম্পন্ন হয়েছে]। বিনিয়োগে ব্যর্থ হলে চিরাচরিত রাষ্ট্রীয় বলপ্রয়োগের দাওয়াইতো রইলই। এই সময় থেকেই র‍্যাসনালাইজেসনের নামে, জোর করে নানান কোম্পানি অধিগ্রহনের উদ্যম শুরুহয়{এই দর্শনেই টাটা স্টিলের অবয়বের পাঁচগুণ বড় কোম্পানি, কোরাস দখল। নিন্দুকেরা প্রচার করে, টাটারা নাকি ঐতিহাসিকভাবে এশিয়ায় রথসচাইল্ড পরিবারের দালালি করত, আজও করে। তাদের হয়ে এখানে অন্যতম বিনিয়োগকারী হিসেবে কাজ করত তারা। টাটারা সেই কোন কালের আফিম ব্যবসার যুগ থেকে গাঁটছড়া বেঁধে রথসচাইল্ড পরিবারের আত্মীয়, সাসুন পরিবারের সঙ্গে মিলে হংকং আর বম্বে থেকে চিনে আফিম ব্যাবসা করত (টাটাদের আফিম ব্যবসায়  জুড়ে থাকার প্রমানের জন্য http://lokfolk.blogspot.in/search/label/%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%86%E0%A6%AB%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE দেখুন)। 
টাটাদের কোরাস দখলের মূল পরামর্শদাতা ছিল রথসচাইল্ডের একটি কোম্পানি (http://www.livemint.com/Money/CwRq6o0OEFoACetqnmUigM/NM-Rothschild-rides-into-India-on-a-Tata-SteelCorus-high.html পশ্য)। রথসচাইল্ডের সরাসরি মদত ছাড়া এত বিশাল পুঁজি জোগাড়, বিভিন্ন সরকার নমনীয় করে তেল খাওয়া মেশিনেরমত কর্মক্ষম করা, গোটা ইওরোপ-লাতিন আমেরিকা জুড়ে সরকারি মদতে জনমত গড়ে তোলার কাজ করা, শুধুমাত্র তুরুশ্চু টাটা কোম্পানির কম্ম ছিল না। কেননা অতিসাম্প্রতিক কর্পোরেট ইতিহাস বলে, টাটারা শুধু নিজেদেরই অযুত পরিমাণ সম্পদ নয় নয়, তৎকালীন বাংলা সরকারের, সিপিএম পার্টির সমস্ত রকম সম্পদ-সমর্থন সম্বল করে, দেশ-বিদেশের তাবড় সংবাদ মাধ্যমের বেনজির সমর্থন সত্ত্বেও, মাত্র ১০০০ একরের সিঙ্গুর প্রকল্প সামলাতে পারেনি। ল্যাজ গুটিয়ে বাংলা থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে কর্পোরেটদের বড় রাষ্ট্রীয় মদতদার, নরেন মোদীর বিপুল ভর্তুকির অরথনীতিতে। সংবাদ জগতের মদতে মুফতে কোটি কোটি টাকার মুফত প্রচার পেয়েও, বিশ্বের সবথেকে কম দামী চার চাকা মাসে ১০০০ও বিক্রি করতে পারে নি (লক্ষ্য বছরে ৩ লাখ+)। টেলিকম, বিমান ব্যবসা করতে গিয়ে বড় পুঁজির মদতদার ভারত সরকারকে প্রভাবিত করতে গিয়ে নাকানি চোবানি খেয়েছে। তারা একা করল কোরাস দখল! কয়েন না কয়েন না কত্তা! গোরায় হাসব! এইত বহু চর্চিত কর্পোরেটিয় দক্ষতার হাল। সরকারি মদত ছাড়া সব কর্পোরেটই বড় শূন্য।}। তো আমেরিকায় ছোট পুঁজির অগস্ত্যযাত্রা সম্পন্ন হল। ছোট পুঁজি ক্রমশঃ নির্ভর হয়ে পড়তে থাকে বড় পুঁজির ওপর। নইলে না মরে, টিমটিম করে বেঁচে থাকা। বড় পুঁজির কোম্পানিরা পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, বিশ্ব শোষণ করার, আরও বড় উদ্যম হয়ে ওঠার সমস্ত বাধা সরিয়ে দিতে থাকে।

বিশ্বের কর্পোরেটিকরণই হল বিশ্বায়নের রাজনীতি১, Politics of Globalization is Corporetaization of the World1

স্বাধীনতার পর থেকে ভারত সরকার বড় শিল্প বানাতে তার সমস্ত উদ্যম নিয়োজিত করল।  যদিও প্রথম পরিকল্পনায় কৃষিতে সরকারের বড় নজর ছিল। মহলানবিশ-নেহরু প্রনীত অর্থনীতির অগ্রগতিতে, বিগত ৬৫ বছরে ন্যুনতম ১০ কোটি আদিবাসী এবং গ্রামীণ শ্রমিক, কারিগর নিজের জমি, কাজ, শ্রম থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি উদ্যমের ঘাড়ে চেপে দখল হয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ। দখল হয়েছে স্থানীয় বাজার। ভারতের স্বাধীন সরকার গায়ের জোরে, বসতির পর বসতি উচ্ছেদ করে, জঙ্গল দখল করে, পুলিস মিলিটারি দিয়ে নিজের দেশের কারিগরি, শিল্পকে ধংস করে বড় পুঁজিকে যায়গা করে দিল। বৃটিশদের প্রবল অত্যাচার সয়ে গ্রামের ছোট উদ্যম যতটুকু বেঁচে ছিল, স্বাধীনতার পরে, সরকারি বিকাশ নীতিতে তা শেষ হয়ে যাওয়ার মুখে। সরকার এখন দয়া পরবশ হয়ে, গ্রামীণ কারু আর বস্ত্র শিল্পীদের সাহায্যের খুদকুঁড়ো দিচ্ছেন। কিন্তু আগামীদিনের আরও দুর্দশা থেকে বাঁচাবার উদ্যম নেই। ১৯৯৫-২০১০ এই পনের বছরে ভারতজুড়ে ২২ লক্ষেরও বেশি তাঁতি তাদের সাবেকি কাজ ছেড়েছেন। পরিবার ধরলে প্রায় ১ কোটি মানুষ। একটি তাঁতের সঙ্গে সরাসরি অন্তত ১০ জন প্রযুক্তিবিদ জুড়ে থাকেন। এই ২২ কোটি কাজ হারানোয় আরও আড়াই কোটি কারিগর বেকার হলেন। মোট চার কোটির কাছাকাছি মানুষ তাদের কাজ থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন - এটি সরকারি হিসেব, শুধু তাঁতেই। ১৯৮৪র রাজীব গান্ধির নয়া তন্তু নীতির পর পরই ভারতে যতটুকু দেশের প্রযুক্তি টিকেছিল, উচ্ছেদ করে, সরাসরি বিদেশি প্রযুক্তির হাতে দেশের প্রযুক্তির বাজারকে পুরোপুরি তুলে দেওয়া হল। ভারতের দেশিয় প্রযুক্তি ধংস করে বিদেশি প্রযুক্তি ডেকে আনার তাত্বিক বিষয়ে বিশদে আলোচনার জন্য http://lokfolk.blogspot.in/search/label/%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE  পোস্টটি দেখতে পারেন।
রাজীবের কাছা খোলা দর্শনটিকে আরও গভীর, দার্শনিক, বাস্তবিক রূপ দিল নয়ের দশকে নরসিংহ-মনমোহন সরকার। একদিকে দেশের সব কিছু ছেড়ে, বিদেশি উদ্যমে আস্থা পোষণ এবং অন্যদিকে আমেরিকার নির্দেশ মেনে সামাজিক নানানকাজ থেকে সরকার নিজের বিনিয়োগ এবং নিয়ন্ত্রণ আলগা করার  সময়ের শুরু। এর বিপরীতে বড় পুঁজিকে যথা সম্ভব সাহায্যের সক্রিয় আশ্বাস। কিছুটা ইয়োরোপ আর পুরোটা আমেরিকা বুকে পুষে ভারতের মধ্যউচ্চবিত্ত বেলাগাম শহরীকরন আর ভোগবাদপন্থায় বিশ্বাস রাখল। সরকারি স্বাস্থ্য, জনশিক্ষাসহ নানান সামাজিক উদ্যমে সরকারি বিনিয়োগ ক্রমশঃ কমতে শুরু করল। সরকারি-বেসরকারি গাঁটছড়া উদ্যমের নামে সরকার নানান প্রকল্পে নিজেদের বিযুক্ত করতে শুরু করল। লাভ বড় পুঁজির বিনিয়োগকারীদের সিন্দুকে ঢুকত। ক্ষতি দায় সরকারের অর্থাৎ জনগণের।
সামাজিক দায়িত্ব ভুলে বড় পুঁজির প্রভাবে ন্যুনতম শাসনের দর্শন ক্রমশঃ থানা গাড়ল। নয়ের দশকের আগের সরকারগুলি ঘোমটা পরে বড় পুঁজির দাসত্ব করেছে। কিন্তু বাঁ হাতে হলেও কিছুটা সম্পদ সামাজিক খাতে ব্যয় করতে হত। নরসিংহ রাও সরকারের পর থেকে প্রায় সব ভারত সরকারই চক্ষুলজ্জাহীনভাবে বড় পুঁজির তরফদারি করা শুরু করল। বড় পুঁজি নানান আর্থিক সাহায্য এবং কর ছাড় পেল। বিপদে পড়লে এদের উদ্ধারে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে এল সরকার। সরকার আর বড় পুঁজি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাথে হাত মিলিয়ে এমন এক পরিবেশ তৈরি করার কাজ শুরু হল, যাতে দেশের মধ্যবিত্তের মনে হয় (যাদের একাংশ সরকারি-বেসরকারি আমলাতন্ত্র। এদের উদ্যোগে বিশ্ব বড় পুঁজি, ভারতের অধরা বাজার ধরার কাজ করতে শুরু করেছে। সরকারি স্তরেও বলা হচ্ছে অত্যধিক মুনাফা করা দারশনিকভাবে খুব খারাপ কাজ নয়। বরং কয়লা, তেল, ব্যাঙ্ক ইত্যাদির জাতীয় করণ করার চেষ্টাটাই পিছিয়ে পড়া চিন্তা) বড় পুঁজি আর বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া ভারত বিকাশের গতি নেই। কর্পোরেট জগতের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়ার সওয়াল একের পর এক বাস্তবায়িত হওয়া শুরু হয় আমলাদের উদ্যমে। রাজনৈতিক ঐক্যমত্য তৈরি করা হয়। বড় পুঁজির সেবাদাস মধ্যবিত্তরা মুক্ত কচ্ছ হয়ে বড় পুঁজির পদ লেহন শুরু করে।
বিশ্বে এ ধরণের ঘটনাক্রম খুব নতুন অভিজ্ঞতা নয়। ভারত এই খেলায় নতুন। এশিয়া, ইয়োরোপ আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলিতে ঠিক যেমনভাবে উন্নয়ন ঘটেছিল সেই পথ ধরল ভারত সরকার। কেননা বড় ব্যবসা, বড় পুঁজি সরকারি সাহায্য ছাড়া বাড়তে পারে না। এটি ঐতিহাসিক সত্য। ভারতের উচ্চমধ্যবিত্ত সেই ভাঙ্গা পথে চলতে চাইছে। আমরা দেখেছি, এই কর্পোরেট নীতিতে দেশ চালাতে গিয়ে একের পর এক দেশ মুখ থুবড়ে পড়েছে। জার্মানি থেকে গ্রিস থেকে ব্রাজিল থেকে ইন্দোনেশিয়া সকলেই আজ নতুন ভোরের অপেক্ষায়। বড় পুঁজির চাপ রয়েছে। কিন্তু পুরনো পথ ছাড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। উচ্চমধ্যবিত্ত ভারত আজ দাঁড়িয়ে সেই ফেলে আসা ভাঙ্গাচোরা পথে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে। 

Friday, July 26, 2013

Chitradurga Deputy Commissioner Office Swarmed by Hundreds of Villagers and Thousands of Sheep Protest against illegal diversion of Grasslands intensifies

অনেকেরই মনে থাকবে, কয়েক দিন আগে চিত্রদুরগে ভারত সরকারের জমি দখল নিয়ে একটা পোষ্ট লিখেছিলাম http://lokfolk.blogspot.in/2013/06/report-submitted-to-expert.html
তারাই আবার একটা নতুন খবর পাঠিয়েছেন।
তুলেদিলাম।


ress Release : 25 July, 2013
Amrithmahal Kaval Hitharakshana Vedike

● Over 1,000 people gather along with 4,000 sheep protest against handing over of Amrithmahal Kavals to DRDO, IISC, BARC and other institutes
● Noted Writer Banjagere Jayaprakash and others address the rally and condemn the government’s move in illegally diverting Amrithmahal Kavals
● Residents of 80 villages threaten to boycott Lok Sabha polls if illegal diversion of Amrithmahal Kavals not reversed
● Memorandum submitted to DC highlighting severe impacts on rural life and asking for their rightful access to Kavals to be restored
● DC assures that until the cases are settled in the court, access to grazing, water and other needs in the Kavals will be reinstated

Background

The massive diversion of around 10,000 acres of Amrithmahal Kavals in Challakere Taluk in Chitradurga District for a variety of industrial, defence, institutional and infrastructure developments by the Deputy Commissioner of Chitradurga since 2009 has caused widespread concern. The diversion has caused agony to thousands of pastoral and farming families dependent on the Kavals for their livelihoods, as various beneficiaries of land have begun project activities by building high walls and thus blocking access to the Kavals. These developments have been challenged before the Hon'ble High Court of Karnataka and the Hon'ble National Green Tribunal (Southern Zone).

Massive Rally taken out in Chitradurga

The struggle to preserve the Amritmahal Kavals in Chitradurga has intensified. Earlier this morning 1000 people from about 80 villages dependent on the Kavals for their livelihoods took out a rally under the "Bruhat Kurigala Pratibhatane" banner from the Government Science College to the DC's office in ChitradurgaIn an unusual display of dissent, the shepherding communities brought along with them about 4,000 sheep for the protest reiterating the heavy dependence on livestock rearing in this region and the impact of cutting off access to the grazing lands crucial for their livelihoods.

Addressing the rally, noted author Banjagere Jayaprakash said that the State and Central Governments should reconsider the decision of diverting the Kavals and should take necessary steps to restore access for the communities. He said that the manner in which the lands have been given away has resulted in gross injustice.

Meese Mahalingappa, ZP member and President of the Nomadic Shepherds Association said that the struggle to preserve the Kavals will intensify until they get the Kavals back. Karianna GP member from Dodda Ullarthi said that false documents have been submitted in the court and previous court rulings have been flouted to approve these projects. He said the the officials guilty of this should be immediately suspended. He also said that the people will continue to fight for what is rightfully theirs and the Government will be responsible for the unrest.

Muruga Rajendra said Aditya Amlan Biswas, the ex-DC of Chitradurga who had falsely submitted facts in favour of the project should be suspended. According to the 73rd amendment of the constitution, the Gram Sabhas should have been consulted and their approval sought before giving away the Kavals and the DC is guilty of flouting this. He also said that the region has been suffering from prolonged drought and the people are heavily dependent on livestock-rearing. In the absence of alternatives, the struggle to secure the grazing lands will only intensify in the future.

Nilkantha Mama, an elderly nomadic shepherd from Belgaum also addressed the gathering. He said he has grazed his sheep in these kavals and has seen that they are rich in medicinal plant wealth. There are also several fruits and tubers that they would eat while grazing their sheep and he attributes his good health and the longevity of his ancestors to these foods. He extended his support for the campaign and said these kavals are crucial for their survival. Women from Dodda Ullarthi and Molakalmuru sang songs on the Kavals.

The rally concluded with a submission of a memorandum to the DC, Chitradurga. The DC accepted the memorandum from the people and assured that until the court orders are passed, access to the Kavals will be restored. He also said that no other Kavals in the district will be given away for development projects in the future. He assured that goshalas will be set up in order to address the growing fodder crisis.

Some of the main points of the memorandum were:
* With the fodder prices sky-rocketing, and access to kavals cut off, they are unable to either maintain or sell off their livestock and are in a desperate situation.
* About 70 of the Devara Danahave been lost
* The state has flouted the forest conservation laws, violated human rights and the 73rd amendment of the constitution making a mockery of democracy
* All the beneficiaries have begun work without obtaining any environmental clearances. By constructing high walls, they are restricting the movements of people, livestock and even wild animals, thus taking away their right to life
* It is inhuman that the decision makers take decisions for the villages and kavals from their airconditioned rooms without even visiting them
* If the government does not intervene and does not provide immediate relief, the affected 80 villages will boycott the upcoming LS elections and the government will be responsible for the resulting chaos

The organizations which participated in the protests are – Karntaka Raita Sangha; Mahila Samakhya; Janamukhi Sanghatane, Chitradurga; Alemari Budakattu Mahasabha, Bangalore; Jilla Gollara Sangha, Chitradurga; Karnataka Banjara Janajagruti Abhiyana Samiti, Chitradurga; Chitradurga Jilla Valmiki Sanghatane; Satyameva Jayate Yuvaraksha Sangha; Chitradurga Jilla Pinjara Janajagruti Abhiyana Samiti; Jilla Kurubara Sangha Neeravari Horata Samiti; Bayaluseeme Grameena Abhivruddhi Samsthe; All India Kisan Sabha.


For more details contact:
Manohar - 9008729784
Karianna - 9900954664

1 The local communities rear native varieties such as Amruthmahal and Hallikar, another indigenous breed of cattle and crossbreeds of these. These pure breeds are known as “Devara Dhana” or “God’s cattle”. The females of these cattle are never given away; only the male calf is given away. This is done to preserve the breed purity. The families, which take care of the'Devara dhana' have been doing so for generations. They graze the 'Devara dhana' in these Kavals. These families are custodians of genetic diversity of some of the last remaining pure breeds. Pertinently, after the diversion of these Kavals, the population of these Devara Dhana cattle have significantly reduced, due to the lack of grazing space.

Photo credits: : Vivek Muthuramalingam, drvivekm@gmail.com, 9845560465