Wednesday, April 24, 2013

দই খেলেন গোবর্ধন, বিকারের বেলায় হর্ষবর্ধন - ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের লুঠ, রেলপথ এবং মন্বন্তরনামা বা গণহত্যা৩ - loot, railway, famine, genocide in colonial india3


অবাধ রপ্তানির ফলে দামও অবাধে বেড়েচলে। তার ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।  টাকার দাম কমিয়ে দেওয়া হোল(অবমূল্যায়ন) ব্রিটিশদের ভারতীয় শস্য কেনা আরও সস্তা হয়ে গেল। আরও পরিহাসের কথা, যে রেলপথটি তৈরিই হয়েছিল মন্বন্তর রোখার জন্য সেতো মন্বন্তর রুখলই না, বরং যে স্টেশনের নামে রেলপথ, সেই নাগপুরেই ১৮৯৬-৯৭র মাঝামাঝি নাগাদ খাদ্যশস্যর জন্য দাঙ্গা হল। পাশের রাজ্য ডুঙগারগঢ়ে শাস্তির হুমকি আর সেনা নামিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া হয়। এই রেলপথেরই পাশে সাগর জেলায় ঊল্টো পুরাণ- ১৮৬৫-৯৫ পর্যন্ত জনসংখ্যা বাড়ল ১৮ শতাংশ, চাষযোগ্য জমির পরিমাণ বাড়ল ৪৮ শতাংশ, রেলযোগে গম রপ্তানির পরিমাণ, ১৮৮৭-৯৭, এই এক দশকে, ৪০,০০০ মণ থেকে ৭,৫৮,০০০ মণে গিয়ে পৌঁছল। 
মন্বন্তর ফান্ডের সুযোগ পাওয়া অন্য রেলপথটি কী করল দেখা যাক ইন্ডিয়ান মিডলাণ্ড রেলওয়ে কোম্পানির ঘাড়ে চেপে বোম্বাইয়ের গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়ে(জিআইপিআর) নিজেদের রেলপথ এলাকা আরও বিস্তারলাভ করাবার সুযোগ পেল।  দুটি রেল কোম্পানির পরিচালন ব্যব্যস্থা প্রায় সমান সমান। ফলে জিআইপিআর, মিডলাণ্ডকে দখলে নিল। ভারতে রেল ব্যবসার জিআইপিআরএর প্রধান প্রতিযোগী ইস্ট ইণ্ডিয়ান রেলওয়ে। কোম্পানিটি বেসরকারি কিন্তু সরকারি মদত পুষ্ট। সরকারের গ্যারান্টি তার রয়েছে। ১৮৭০এ রেলের জাতীয়করণ হাওয়ার সময় ইণ্ডিয়া অফিস জিআইপিআরএর শেয়ার কেনেনি। ফলে পরের ২৫ বছর রেলপথটির রোজগার, ভারত সরকারের সামনে, উপভোগ করেছে জিআইপিআরএর অংশিদারেরাফেমিন কমিশনের সামনে সাক্ষীরা বলেছেন, মন্বন্তরের সময় জিআইপিআর অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করেছে। তার জন্য কমিশন জিআইপিআরকে সমালোচনাও করেছে। এতদিন যে জিআইপিআরএর ডাইরেকটরেরা ৫ শতাংশ গ্যারান্টি ভোগ করে এসেছে, তারাই, মিডলাণ্ড কোম্পানির ঘাড়ে চেপে ফেমিণ ফাণ্ডএর সুযোগ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করল।
অন্যদিকে কলকাতায় ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের জাতীয়করণএর গুনাগার দিল ভারতীয় করদাতারা। ইআইআরএর অংশীদারদের সরকারকে দিতে হল মূলের ওপর ৩০ শতাংশ বেশী এছাড়াও বছরে বছরে লভ্যাংশএর অংশীদারি।  ১৮৮০র ফেমীন কমিশনের প্রধান স্যর রিচার্ড স্ট্রাচি, রেল কোম্পানিটির প্রধান মনোনীত হয়ে বছরে বছরে বিশাল অংশ এন্যুইটি, বার্ষিক রোজগার অর্জন করেন। আমলা হিসেবে চাকরি করে যে পেনসনের খুদকুঁড়ো অর্জন করেছেন, তার তুলনায় এই এন্যুইটির পরিমান প্রায় পাহাড় প্রমাণ। স্ট্রাচির ইআইআরএর দায়িত্ব ছিল খাদ্যশস্য বিতরণের। বেঙ্গল নাগপুর রেলপথের সঙ্গে মিলে তারা খাদ্যশস্যএর সঙ্গে কয়লার ব্যবসা শুরু করে। তবে স্ট্রাচি বলেন, তার কোম্পানি, লন্ডনের ফেমিন রিলিফ চ্যারিটিতে বিন্দুমাত্র অংশগ্রহণ করে নি।
রেল কোম্পানিতে অপরিকল্পিত বিনিয়োগও হয়েছে। আসামের বেশ কিছু অলাভজনক বেসরকারি রেল প্রকল্পে সরকারি গ্যারান্টি যোগাড় করেন স্ট্রাচি। আসাম বাঙলা রেলওয়ে তৈরি হয় চট্টগ্রাম বন্দর ব্যাবহার, আসামে খাদ্য বিতরণ আর বার্মায় সেনা পাঠানোর জন্য। রমেশ দত্ত একে সব থেকে খারাপ পুঁজিবাদী পরিকল্পনাগুলির মধ্যে সর্বাগ্রে রাখার কথা বলেন। কার্জন একে মন্বন্তর, সামরিক পরিকল্পনা ও ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সুচতুর ককটেল হিসেবে মন্তব্য করেন। এই প্রকল্পটিতে ভারতের করদাতাদের ৯ মিলিয়ন(তৈরির খরচ ৫ মিলিয়ন) ডলার খরচ হয়। এই রেলপথ তৈরিতে সবথেকে বেশি লাভ করেছেন ব্রিটেনের কারখানা মালিক আর ভারতের ফড়েরা। তিনি বলছেন ব্রিটেন থেকে যত পরিমাণ রেল যন্ত্রাংশ এসেছে, তার তুলনায় সেচের সরঞ্জাম এসেছে বিন্দুবৎ। এছাড়াও সাম্রাজ্যের পরিচালকরাও সেচ ব্যবস্থায় বিনিয়োগের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন। ভারত সচিব, পরে প্রধানমন্ত্রী, সলিসবেরি ব্রাডফোর্ডে ১৮৭৬-৭৮এর মন্বন্তরের সময়, এক সভায় বলেন, ভারতে সেচ ব্যবস্থা বিনিয়োগ করার অর্থ গরীব অর্থ করদাতাদের ওপর আরও বেশী কর আর খরচের বোঝা চাপানো। ফলে দারিদ্র আরও বৃদ্ধি পাবে। উল্টোদিকে তিনি এত কঠিন কথা রেল বাজেট তৈরির সময় বলেন নি। বরং তিনি ভারতের কৃষকদের উপদেশ দিয়ে বলেছেন, তারা বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদন না করে খাদ্য শস্য উৎপাদন করুক যাতে কৃষক মহাজনের শোষণের হাত থেকে মুক্তি পায়। এবং তিনি বলেন কৃষকের কাছে এটি একটি বীমাও বটে। অথচ মন্বন্তর রোখার নামে ভারতীয় রেল তৈরি করেছে ফড়ে, মহাজন, বাণিজ্য চাষ এবং শস্য বণিকদের। এমনকি ম্যানচেস্টারের মিলমালিক এবং কোয়েকার দর্শনে বিশ্বাসী জন ব্রাইট ১৮৭৭এ বলছেন মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করলেই, মন্বন্তরে ভোগা লাখো লাখো কৃষক উপকৃত হতে পারত। ঠিক এর আগের বছরে ব্রিটিশ উপনিবেশ রেলে ১৬০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করলেও সেচে বিনিয়োগ হয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার।
রেলে বিনিয়োগ এই ধারণা থেকে করা হয়েছে যে, ভারতের মন্বন্তর খাদ্যশস্যের অপ্রতুলতার দরুন হয় নি, হয়েছে এলাকায় খাদ্য শস্য না পাওয়া যাওয়ার জন্য। ফলে ভারতে খাদ্যশস্যের চলাচল হওয়া ভীষণ জরুরী। তার জন্য রেল। ভারতীয় রেলের এক প্রাক্তন পরামর্শদাতা, হোরেশ বেল এই সাম্রাজ্য তত্ত্ব খারিজের জন্য কোমর বাঁধেন। তিনি ১৮৯৮এর ফেমিন কমিশনের তথ্য তুলে বলছেন, সাম্রাজ্যে ১৮৯৬-৯৭তে ১৮-১৯ মিলিয়ন টনের মতো খাদ্য শস্যের অভাব রয়েছে। মন দিয়ে খুঁজলে ১৮৯৮-১৯০০র মন্বন্তরে হয়ত আরও বেশী ঘাটতির খবর পাওয়া যেতেপারে।
মন্বন্তর রুখতে সরকারের প্রয়োজন ছিল আরও বেশী খাদ্য শস্য আমদানি করা। শুধু রেল তৈরি করে অথবা দাম নিয়ন্ত্রণ করে মন্বন্তর রোখা সম্ভব নয়। আর মন্বন্তরে দান শস্যর দাম বেশী হলেও স্থানীয় শস্য ব্যাবসায়ীরা এই শস্য নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন নি, কেনোনা, প্রায় সবই বিদেশে চড়া দামে রপ্তানি হয়ে যাচ্ছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে একমাত্র বার্মাতেই মন্বন্তরে ভর্তুকির দামে খাবার দেওয়ার  সুযোগ ছিল। কিন্তু খাদ্যশস্যের দাম আর পরিবহন খরচের দরুন সেটা হয়ে ওঠে নি। বার্মার রেলে আকাশ ছোঁয়া ভর্তুকি দিয়েও খাদ্য দ্রব্যের দাম কমিয়ে রাখা যায় নি। অন্যভাবে বললে, মন্বন্তরে লাভ করে, ফুলে ফেঁপে উঠেছে রেল কোম্পানিগুলো। ১৮৯৬-৯৭ সালের মন্বন্তরে মেইকটিলা-মিনগিয়ান রেলপথ, বর্মার মন্বন্তর বরাদ্দের ৯৫ শতাংশ খাদ্যসশ্য রপ্তানি করে। বার্মার প্রশাসকেরা এই রেলজালের মাধ্যমে ইউরোপে আরও বেশি দামে গম পাঠাতে সুরু করেন। বার্মা রেলওয়ে কম্পানির জন্য সস্তার শ্রমিক, আরও লাভের গ্যারান্টি আর মন্বন্তর ভর্তুকি দিয়েও কোম্পানির লাভ বাড়লেও জনগণের মন্বন্তরের কবলে পড়ে।
সরকারি মদতে, করদাতাদের অর্থে তৈরি হয়ে ফুলে ফেঁপে ওঠা এই রেল কোম্পানিগুলো, মন্বন্তরের সময়, মন্বন্তর এলাকাগুলোয় সস্তার খাদ্যশস্য সরবরাহ করতে ব্যার্থ হয়েছে। গম পরিবহনএর শুল্ক বেশ চড়া ছিল, বিশেষ করে আমেরিকারমত যেসব দেশে গম রপ্তানি হয়েছে, তার তুলনায়। রয়্যাল এগ্রিকালচারাল কমিশন সস্তায়, প্রতি মাইলে ২৫ পেনি শুল্কে গম পরিবহনের জন্য আমেরিকার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানায়। ভারতের শুল্ক এর তুলনায় অনেক বেশি ছিল, বিশেষ করে জিআইপিআর অথবা ইআইআর রেলপথে। সরকারি প্রচেষ্টায় পরিবহন শুল্ক কমলেও তাও আমেরিকার তুলনায় অনেক বেশি। আর এই পরিবহন ব্যাবস্থায় মধ্যসত্ত্বভোগীদের সংখ্যা বাড়ায় খরচও বেড়ে চলে।
 ১৮৭৫-১৯১৪ সময়ে ১ কোটি ৬০ লক্ষ ভারতীয় মন্বন্তরের কবলে পড়ে মারা যান। অন্যভাবে বললে তাদের খুন করা হয়, এটি আসলে গণহত্যাই। মন্বন্তর বলা আসলে ভাবের ঘরে চুরি। ব্রিটিশ অর্থ ব্যবস্থাকে মন্বন্তরের ছোঁয়ার বাইরে রাখার চেষ্টা হয়েছিল ইন্ডিয়া অফিস মারফৎ, যাতে তৃতীয় দুনিয়ার এসব খারাপ সারাপ ব্যাপারে তাদের নাম উঠে না আসে। ১৮৯৬-৯৭ এবং ১৮৯৯-১৯০০ অর্থবর্ষে ব্রিটেন, ইন্ডিয়া অফিসকে মন্বন্তরের জন্য দান দিতে চাইলেও ভারত সরকার সেই দান নিতে অস্বীকার করে। বিদেশী বা ভারতের কোনও মন্বন্তর সাহায্য নেওয়া হয় নি। অথচ, মন্বন্তর রোখার অর্থ বিনিয়োগ করে ভারত জুড়ে রেল সংযোগ বেড়ে চললেও, সেই কোম্পানিগুলো মন্বন্তর রোখার কাজে বিন্দুমাত্র সাহায্য করে নি, বরং প্রকোপ বাড়াবার কাজ করেছে। দ্বিতীয়বারের জন্য রেল কোম্পানিগুলোকে অর্থ সাহায্য করার সময়, ভারত সরকার রেল আমলাদের মন্বন্তর তৈরির জন্য বিন্দুমাত্র দায়ি করে নি, এবং যে তিনটি ফামিন কমিশন তৈরি হয়, তারাও রেল আমলাদের প্রশ্ন করে নি।
সাম্রাজ্য মনে করত ভারতএর জনগন নিজেদের দোষেই মারাযাচ্ছে। এই ঘটনায় ব্রিটেনএর বিন্দুমাত্র হাত নেই। ভারতের জনঘনত্ব এই মন্বন্তরগুলোর জন্য দায়ি, এরকম এক ধারনা ইউরোপ ছড়িয়ে ছিল। যেমন, ম্যালথাসবাদী ভাইসরয় লিটন। তিনি মনে করতেন ভারতই তার দুর্দশার জন্য দায়ি, The population of this country is still almost wholly dependent upon agriculture. It is a population which, in some parts of India, under the security for life which are the general consequence of British rule, has a tendency to increase more rapidly than the food it raises from the soil.
ভারতের বিশিল্পায়নের অন্যতম কারবারি, উপনিবেশিক রেল ভারতের জনগণকে আরও বেশি জমির ওপর নির্ভরশীল করে তোলে। ১৮৯৮-১৯০০র পরে অনেক বেশি বিনিয়োগ সেচ ব্যাবস্থায় বরাদ্দ হয়। কিন্তু রেল কোম্পানিগুলোকে আরও সাহায্যের নীতি আরও বেশি আঁকড়ে ধরছিল, যার লাভ সুদে আসলে উসুল করেছে কোম্পানিগুলোর লন্ডনের বোর্ড সদস্য আর অংশিদারেরা। এ ছাড়াও লাভ করেছেন শস্য ব্যাবসায়ী, মজুতদার, মহাজনেরমত মধ্যসত্তভোগীরা। 

দই খেলেন গোবর্ধন, বিকারের বেলায় হর্ষবর্ধন - ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের লুঠ, রেলপথ এবং মন্বন্তরনামা বা গণহত্যা২ - loot, railway, famine, genocide in colonial india2


ব্রিটিশরা বরাবরই বোঝাবার চেষ্টা করেছে, মন্বন্তর রুখতে রেলপথ দাওয়াইয়ের জুড়ি নেই। দাদাভাই নৌরজী এই তত্ত্ব সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। জুল্যান্দ দানভারস, ভারত অফিসের পাব্লিক ওয়ার্কস দপ্তরের সদস্য, নৌরজিকে এক চিঠি লিখে বলেন, রেলের দরুন নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি হচ্ছে, দানা শস্যের দাম বাড়ছে। তিনি পরিসংখ্যানের হিসেব দেখিয়ে বলেন, এই বাড়তি দাম ভারতের জাতীয় আয় বাড়াতে সাহায্য করছে। এই পরিসংখ্যানের যাদুবিদ্যাকে নস্যাৎ করে নৌরোজী বলেন, if the mere movement of produce can add to the existing wealth, India can become rich in no time. All it would have to do is to go on moving its produce continually.. .the magic wheels of the train wealth will go on springing till the land will not suffice to hold it. বাজার অর্থনীতির সূত্রে জাতীয় আয় বাড়ার সংবাদের মরীচিকায় ক্ষমতার কাছে থাকা অর্থনীতিবিদের দেহে রক্ত চলাচল বাড়তে পারে, কিন্তু সাধারণের আয় আরও কমে, ফড়েদের আর শিল্পপতিদের ব্যাঙ্ক ব্যাল্যান্স বাড়ায় সেই তত্ত্ব সাধারণ মানুষ জানে।
তবুও রেলকথা শেষ হয় না। ভাইসরয়এর পাবলিক একাউন্টস কমিটির সদস্য স্যর থিওডর হোপ, ১৮৮০র দশকে ভারতীয় করদাতাদের অর্থকে আরও কাজে লাগাতে অতি উতসাহে রেলপথে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এলেন। তিনি রেলকে মন্বন্তর(না গণহত্যা)এর সমাধান আর সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে দেখলেন। হোপ, লুই ম্যালে(Louis Mallet), এবং হোপএর গুরু ইভিলিন বারিং(Evelyn Baring) মন্বন্তরের জন্য তৈরি চ্যারিটেবল ফেমিন ইন্সিওরেন্সের অর্থ সম্পদ, সরকারের দেওয়া আর্থিক নিরাপত্তার চাদরে মোড়া রেল কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগের কথা বলেন। কয়েকটি কেন্দ্রিয় প্রদেশ উনবিংশ শতকের শেষ দিকে মন্বন্তরে প্রায় উজাড় হয়ে যেতে বসে। ১৮৮৬তে লন্ডনের ষ্টক বাজারে দ্য বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ের ষ্টক ছাড়া হয়। অংশিদেরেরা সরকারের গ্যারান্টি পেলেন এবং কর্তৃপক্ষ ভারতীয় করদাতাদের অর্থে তৈরি মন্বন্তর নিরোধের জন্য তৈরি চ্যারিটেবল ফেমিন ইন্সিওরেন্সের সাহায্য পেলেন। ১৮৭৮এ রক্ষণশীল ভাইসরয়, লর্ড লিটন, এই চ্যারিটেবল ফেমিন ফান্ড স্থাপন করেন। এর উদেশ্য ছিল যারা এই ফান্ড থেকে সাহায্য পেলেন তারা মন্বন্তরে সাহায্য করবেন। গরীব চাষিদের থেকে বাধ্যতামুলকভাবে খাজনা নেওয়া হয়।
১৮৮৫তে প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের বাবা, ভারত সচিব, রান্দলফ চার্চিল(ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের অংশিদার – গবেষকরা বলেন যারাই ভারত সচিব হয়েছেন তাদের অধিকাংশই বদমাশ কম্পানি আর ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের অংশিদার, রথসচাইলড পরিবারের অনুগত, চার্চিলরা বংশপরম্পরায় ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের অংশিদার ছিলেন, ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ১৯৯৭তে পরিপুর্ণ সরকারি ব্যাঙ্ক হিসেবে গন্য হল), এই ফান্ড, বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে আর ইন্ডিয়ান মিডল্যাণ্ড রেলওয়ে কোম্পানিতে বন্ড আর ডিভিডেন্ডে বিনিয়োগ করেন। বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে রথসচাইলড পরিবারের(বকলমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সবথেকে বড় অংশিদার। বিশ্বেন্দুর লেখা বদমাশ কোম্পানি দেখতে পারেন) উদ্যম। উনবিংশ শতকের প্রকল্পগুলি ধরলে, এই একটিমাত্র প্রকল্প, যেটিতে সবথেকে বেশী পরিমান সম্পদ বিনিয়োগ হয়েছে। এই প্রকল্পে বিভিন্ন রেল মালিক, প্রাক্তন সরকারি আমলা, পার্লামেন্টের সদস্য বিনিয়োগ করে। তবে মন্বন্তরএর জন্য সরিয়ে রাখা অর্থ ভুল ব্যাবহারের জন্য অন্য দুই প্রধান সাম্রাজ্য পুরুষ ভাইসরয় কার্জন এবং ভারত সচিব লর্ড হামিলতন চার্চিলএর সমালোচনা করেন।
১৮৯০তে রেলপথ তৈরি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ধরে নেওয়া হোল এই কেন্দ্রিয় অঞ্চলগুলোর অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে আর সবথেকে বড় কথা মন্বন্তর রোখা যাবে। ব্যাবসার মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছিল কিনা তা না বলা গেলেও, বিভিন্ন শুল্ক, কর আর খাজনার পরিমান যে বৃদ্ধি পেয়েছিল, ১৮৯৮এর ফেমিন কমিশনের সাক্ষ্যতে বহু মানুষ উল্লেখ করেছেন। রেলওয়ে সবথেকে বড়ও যে কাজটি করেছিল সেটি হল এই অঞ্চলগুলো থেকে খাদ্যশস্যএর ব্যাপক হারে বিদেশে রপ্তানি হওয়া। খাদ্য শস্যর দাম ৫০ থেকে ১০০ গুণ বাড়ল। সম্বলপুরের মত এলাকায় এত দাম বাড়ে যে সাধারণ মানুষের চাল-গমও কেনার ক্ষমতা লোপ পেয়ে যায়। কিন্তু শস্য রপ্তানি বন্ধ হয় নি বরং মন্বন্তরের সময় সেই পরিমান বেড়েছে। অথচ বেঙ্গল নাগপুর লাইন তৈরি হয়েছিল মন্বন্তর রোধ করার জন্য সেই লাইন অবলম্বন করে মন্বন্তর এলাকাগুলো থেকে শস্য রপ্তানি হচ্ছে অবাধে, মুক্ত বাণিজ্যের বন্ধু সরকার সেই চেষ্টায় বাধা দেয় নি
যদিও গবেষকেদের আজও ধারনা রয়েছে ভারত সরকার ভারতের জনগণের জন্য কাজ করতে বাধ্য। কেন ধারনা করেছিলেন কে জানে! স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে(বা পরেও ঘোমটা পালটালেও চরিত্র যে পাল্টায় নি তাতো দেখাই যাচ্ছে) যে সরকার তাকে ভুলে ভারত সরকার বলা হত ঠিকই, কিন্তু তার সত্যিকারের কাজ ছিল ব্রিটেনের স্বার্থ দেখা। সে কেন ভারতের জনগণের স্বার্থ দেখবে? ভারত সরকারতো কথার কথামাত্র।

দই খেলেন গোবর্ধন, বিকারের বেলায় হর্ষবর্ধন - ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের লুঠ, রেলপথ এবং মন্বন্তরনামা বা গণহত্যা১ - loot, railway, famine, genocide in colonial india1

ভারতবর্ষে ১৯০বছরের রাজত্ব চালাতে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য একটি পেনিও খরচ করে নি। সাম্রাজ্যের নীতি ছিল, শুধু ভারতের প্রশাসনএর খরচ তোলাই নয়, ব্রিটেনে হোয়াইটহল চালানো, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগএর খরচ, বিশাল সেনাবাহিনী পুষে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ চালানো, লুঠের সম্পদে ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লব এবং সেই দৈত্যসম কারখানাগুলোতে অপরিসীম পরিমানে কাঁচামাল সরবরাহ করা এবং সেই কাঁচামাল ব্যাবহার করে যে উতপন্ন দ্রব্য তৈরি হবে, তাকে আবার উপনিবেশের বাজারে এনে বিক্রি করার পরিকাঠামো তৈরির খরচ বহন করবে ভারতেরমত প্রধান উপনিবেশগুলি এবং সেই জন্য ভারতে লুঠের ফলে অর্জিত বিপুল বিনিয়োগে বিস্তৃত রেলপথ তৈরির পরিকল্পনা, ব্রিটিশের ধ্রুপদী উপনিবেশিক অর্থনীতির অন্যতম অঙ্গ এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সবথেকে বড়ও বিদেশী বিনিয়োগের প্রকল্প।

১৯১৪ পর্যন্ত ভারতে রেল রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই বিনিয়োগের অর্থ ১৭৫৭ থেকে ভারত লুঠের অর্থে সঞ্চিত হয়েছে। ১৮৬৯ পর্যন্ত ভারতেড় রেল প্রকল্পগুলোতে ব্রিটিশ গ্যারান্টি প্রথার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ফেরত দেওয়ার ব্যাবস্থা হয়েছে। ফলে ভারতে রেল তৈরির খরচ কমে যায়। ১৮৭০এ দ্বিতীয় আফগান যুদ্ধ আর ভারতে একেরপর এক মন্বন্তর ঘটার ফলে সরকারি খরচ আকাশ ছোঁয়। ভারত সরকার রেলপথ তৈরিতে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় দুটো কারনে ১) সেনাচলাচল ২) কাঁচামাল ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া আর তৈরি দ্রব্য ভারতের বাজারে এনে সস্তায় বিক্রি করা।
কিন্তু আজও ভারতে ব্রিটিশ রেলপথ কুখ্যাত হয়ে থাকবে মন্বন্তর তৈরির কারন হিসেবে। তীর্থঙ্কর রায় বলছেন ১৮৭৬-৭৮, ১৮৯৬-৯৭ এবং ১৮৯৯-১৯০০ এই তিন সময়েড় মন্বন্তরে ভারতে খুব কম করে ১ কোটি ৩০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ৬০ লক্ষ হতভাগ্য মানুষ মারাগিয়েছিল। আমরা বলছি তাদের খুন করা হয়েছিল। এইগুলিকে আজ গণহত্যা বলতে হবে। পার্লামেন্টের মন্বন্তর কমিশনের সামনে নানান সাক্ষ্য এবং তথ্য প্রদানের পরে, রেলপথ তৈরি হয়েছে ভারতের উন্নতির জন্য, সেই মিথ্যে-মিথটি প্রথম ভাঙল। সেই প্রথম বোঝাগেল, রেলপথ কিভাবে ব্রিটিশ কারখানাগুলির জন্য ভারতের কৃষি উৎপাদন নির্বিচারে ব্রিটেনের জন্য রপ্তানি করছে যাতে ৪০ বছর ব্রিটেনে মন্বন্তরের অবস্থা তৈরি না হয়। ভারতজুড়ে শস্যদানার কৃত্রিম অভাব তৈরি হয়েছে। এই অভাব এলাকায় শস্যদানার দাম বাড়িয়ে সাধারনের নাগালের বাইরে নিয়ে গিয়েছে। রেল পরিবহন আর রেলরাস্তার পাশে তৈরি টেলিগ্রাফ লাইনের দরুন কোথায় সস্তায় শস্যদানা পাওয়া যাচ্ছে আর কোথায় দাম বেশী, সেই খবর বিদ্যুৎ গতিতে পৌঁছে যাচ্ছে ফড়েদের কানে। ফলে নিত্যদিন নতুন নতুন মন্বন্তর এলাকা তৈরি হচ্ছে রেলপথের পাশের গ্রামগুলোয়। আর শস্যে মড়ক লাগলেতো কোথাই নেই। কমিশনের সামনে বহু ভারতীয় রেলপথের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা বলছেন রেল বিশ্বজুড়ে ভারতীয় ভাল আর গমের চাহিদা তৈরি করেছে, কিন্তু ভারতে উৎপাদন খুব একটা বাড়ে নি। ফড়েরা রেলপথ আর টেলিগ্রাফের মদতে, ভারতজুড়ে, কম দামের শস্য বেশি দামের অঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার একটা অস্বাভাবিক দামী শস্যবাজার  তৈরি করে।
১৮৭৭এর মাদ্রাজ মন্বন্তরে দানাশস্যর দাম ৫ থেকে ৮ গুণ বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য শস্য কেনার ক্ষমতা সাধারনের হাতের বাইরে চলেযায়। আরও অস্বাভাবিক কাণ্ড হল, তখনও কৃষি শ্রমিকদের কাজ ছিল। সেবছরও ভারত অফিস বলে গিয়েছে শস্য সরবরাহ স্বাভাবিক। অথচ ১৮৭৬-৭৮এর সময়ে বোম্বে আর মাদ্রাজ প্রদেশে ২৩টি তালুকে মন্বন্তর শুরু হয়ে গিয়েছে।  ১৮৮০র মন্বন্তর কমিশনার স্যর রিচার্ড স্ত্রাচি মন্বন্তর রুখতে আরও ১০,০০০ মাইলের রেলপথ তৈরি করার প্রস্তাব দেন। এত বড় কথা বলার পেছনে ছোট একটা সুতোর গিঁট রয়ে গিয়েছে। ১৮৭৭এ রিচার্ড স্ত্রাচি ভারতের সবথেক বড় রেল কোম্পানির প্রধান ছিলেন। এর পরে বহু কমিশন বলেছে কেন রেল, মন্বন্তর এলাকাগুলো থেকে তার শস্য পরিবহনের দায়িত্ব পালন করতে পারলনা।  
রমেশ দত্ত বলছেন, যেহেতু সাম্রাজ্যের নীতিই হল ভারতে রেলপথেই সমস্ত বিনিয়োগ করা, সেহেতু, সেচ বা অন্যান্য সামাজিক উদ্যমে বিনিয়োগের পরিমান যথেষ্ট ছিল না। তিনি বলছেন ফাটকা কারবারি আর মিলমালিকদের জন্য তৈরি ১৮৭৮এর পরে তৈরি  রেললাইনগুলো ফাটকা কারবারি আর পুঁজিপতিদের জন্য তৈরি হয়। দানাসশ্যর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় কৃষককে অনেক বেশি পরিমানে খাজনা দিতে হয়। ১৮৯৭র পর রমেশ দত্তর নিদান ছিল বিন্দুমাত্র রেলে বিনিয়োগ না করে মাঠে উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া। কেননা, রেল তৈরির অজুহাত দেখিয়ে জমির খাজনা বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে, ফলে শস্য দানার দাম বেড়েছে এমনকি গরীব কৃষককে অনেক বেশি কর দিতে হয়েছেকৃষি উৎপাদন কমায় ছোট শিল্প উতপাদকেদের উৎপাদন কমেছে লক্ষণীয় হারে।

Monday, April 22, 2013

Bamboo Crafts of Bengal


The long and lithe bamboo plants have
lent grace to the natural beauty of
Bengal. Our poets have sung of their
charm and elegance in lyrics and ballads. No
rural landscape of Bengal, nay south-east Asia,
have ever been complete without those quaintly
pleasing plants and their green leaves through
which winds blow, rains splash and sing metallic
songs.
Bamboo, botanically known as bambusa,
belongs, paradoxically enough, to the family of
humble grass, graminae. But what is more
amazing about this plant is the diverse role it
plays in the service of mankind, although it
grows in utter neglect.
One can find it everywhere either in its useful
role in a frugal household or rather uselessly
as showpiece in exhibitions and in the abode of
the rich art lovers. The writer tenders his
apology for emphasising on the latter role but
takes this opportunity to add, as Oscar Wilde
puts it, all art is useless.
Like a true friend it does not mind inattention,
grows wherever it finds out a space
for itself and continues to be useful. From the
much-feared rod to the charming flute, from the
large sprawling structure of a thatched house
to the small household utensil, all are its
bounties.
In West Bengal, varieties of bamboos are
available. Each type of bamboo has its own
characteristics. The gonda, goda and genthe
bamboos are thick, heavy and knotty while the
beseni, muli and talta bamboos are light, thin
and hollow. The uses of different types of
bamboos vary according to their durability,
characteristics and appearance. The thick and
knotty bamboos are mainly used for structural
purposes, for making furniture and fencings.
The thin, straight and hollow bamboos are
commonly used for making containers, fish
traps, baskets etc. Bajali, a special type of
bamboo, is used exclusively for making flutes.
To study the history of the bamboo craft, we
have to turn Tripura state, once a neighbouring
state of ours. Dense clumps of long bamboo
plants are seen everywhere in the hilly regions
of Tripura. The hill tribes of that place use
bamboo extensively in their daily life. They build
their homes with bamboo poles taken from
adjoining bushes. They utilise bamboo for
making furniture and also for utensils. They
even take the inner portion of the bamboo
stipules as vegetable. The tribal people have an
artistic bent of mind and in their daily life, they
try to beautify their households by adding some
simple decorations. They make a special type
of colour, which they call Vishnu colour. They
paint their fold pictures with this colour.
Once the royal family of Tripura, a great
patron of the ivory works, used to patronise the
bamboo craftpersons of their state, too. Even
today elegant artistic works made of bamboo
by those craftpersons can be found in, say,
some neglected corner of the ruined palace. It
is a pity that the descendants of those
craftpersons, having lost the support of their
royal patrons, had to change their traditional
vocation. The Government of India in the
ministry of textiles, as also the Government of
Tripura, have of late shown interest in
development of cane and bamboo crafts. A
training-cum-production institute has been set
up there and the government is encouraging
people with aristic aptitude to avail of intensive
training and take up the craft.
There is an old saying in Bengali that when
one bank of a river breaks down the other
flourishes. Same here in the case of bamboo
handicrafts. A new aspect of bamboo, the
hidden beauty, so to say, has now been revealed
thanks to the creativity and craftsmanship of
the young artisans of West Bengal. Cute daily
use articles, made of bamboo, can now be seen
in the hands of the belles and housewives as
well as in parlours as art decor. Needless to
mention that the artisans had to struggle with
the stems and tolls for a long time to master
the technique of creating artistic handicrafts.
To talk of personal experience, since boyhood
I had an attachment with and inclination
towards arts and crafts.While I was a student
in the JJ School of Arts, Bombay (now called
Mumbai), an exhibition titled Hobbies and
Handicrafts was held at the famous Jehangir Art
Gallery there in the year 1952. I participated
in that exhibition. There were some throw-away
bamboo pieces on the terrace of one of my
relative’s residence. I collected those pieces and
made a few ash trays, lamp stands, bowls,
figrins with the equipment comprising hacksaw,
chisel, hammer, pliers, borers, straight choppers
etc. I gave special attention to keeping the
natural shape and motif of bamboo in tact,
which was hugely appreciated by the crafts
buffs.
Coming back home in 1955, I set up a small
workshop (the Bamboo Handicraft Centre) at

the ground floor of my residence and started
production of both useful and decorative items
with cane and bamboo. At that time, I found
out, the craftspesrsons in West Bengal were
engaged in making only the conventional as well
as traditional items. I tried to break this trend
through design orientation. For this I of course
had to spend several days together with the
traditional craftspesrsons to learn the skill of
splitting the cane and bamboo and do weaving
with cane and bamboo splits through warf and
weft process. I also had to spend quality time
with the carpenters in order to study their
technique of handling different tools and
implements.
With all this behind me, I started doing my
experimentations by using different types of
bamboo available in West Bengal and Assam,
the Burma Giant variety, collected from FRI and
Deoghar along with the
muli and bajali
bamboos from Tripura.
For canes, which is not
abundantly available in
West Bengal, I used the
jati, hanna, sundi and
thick Andaman
varieties. I used both
bamboo and cane for
making new
basketwares. Bamboo
sticks were used in the
structure of the items
while cane splits were used for binding in a
particular decorative design on the top. Going
for designs, I took extra care so as to retain
the original character, shape and colour of
bamboo, for otherwise the items could have
been mixed up with wood crafts.
Over this period, I was immensedly helped
by Kamaladevi Chattopadhyay, the then
chairperson of the All India Handicrafts Board
(AIHB), New Delhi, and DN Saraf, the then
director of handicrafts, AIHB, who made certain
tools like wood working lathe, belt sander,
automatic drilling machine, circular saw
machine etc. available to me at a special 50%
subsidised rate. The AIHB was kind enough to
nominate me as a member of the Advisory
Committee for Cane & Bamboo Crafts in the
year 1963 and I continued to be one till 1979.
Looking back, in the year 1956, I set up the
Bamboo Handicraft Centre in my village
residence at Rajpur in South 24-Parganas
district with nine girl trainees and two sets of
tools. In seven years time, our centre got the
honour of being registered as an empanelled
supplier to the Central Cottage Industries Union,
New Delhi. At present, our centre is equipped
with six sets of tools, lathe machine, hacksaw
machine, four fret saw machines, belt sander,
automatic drilling machine, circular saw
machine, prototype Japanese tools etc. Over
this 50 year period, nearly 200 students
(including a few deaf and dumb boys) have been
imparted training at this centre, many of whom
have gone on to get government service in the
line of handicrafts while others are in to the craft
on individual enterprise.
Having said this, if there is one thing about
our centre that merits special mention, as its
director my call will be strict quality control. This
is not one of the easiest things on earth. Being
a hydroscopic item,
bamboo is always
susceptible to the
attacks of germs and
fungii. So it calls for
chemical treatment. At
our centre, the
matured bamboo poles,
after collection from
bushes, are first cut
into pieces by circular
saw machine and then
boiled in a large vat in
2% boric acid solution
and 2% borax in water. Then the nitrogenous
products, which ooze out of the cut outlets of
bamboo, are wiped out by torn blankets.
Afterwards, the pieces are dried under the sun on
the bed of sand. In this process the bamboo pieces
are made immune of the possible attacks of germs
and fungii. Despite all this, some bamboo pieces
are found to have been attacked by green and
orange fungii during the monsoon; in that case, they
are treated in a saturated solution of 1% sodium
pentachlorophenete in alcohol, which is applied by
brush. Thus, on this landmark of 50 years of the
Bamboo Handicraft Centre, I have every reason to
be glad at the fact that the institution is expanding
day by day and we are now in a position to impart
training to intending trainees and find out new
marketing channels for our products.
We firmly believe, the type of bamboo and
cane may vary according to the nature of its
product, but the quality of a finished article always
depends on the workmanship of the artisan.

Sunday, April 21, 2013

ডিম পাড়ে মুরগি আর খায় দারোগা - ব্রিটিশ বিনিয়োগে বিশ্বজোড়া লুঠের রেলপথ

এ এক অদ্ভুত বিনিয়োগ চক্র। বাংলায় লুঠে হাতপাকিয়ে ভারত লুঠ করে যে সম্পদ ব্রিটেনে নিয়ে গিয়েছে লুঠেরা ব্রিটিশরা, সেই অর্থই বিশ্বজুড়ে নানান প্রকল্পে বিনিয়োজিত হয়ে ফলে ফুলে বিকশিত হয়ে তথাকথিত প্রথম বিশ্ব তৈরি করেছে। সেই লুঠের অর্থ কিভাবে অর্জিত হয়েছিল তার বিশদ বিবরণ এই ব্লগ খুঁজলে পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে আবারও একবার সেই লেখাটি নতুন করে ব্লগের দেওয়ালে চিপকে দেওয়া যাবে। - ব্লগ সম্পাদক(এখানে সম্পাদক মূল অর্থেই ধরুন, সম্পাদনা করা অর্থ, কাজ করা এডিট করা নয়।)

১৮৩০এ প্রথম বাষ্পীয় ইঞ্জিন রেলপথে দৌড়োবার ২০ বছর পর্যন্ত ব্রিটেনের রেলপথ তৈরিতে অভূতপূর্ব পরিমান অর্থ বিনিয়োজিত হয়। ১৮৫০ পর্যন্ত ব্রিটেনজুড়ে ৬০০০ মাইল রেলপথ পাতা হয়, আরও ১০০০ মাইলের কাজ চলতে থাকে। ১৮৪৪ থেকে ১৮৪৬ পর্যন্ত যতটা রেলপথ তৈরি হয়েছিল তার তিনগুন পথ, ৮৫০০ মাইল লাইন তৈরির অনুমতি(অথরাইজ) দেয় পার্লামেন্ট । ১৮৪৩ থেকে ১৮৫০ পর্যন্ত ১০৯ মিলিয়ন পাউন্ড রেলে বিনিয়োগ হয়। বছরে রেলপথ বৃদ্ধির হার ছিল ২০ শতাংশ। ১৮৪৭এ ব্রিটেনের ৭ শতাংশ মোট জাতীয় আয় এবং দেশের গড় আভ্যন্তরীণ বিনিয়গের ৬০ শতাংশ বিনিয়োজিত হয় ব্রিটিশ রেলপথে।  
উচ্চহারে বিনিয়োগের লাভ থেকে নিশ্চিত ফেরতের আশ্বাসে রেলপথের বিশাল পরিমানে বিনিয়োগ আসতে থাকে। ৪০সালে যে লাইনটি প্রথম পাতা হয়, মন্দার জন্য ঠিক মত ফেরত না হলেও রেল ষ্টক বছরে ১০ শতাংশ আয় দিতে থাকে। তবে এ ধরনের ফাটকাবাজি বেশিদিন চলেনি। ১৮৫০এর মধ্যে দেশের অধিকাংশ রেলজাল তৈরি হয়ে গিয়েছিল। নতুন লাইনও তৈরি হতে থাকে। তবে সেগুলো থেকে খুব বেশি রোজগার হচ্ছিলনা। ফলে অংশীদারদের ফেরতও ঠিকঠাক দেওয়া যাচ্ছিল না। ১৮৪৮এ দ্বিতীয় রেল ম্যানিয়া বা আজকের ভাষায় রেল বেলুনে(বাবল) অথবা রেলপথে বিনিয়োগে অজস্র ছিদ্র ধরা পড়ে চুপসে যেতে থাকে। দেশে রেলে বিনিয়োগের হার ২০ থেকে ৫ শতাংশে নেমে আসে। স্টকে গড় আয় (ডিভিডেন্ড) কমে দাঁড়ায় ১.৮৮ শতাংশ। 
এমত অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের জন্য ছিল সুবর্ন সুযোগ দেশের বাইরে লুঠের জন্য তৈরি রাখা দখলি ভূখণ্ড – উপনিবেশ। এছাড়াও অন্য দেশগুলোতেও বিনিয়োগের কথা ভাবা শুরু হতে থাকে। ১৮৭০ থেকে ১৯১৩ পর্যন্ত দেশের আয়ের ৫ শতাংশ আর সঞ্চয়ের ৫০শতাংশ বিদেশে ধার দেওয়া হয়। ধরে নেওয়া হয় এই বিশাল অংশের অর্ধেক বিনিয়োগ হয়েছিল বিদেশে রেলপথ তৈরির জন্য। ১৮৭০ থেকে ১৮৯০ পর্যন্ত দেশে বিনিয়োগ কমে যাওয়ার দরুন ১৮৮০ থেকে ১৯০৫ পর্যন্ত বিদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ শীর্ষে পৌঁছয়। ‘The determinants of UK investment abroad, 1870-1913: the U.S. case’, Michael Edelstein বলছেন বিদেশের প্রয়োজনে এই বিনিয়োগ হয় নি, হয়েছে ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের যায়গা না থাকায়।
অন্যভাবে বলা যায়, বিদেশে, বিশেষ করে উপনিবেশগুলোর কাঁচামাল অত সস্তায় ব্রিটেনের শিল্পকারখানাগুলতে আনতে ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা যথেচ্ছ ভাবে রেলপথ তৈরি করতে থাকে। মনেরাখতে হবে, ভারতের মত বিশাল উপনিবেশে বিশাল পরিমানে রেলপথ তৈরি করেছে মাত্র ৫টি রেল কোম্পানি। যতনা বেশী বিনিয়োগের চাড়, তার থেকে বেশী উদ্যোগ, উপনিবেশে রেল চালানোর ক্ষতির ভাগটি জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে লভ্যাংশটিকে পকেটস্থ করা এবং দেশের কারখানার জন্য প্রায় বিনা বিনিয়গে কাঁচামাল বহন করে আনা আর সেই কাঁচামাল প্রক্রিয়া করে উতপন্ন দ্রব্য উপনিবেশের বাজারে বিক্রি করা।
তবে ব্রিটিশ ব্যাবসার মুনাফার জন্য রেল কোম্পানিগুলি নানাধরনের শুল্ক বরাদ্দ করত। ভারতের উদাহরণটিই দেখাযক। যে কোনও সমুদ্র বন্দর থেকে ভারতে পণ্য আনার জন্য কম শুল্ক দিতে হত।  ভারত থেকে কাঁচামাল সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার খরচও কম ছিল।  কিন্তু ভারতের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মাল পরিবহন করতে অনেক বেশী পরবহন শুল্ক দিতে হত। অর্থাৎ ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারি মদতে অতিরিক্ত ছাড় আর ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক। সবথেকে বেশি ছাড় পেয়েছে লন্ডনের লোহা আর রং কোম্পানিগুলি। রেলপথ তৈরিতে এই দুটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হত। ভারতীয় রেল ছিল ধ্রুপদি ঔপনিবেশিক অর্থনীতির অন্যতম মুখ্য উদাহরণযদিও মার্শালেরমত ঐতিহাসিকেরা বলছেন স্থানীয় জনগণের ওপর রেলের প্রভাব স্বতঃসিদ্ধ(While the benefits of railways may have been self-evident to local populations, in almost every case their construction was impossible without foreign investment, and during this period major investment came almost entirely from London private banking houses.)অর্থাৎ উপনিবেশএ রেল উপকারই করেছে। কতটা উপকার করেছে তার উদাহরণ আমরা অন্য প্রবন্ধে দেখেছি। 
দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং অন্য দেশে স্থানীয় উদ্যমীরা রেলপথ তৈরিতে এগিয়ে এলেও প্রয়োজনীয় অর্থ তোলা সম্ভব হয় নি। তার জন্য ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথাও চলতে থাকে। কিন্তু যতদিননা সেই দেশের স্থানীয় সরকার সেই বিনিয়োগের দায়িত্ব নেয় নি, ততদিন কোনও ব্রিটিশ বিনিয়োগ অন্তত সে দেশের রেলপথে আসেনি। সরকারগুলি ডিভিডেন্ড দেওওার নিশ্চিতকরণ আর কর ছাড়ে রাজি হওয়ার পরই যৌথ উদ্যোগে ব্রিটিশ বিনিয়োগ সেই সব দেশে আসতে থাকে। রাশিয়াই প্রথম সরকার যে বেসরকারি বিদেশী রেল বিনিয়োগে গ্যারান্টি প্রথা চালু করে। মস্কো থেকে সেন্ট পিটাসবারগে রেল লাইন তৈরিতে ৪ শতাংশ গ্যারান্টি দেয় রুশ সরকার। ১৮৫৩ থেকে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনে ভারত শাসক লর্ড ডালহৌসি এবং ১৮৫৮র পর ভারত দেশটিকে জাতীয়করণ করা ব্রিটিশ শাসক ব্রিটিশ রেল বিনিয়োগের ওপর ৫ শতাংশ নিশ্চিন্ত ফেরতের গ্যারান্টি প্রদান করে। 
ব্রাজিল সরকার বিনিয়োগের ওপর নানান ছাড় দিলেও স্থানীয় উদ্যমীরা অর্থ তুলতে ব্যর্থ হয়। তারা ব্রাজিল সরকারকে বলে ব্রিটিশ সরকারকে তোল্লাই দিয়ে বেসরকারি ব্রিটিশ বিনিয়োগ দেশে নিয়ে আসতে। ১৮৫২তে ব্রিটিশদের দাবি মত এক্সচেঞ্জ হার তৈরি হয়, উপরন্তু বিনিয়গের ওপর ৫ শতাংশ নিশ্চিন্ত ফেরতের গ্যারান্টি দিতে হয়, বিক্রি না হওয়া শেয়ার কিনতে রাজি হতে হয়, আমদানি শুল্ক তুলে নেওয়া হয়, বিনিয়োগকারীদের জমির ওপর মালিকানা(ল্যান্ড গ্রান্ট) দেওয়া হয় এবং legislated compulsory land appropriations করা হয়, তাদের রেলপথে কোনও প্রতিযোগিতা করতে হবে না এমন শর্তও মেনে নেওয়া হয়। এমতবস্থায় দুটি লন্ডনের কোম্পানি আবেদন করে, দুটিকেই কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
১৮৬২তে আর্জেন্টিনা সরকার জুয়ান আর মেটিও ক্লার্ককে রেলপথ তৈরির অনুমতি দেয়। তারাও যথেষ্ট পরিমান বিনিয়োগ জোগাড় করতে পারে নি। তারা ব্রিটেনে বিনিয়োগকারীদের ৮ শতাংশ ফেরতের আশ্বাস দেয়। বিনিয়োগকারীদের দাবি আর্জেন্টিনা সরকার, রেল কোম্পানিকে ফেরত না দিয়ে তাদের অংশিদারদের সরাসরি ৭ শতাংশ ফেরতের গ্যারান্টি দিক। অপ্রতিযোগিতা অঞ্চলেও তাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি করে।
১৮৪৭ থেকে ১৮৬৫ পর্যন্ত ব্রিটেন আর কানাডার মধ্যে ১১টি রেল চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিবলে কানাডা ব্রিটিশ অর্থ দপ্তরকে(ব্রিটিশ ট্রেজারি) লন্ডন আর কানাডায় বিনিয়োগের অর্থ তোলার দায়িত্ব দেয়। কানাডার রেল আইন তৈরি হয় ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের সুবিধের, আরও বেশি লাভের দিকে তাকিয়ে। আইনে একচেটিয়া কারবারের সুযোগ রাখা হয়। বিলা হয় অন্তত ১০ বছর অন্য কোনও(বিশেষ করে আমেরিকার) বিনিয়োগকারী পশ্চিম কানাডায় রেলপথ বিকাশে বিনিয়োগ করতে না পারে। 
ফেরতের গ্যারান্টি ছাড়াও বিদেশে রেলপথ তৈরির কাজে ব্রিটেনে রেল, ইঞ্জিন, অন্য রেলপথ তৈরির সামগ্রী তৈরির কারখানা বিশাল অঙ্কের কাজ পেতে থাকে। বিনামূল্যে জমি, সস্তার কুলি, লুঠের অর্থ বিনিয়োগ করে বিশ্বজুড়ে তৈরিকরা রেলপথে উপনিবেশ এবং নানান দেশ থেকে ব্রিটেনে সস্তায় কাঁচামাল আমদানি আর তৈরি দ্রব্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি করল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। সমগ্র বিনিয়োগের শর্তই তৈরি করা হয়েছে ব্রিটিশদের কোলে ঝোল টেনে। স্থানীয় বিনিয়োগকারী অথবা সরকার শুধুমাত্র সাহায্যকারীর ভূমিকা পালন করে গিয়েছে। সেই রেলপথ কোথায় তৈরি হবে, কিভাবে তৈরি হবে অথবা কে তৈরি করবে, কি জন্য তৈরি হবে সেই পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করা অথবা রেলের দৈনন্দিন ব্যাবস্থাপনায় মাথা গলানোর সুযোগ ছিলনা।  
সরকারগুলোও সেই বিষয়টা জানত না তা নয়। থাই সরকারের একটি মেমোতে সরাসরি মন্তব্য করা হয়েছে, '[i]f we only approve this British railway, it will transport commodities to and from Moulmen and lead only to British profit, not to any increase in our prosperity'কিন্তু সরকার ব্রিটিশদের সামনে মাথা নত করে। ভারতে এই কোম্পানিগুলোর বোর্ডে সরকারি প্রতিনিধি থাকলেও হয় তারা কাজের বিষয় সম্বন্ধে অজ্ঞ অথবা কম্পানিগুলো তাদের পাত্তা দিত না, কাজ শেষ করে তাদের কাছে অনুমতির জন্য আসত।
চিন সরকারও বহু বছর ধরে রেল রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রাখতে সমর্থ হয়। বহুদিন ধরে চিন সরকার সেই নিরমান বন্ধ করে দিতে পেরেছিল। যুক্তি ছিল স্থানীয় সম্পদ দিয়ে রেল তৈরির কাজ বেশ খরচ সাপেক্ষ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এজেন্ট জারডিন মাথিসন, ২৭টি কোম্পানির তরফে লবি করা সুরু করে। শেষ পর্যন্ত ১৮৯২তে চিনা সরকার মাথা নত করে। তৈরি হয় ইম্পিরিয়াল রেলওয়ে এডমিনিসট্রেশন। ১৮৯৮তে আফিম ব্যাবসায়ী জারডিন মাথিসন কোম্পানি, তাদেরই ব্যাঙ্ক হংকং সাংঘাই বাঙ্কিং করপোরেশন তৈরি করল ব্রিটিশ অ্যান্ড চাইনিজ করপোরেশন লি। এই কোম্পানি ৪টি রেলপথ তৈরির অনুমতি পায়।
রেল আর বিদেশে চাকরি
সে সময় বিভিন্ন কলেজ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বেরনো প্রশিক্ষিত ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারেরা এই কাজকে আরও সুচারুরূপে সমাধা করতে সাহায্য করে। বোঝা যাচ্ছিল ১৮৫০এর আগে যে গতিতে ব্রিটিশ রেলপথ পাতা হচ্ছিল তা অবাস্তব। ১৮৪১এ ইন্সটিটিউশন অব সিভিল এঞ্জিনিয়রসের প্রেসিডেনট, জেমস ওয়াকার বলেন, ‘If we look at the number of students in the classes for civil engineering at the different Universities and Academies; …we are led to ask, will the country find employment for all these? I freely confess that I doubt it. ফলে চাকরির জন্য অপেক্ষা করা এই প্রযুক্তিবিদদের বিদেশে পাঠিয়ে নিজেদেরমত করে রেল প্রকল্পগুলোকে ঠিক মত তৈরি আর পরিচালনা করার উদ্যম পেয়েছিলেন  ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা। অনেকসময় বিনিয়োগকারীরা বিদ্যালয়গুলো থেকেই তাদের ভবিষ্যৎ কর্মচারী নিয়োগ করতেন। কানাডার গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রেলওয়ের ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা ইঞ্জিনিয়ার আর পরিচালক বেছে নিয়েছেন।
বিদেশে চাকরি করা বহু প্রযুক্তিবিদের স্মৃতিকথায় তাদের কাজের নানাদিক বুঝে নেওয়া যায়। বহু চাকরিপ্রার্থীই বিদেশে কাজ করতে পছন্দ করতেন। তবে তাদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণ আর হাতেকলমে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হত - অন্তত নিজের দেশেতো বটেই। বিভিন্ন প্রবীণ প্রযুক্তিবিদ যারা বিদেশের রেল প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের পরামর্শদাতার কাজ করছেন, অভিজ্ঞ কারিগরদেরই বিদেশের কাজে সুপারিশ করতেন। জেমস এবারনেথি ৩০ বছর ব্রিটেনএ রেলপথে বরিষ্ঠ পদে কাজের অভিজ্ঞতার জন্য তুরিন অ্যান্ড স্যাভোনা রেলওয়ের প্রধানরূপে নির্বাচিত হন। ১৮৫১তে দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়েতে রবার্ট স্টিফেন্সনের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন জর্জ বার্কলে। তিনিই ১৮৫৯তে স্টিফেন্সনের মৃত্যুর পর তার পদে মনোনীত হন। তার ভাই, জেমেস জন বার্কলেও একই কোম্পানিতে কাজ করতেন। অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ার এবং স্টিফেন্সনই সেই রেলপথের প্রধান প্রযুক্তিবিদ হিসেবে তার নাম প্রস্তাব করেন। এরকম বহু উদাহরণ দেওয়া যায়।
বহু ইঞ্জিনিয়ার ব্রিটেনে কাজ না পেয়ে বিদেশে ভাগ্য নির্ধারণে বেরিয়ে পড়তেন। বহুদিন একটি প্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করার পর ২৭ বছরের ডেভিড আঙ্গাস নিজে কাজ করতে চাইছিলেন। তিনি ব্রিটেনে কাজ পাননি। তিনি ওয়ারিং ভাইদের ব্রাজিলে রেলপথ পাতার সমীক্ষা করার কাজে যোগ দেন। স্মৃতিকথায় আঙ্গাস বলছেন বিদেশে কাজ করার সুবিধে হল মনের মত মাইনে পাওয়া যায়। তিনি ব্রাজিলে বছরে ৪০০ ডলার মাইনে এবং আরও নানান সুযোগ সুবিধে পেতেন। ব্রিটেনে এই পদে থাকলে রোজগার করতেন বড়জোর ১০০ ডলার। এডওইয়ার্ডস জোনস উইলিয়ামস ব্রিটেনএ কাজ না জোগাড় করতে পেরে সমস্ত পরিবার নিয়ে ওয়েলসের উপনিবেশ পাতাগনিয়ার ছুবারএ কাজে এলেন। জন ব্লাকেট গ্রেট ওয়েস্টারন রেলওয়ের কাজ ছেড়ে, ১৮৫১ সালে ৩২ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডে চাকরি করে ১৮৮৮তে পুরো উপনিবেশের প্রধান হন এবং ১৮৮৯ থেকে নিউজিল্যান্ড সরকারের পরামর্শ দাতা হিসেবে কাজ করতে থাকেন।
বহু প্রযুক্তিবিদ ভারতে শুধুই পারিবারিক যোগাযোগে চাকরি পেয়েছেন। আলফ্রেড ভক্স, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে চাকরি করা কাকার সুপারিশে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়েতে চাকরি অর্জন করেন। ভারতে যুবা বয়সে কাজে হাত পাকিয়ে পাকাপাকি চাকরিতে ঢুকে পরতেন। ১৮৬৯এ সুয়েজ খাল খুলে যাওয়ায় বহু ইঞ্জিনিয়ার সরকারি চাকুরে আর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সহজে মেলামেশার সুযোগ পেলেন। ভারতে যুবারাই কাজ পেতেন।  

Saturday, April 20, 2013

উপনিবেশ, রেলপথ, মড়ক, মন্বন্তর কিংবা গণহত্যা - colonial india, railways, famine, british genocide

রেল আর রোগ
সালটা ১৮৫৯। ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ের এক স্থানীয় এনজিনিয়ার কাজের জায়গায় মড়ক লাগা নিয়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে জানান, বাংলার বিভিন্ন স্থান থেকে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের অধিকাংশ কলেরা মড়কে মারা গিয়েছে - Large masses continued to arrive almost daily, the utmost exertions of the Engineers failed to get together materials for at once hutting them, and a large proportion had no shelter for many days after their arrival and when cholera was raging among them. Kerr, , p 98। সেই সময়ের হিসেব বলছে সেই মড়কে মারাগিয়েছিল হতভাগ্য ৪০০০ কুলি। শুধু কলেরাই নয়, ম্যালেরিয়া, গুটিবসন্ত, নিউমোনিয়া, পেটখারাপ, ডায়রিয়া, আলসার ইত্যাদিতেও বহু মানুষ মারা গিয়েছেন। যে সব অঞ্চলে বেশিদিন কাজ হত, সেখানে ৩০ শতাংশের বেশী কুলি মারা গিয়েছে। ১৮৮৮ বেঙ্গাল-নাগপুর রাস্তায় কোনও একটা সময় কোনও একটি ট্রেঞ্চে ২০০০-৩০০০ কুলি মড়কে মারা গিয়েছে। তাদের দেহ চাইতে কেউ আসেনি। রেল রাস্তায় ট্রেঞ্চের ধারেই দেহগুলো গাদা করে ফেলে রেখে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। 
কার তার বই Building the Railways of the Rajএ বলছেন, কুলিদের থাকার ব্যাবস্থা এতই অস্বাস্থ্যকরভাবে করা হত যে এই মৃত্যু খুব একটা আশ্চর্যজনক ছিল না। ঠিকমত থাকার জায়গার অভাব, প্রাতকৃত্য করার অসুবিধে, পানিয় জলের সমস্যার সঙ্গে জুড়ত বৃষ্টি, গরম, ঠাণ্ডার প্রকোপ। ঠিকেদাররা এক লপ্তে কুলিদের বয়ে নিয়ে যেত কাজের এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায়। ফলে মড়ক খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ত। তার আঁচ লাগত স্থানীয় গ্রামগুলোয়। যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে রেলপথ তৈরি করা হত, তাতে ম্যালেরিয়া হওয়া খুব সাধারণ ঘটনা ছিল। ১৯২৭ সালে জনৈক চিকিতসককে ম্যালেরিয়ার উৎস খোঁজার কাজ দেওয়া হয় তিনি ঠিক এই কথাই জানিয়ে ছিলেন(Cutting down hundreds of trees for every mile of railway ties for every mile of trackage laid, left poorly rooted trees nearby open to buffeting by winds which soon toppled them over. These collapses greatly increased the area of thin soil exposed. Blasted during the dry season by the rays of the sun and by torrential downpours during the rains, these laterite-based soils were soon leeched out, forming water-filled cracks and potholes which female mosquitoes intent on laying eggs found irresistible. Watts, Epidemics and History: Disease, Power and Imperialism, p 171.)। আর যেহেতু কাজের ধরণটাই ছিল  যাযাবরী ধরনের, সেহেতু রোগের চলনশীলতাও ছিল বেশ ভালরকমের।
ম্যালেরিয়ায় সব থেকে বেশি মৃত্যু ঘটেছে। রেল পাতার সময় মোটামুটি একটা স্লিপার পিছু একটা মৃত্যু ধরে নেওয়া হত। গ্রেট পেনিন্সুলার রেলওয়ের ঘাট সেকসানে, প্রত্যেক মাইল রেলপথ পাততে প্রয়োজন ছিল ১৭০০ স্লিপারের। ফলে প্রত্যেক মাইল রেল পথ পাততে মৃত্যু হত ১৭০০ শ্রমিকের। এবং এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটানর চেস্টাও হয় নি। পরবর্তী কালে ১৮৯৭(২৭৩২ মাইল), ১৮৯৮(২৯৬৩ মাইল) রেল লাইন পাততে আরও সস্তা মন্বন্তরে ভোগা মানুষকে যুতে দেওয়া হয়। মনেরাখতে হবে, সরস্বতী-সিন্ধু সভ্যতা থেকেই কলেরা ছিল। কিন্তু এত ব্যাপক নয়। এবং যদিও কোনও মড়ক লাগত তাও সীমাবদ্ধ ছিল ছোট অঞ্চলে। ঔপনবেশিক সময়ে যেখানেই রেলপথ গিয়েছে তার পেছনে পেছনে ম্যালেরিয়া আর কলেরা গিয়েছে। রেলএর জলাধারে বহুদিন কলেরার জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে। সেই জলেই এলাকা থেকে এলাকায় ছড়িয়ে যেত মড়ক। এই প্রসঙ্গে দুজন লেখকের দুটি উধৃতি তুলে দেওয়া গেল। Modernising works created serious ‘obstacles’ to water flows, caused river systems to become ‘silted up’ and ‘moribund,’ deprived soils of enriching nutrients and damaged crop yields, drainage and sanitation. Klein, ‘Imperialism, Ecology and Disease: Cholera in India, 1850-1950’, p 512 While cholera slaughtered millions thus, the British government continued to invest heavily in railways and not much in public health. Watts, Epidemics and History: Disease, Power and Imperialism, 168

রেলপথ মন্বন্তর বা গণহত্যা
ব্যবসায়ী কৃষি আর রেলরাস্তা পরস্পরের হাট ধরাধরি করে চলেছে। ব্যবসা নির্ভর কৃষি পশুচারনভুমি দখল করে ফলে গ্রামে পশুদের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। ফলে ঘাসের দাম বাড়ে। জ্বালানি জোগাড় করতে পশু বেছেদিতে হয়। পশু গোবরের পরিমান হ্রাস পাওয়ায় জমির উরবরাশক্তি হ্রাস ঘটে এবং ভুমিক্ষয় হয়। পুরনো বাঁধ বা ছোট নালায় খরা রুখে দেওয়া যায়। কিন্তু ঔপনিবেশিক সরকার সব বিনিয়োগই রেলপথে করলেন। এই স্বাভাবিক কাণ্ডের ফল মন্বন্তর। এবং কোথাও সরাসরি কোথাও পরোক্ষে রেলরাস্তা এর জন্য দায়ী হয়ে রইল। মুক্ত বানিজ্যের অন্যতম প্রবক্তা ভারত সারকার মন্বন্তরে পড়া মানুষদের সাহায্য করতে অস্বীকার করল। রেলকে ব্যাবহার করে ফড়েদের দানা শস্যের ফাটকা বানিজ্য করার চেস্টা রোখা হল না। কমদামেড় এলাকা থেকে শস্য কিনে বেশি দামের এলাকায় বিক্রি করার চেষ্টায় মদত দিল রেল রাস্তার পাশে টেলিগ্রাফ লাইন। আধুনিক প্রযুক্তি ভারতে গণহত্যা বহন করে এনেছে। অত্যধিক করের হারে ন্যুব্জ কৃষক রেল রাস্তা আর টেলিগ্রাফের জুগলবন্দীতে মন্বন্তরের মুখে এসে পড়ল।
খাদ্য এবং অন্যান্য কৃষি উতপাদন রেলরাস্তা ধরে রপ্তানি হয়ে যেত ব্রিটেনে। ভারতের ১৩ শতাংশ গম ব্রিটেনে রপ্তানি হত। ইংল্যান্ডের আগের বছরের খারাপ চাষের জন্য১৮৯৬তে ব্যাপক হারে কৃষি দ্রব্য রপ্তানি হল। ফলে আবার মন্বন্তর।  ১৮৮৬তে ভারত ব্রিটেনের গম আমদানির ২৩ শতাংশ সরবরাহ করত। হায়দারাবাদের পুতুল রাজন্যকে প্রভাবিত করে জঙ্গলে বা অন্য এলাকায় গমের বদলে ব্যাপকভাবে তুলোর চাষ শুরু হয়, ফলে খাদ্য নিরাপত্তার হানি ঘটল। ধান এবং গমের অধিকাংশ লন্ডনে রপ্তানি হত(The idea that Berar enjoyed immunity from famine was dispelled by the experiences of 1896-97 and 1899-1900. The former year was one of scarcity, amounting to famine in parts of the province, in the latter year the famine was severe, and affected the whole of Berar - Report on the Administration of the Hyderabad Assigned Districts for the Year 1901-02, Residency Government Press, Hyderabad, 1902, para 13.)। বেরার ব্রিটিশের ঘটান মন্বন্তরের একটা ছোট উদাহরণ মাত্র।
আজও শুধু ব্রিটনরাই নয় বহু ভারতীয়ও বিশ্বাস করে নতুন প্রযুক্তি আর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের মাহাত্ম্যে। এই সব উপকথা আজ নতুন করে প্রশ্ন করার সময় এসেছে। 

সুত্রঃ British Imperial Railways in Nineteenth Century South Asia
Laxman D Satya (lsatya_99@yahoo.com) is at the  Department of History, Lock Haven University of Pennsylvania, US.
November 22, 2008Economic & Political Weekly

উপনিবেশ, রেলপথ, ব্রিটিশ বিনিয়োগ - colonial india, railways & secured british investment


১৮৪৬ সালে বম্বের রেভিনু কমিশনার টমাস উইলিয়ামসন গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি লেখেন। সেটির বয়ানটি এইরূপ -  The great trunk-line, running by the Malseje Ghaut in the direction of Nagpur, would be most direct which could possibly be selected to connect Bombay to Calcutta. Commercially, it would be best for the cotton of Berar, while for the first 120 miles from Bombay we would proceed in the immediate direction of the military stations of Ahmed­nuggur, Jaulna and Aurangabadএই চিঠিটির চার বছর পর এই কোম্পানিটি ভারতের প্রথম রেলপথ, বোম্বে থেকে থানের রেলপথ ১৮৫৩তে চালু করে। ১৯০০ সালের মধ্যে ২৪০০০ মাইলএরও বেশী রেলপথ পাতা হয়ে যায়। এই বিশাল পরিমান বিনিয়োগ আসে ব্রিটিশ বিনয়গকারিদের থেকে।
ব্যক্তিগত মালিকানার কোম্পানিগুলি পুরোপুরি সরকারি মদতে শুধু রেলপথই তৈরি করে নি, সেগুলোর মালিকানাও তাদের ছিল। উনবিংশ শতকের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক বছর মোটামুটি ১,৪০৫ মাইল রেলপথ তৈরি হতে থাকে। বিনিয়োগ হয় ১৫০ মিলয়ন পাউন্ড। এই এই বিনিয়োগ শুধু বিশাল অঙ্কই নয়, বিশ্বে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সবথেকে বড়ও বিনিয়োগ বটে।
কোমপানিগুলো ৫ শতাংশ হারে বিনিয়োগের ফেরতের সরকারি আশ্বাস পায়। ১৮৬৯ থেকে ১৮০০ পর্যন্ত ব্রিটিশ কোম্পানিগুলিই ভারতে রেলপথ তৈরির বরাত পায়। রেল রাস্তা তৈরি বা চালানোয় কোম্পানিগুলির ক্ষতি হলে সেই ক্ষতিপূরন হিসেবে ভারত সরকার রাজস্ব খাত থেকে ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড সরকারি গ্যারান্টি প্রদান করে। এই গ্যারান্টি ব্যবস্থার বলে, কোম্পানিগুলি তাদের অংশিদারদের আশ্বাস দিয়ে বলে, কোম্পানির যদি ক্ষতি হয় তাহলে ভারতের করদাতারা সেই ক্ষতি পূরণ করতে বাধ্য থাকবে। অর্থাৎ এ এক বিচিত্র ব্যবসাচক্র। লাভ হলে কোম্পানির আর ক্ষতি হলে ভারতের করদাতাদের। ব্রিটিশ বিনিয়োগ ভারতে এল এই শর্তে, ব্যক্তিগত বিনিয়োগ হবে সরকারি ঝুঁকি আর দয়িত্বে(রিস্ক)। ১৮৭০এ ভারতে রেলপথে ব্রিটিশ বিনিয়োগ আসার পরিমানকে ছাড়িয়ে গেল ভারত থেকে ব্রিটেনে যাওয়া সুদের পরিমান। এবং উনবিংশ শতকের শেষে, ভারতের রেলপথে ব্রিটেনের বিনিয়োগ ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ড-স্টার্লিং – ব্রিটেনের বাইরে সাম্রাজ্যের সব থেকে বড় বিনিয়োগ।   
এই গ্যারান্টি সিস্টেমে সবকটি চুক্তি ব্রিটিশ কোম্পানির সঙ্গে করতে হত। সরকার নিশ্চিন্ত বিনিয়োগ ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি ছাড়াও দিত বিনামুল্যে জমি, আর সস্তা শ্রমিক। ভারতে বিনিয়োগ হওয়া প্রত্যেকটি অর্থ ব্রিটেনেই তোলা হয়েছে এবং একমাত্র লন্ডনের শেয়ার বাজারেই সেই শেয়ার বিক্রি করাযেত। গ্যারান্টি সিস্টেম ব্যবসায়ীদের চাহিদা না থাকলেও আরও বেশী করে রেলপথ তৈরির প্রণোদনা যোগাত। ১৮৪৯ থেকে ১৯০০ পর্যন্ত ৫৬৮ কোটি টাকা ভারতকে শোধ করতে হয়েছে। ১৮৮২-৮৩ সালেই রেলকে ধরে ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট ছিল ভারতের জাতীয় আয়ের ৪।১৪ শতাংশ(The great trunk-line, running by the Malseje Ghaut in the direction of Nagpur, would be most direct which could possibly be selected to connect Bombay to Calcutta. Commercially, it would be best for the cotton of Berar, while for the first 120 miles from Bombay we would proceed in the immediate direction of the military stations of Ahmed­nuggur, Jaulna and Aurangabad - Irfan Habib, Essays in Indian History: Towards a Marxist Perception, Madras, 1995, pp 279 and 360)। 
উনবিংশ শতকের শেষ অব্দি ভারত ব্রিটিশ তৈরি দ্রব্যের সবথেকে বড়ও বাজার ছিল। ভারত তার বদলে ব্রিটেনকে দিত কাঁচামাল, অপ্রক্রিয়াজাত কৃষি উতপন্ন।  এই সমস্ত কাঁচামাল পোতাশ্রয় পর্যন্ত পৌঁছত ভারতীয়দের করের সাবসিডিতে তৈরি রেলপথে। রেলপথ তৈরির উদ্যমে অন্য কোনও দিকেই নজর ঘোরায় নি ভারত সরকার। ১৮৮০ সাল নাগাদ সেচ ব্যাবস্থায় বিনিয়োগের তুলনায় রেলপথে বিনিয়োগ হয় ১৩গুণ। ১৮৭৭-৭৮এ স্যর আরথার কটন আর ফ্লোরেন্স নাইটিংগল সেচ ব্যবস্থায় বিনিয়োগের দিকে সকলের নজর ঘোরাতে চেয়েছিলেন। তারা বলেছেন গরীব ভারতীয়দের ওপর ১৬০ মিলিয়ন টাকার বোঝা চাপানো হচ্ছে। গান্ধীও পরে একই কথা বলেছেন।
 রেল ভারতজুড়ে বছরের পর বছর একচেটিয়া ব্যাবসা করেছে। সরকারি বা বেসরকারিস্তরেও জলপথ, সড়ক অথবা অন্যান্য পরিবহনে বিনিয়োগে উতসাহ দেখা যায় নি। রেল কোম্পানিগুলির ওপর সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রন ছিলনা, করতেও চায়নি। ভারতের মোট রেল ব্যাবসা নিয়ন্ত্রন করত মাত্র পাঁচটি ব্রিটিশ কোম্পানি। প্রত্যেকটির উদ্দেশ্য সর্বোচ্চ  লাভ। কোম্পানিগুলির মূল ব্যাবসা যেহেতু ছিল সরকার আর সরকারের অন্যতম অংশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে, তাই কোম্পানিগুলো পরিবহন শুল্ক কমাতে চাইত না।  মনেরাখতে হবে ভারত সরকার এই ব্যবসার অন্যতম বড় অংশিদার। ফলে সরকারের কাছে ছাড় চাওয়ার কোন সুযোগও ছিলনা।
তবে ব্রিটিশ ব্যাবসার মুনাফার জন্য রেল কম্পানিগুলি নানাধরনের শুল্ক বরাদ্দ করত। বন্দর থেকে ভারতের যে কোনও স্থানে পন্য আনতে গেলে কম শুল্ক দিতে হত।  ভারত থেকে কাঁচামাল বন্দর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার খরচও কম ছিল।  কিন্তু ভারতের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মাল পরিবহন করতে অনেক বেশী পরবহন শুল্ক দিতে হত। অর্থাৎ ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারি মদতে অতিরিক্ত ছাড় আর ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক। সবথেকে বেশি ছাড় পেয়েছে লন্ডনের লোহা আর রং কোম্পানিগুলি। কেননা রেলপথ তৈরিতে এই দুটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হত।

সুত্রঃ British Imperial Railways in Nineteenth Century South Asia
Laxman D Satya (lsatya_99@yahoo.com) is at the  Department of History, Lock Haven University of Pennsylvania, US.
November 22, 2008Economic & Political Weekly

উপনিবেশ, রেলপথ এবং জঙ্গল, colonial india, railways & looting of jungle

রেল লাইন পাতার জন্য ভারতের জঙ্গল উজাড় হয়ে যায়। গোটা গাছ কেটে রেল লাইন স্লিপার তৈরির কাজ হত। সঙ্গে কাঠের গুঁড়ি দিয়ে ইঞ্জিন চালানো হত। রেল লাইন এবং তাঁর সঙ্গে নানান পরিকাঠমোর জন্য প্রচুর ইট তৈরি করতে হয়। সেতু, কালভারট, স্টেশন, কর্মশালা করার জন্যও অপর্যাপ্ত পরিমানে ইট ব্যাবহার করা হয়েছে। ১৮৫৮র মাঝের দিকে, ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়েজএর হুলহোর ডিভিশনে ১৭ মাইল রেলপথ পাতার জন্য ২০ লক্ষ ইট ব্যাবহার হয়। ৪৫ লক্ষ ইট রাখা ছিল ভাটায় পোড়াবার জন্য, আরও ৭০ লক্ষ কাঁচা ইটের জন্য মাটি তৈরি করে রাখা ছিল। শুধু এই ডিভিশনে ৫০টি ইট ভাটা আড় ১৬টি চুনের ভাটি দিনরাত কাজ করত কাঠের জ্বালনে। ভারতের রেলপথ তৈরির অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ইট তৈরি করা। এই কাজ সরকারি বরাতে রেল কম্পানিগুলি করত।
ভারতের জঙ্গলের শত শত বছরের পুরনো গাছ কেটে রেলপথএর স্লিপার তৈরি হয়েছে। The forests of India were searched and ravaged for supplies of sleeper wood….Indian wood would be felled in a forest, possibly quite distant, by foresters in the employ of timber contractors, …it is clear that the demands for the railways for wood – prime wood for sleepers, buildings and carriages, and lesser wood for firewood for kilns and for fuel for early locomotives-increased the exploitation of India’s forests and the pressure on forest-dwelling people.( Kerr, Building the Railways of the Raj, p 145.) । এই সময় থেকেই ব্যাবসায় কাঠ ব্যবহারের জন্য জঙ্গল সংরক্ষিত করার নীতি শুরু হয়। উদ্দেশ্য শিল্পের জন্য অযুত পরিমান কাঠ সংগ্রহ। ফলে বহু জঙ্গলে থাকা আদিবাসী সমাজ উজাড়-উচ্ছেদ হয়ে যায়। হাজার হাজার বছর ধরে জঙ্গলে বাসকরা, জঙ্গল বাঁচানো, জঙ্গলের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে ভারত সরকার প্রায় অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করে। লড়াই চলতে থাকে। জঙ্গলে থাকা মানুষদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
ভারি, দামী মজবুত কাঠের জন্য ভারতের জঙ্গল বিখ্যাত ছিল। ভারতের কাঠ বহু শত বছর ধরে বিশ্ব বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে।  টিক, শাল, দেওদার, সেডার, চির, পাইন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। ভারতজুড়ে যেহেতু রেলপথ পাতার কাজ চলছিল, ফলে প্রায় সব ধরনের জঙ্গল নির্বিচারে কাটা ও ধ্বংস হয়েছে। এই ধ্বংস সুরু হয় পাশ্চিম ঘাটের মালাবার উপকুলের জঙ্গল কাটা দিয়ে। রেলপথ তৈরির বহু পূর্বে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জাহাজ তৈরির জন্য মালাবার উপকুলের জঙ্গল সাফ করা চলছিল। শেষ ঘা-টি দিল ভারত সরকারের রেলপথ তৈরির প্রকল্প। ১৮৭০ নাগাদ মালাবার জঙ্গল প্রায় সাফ হয়ে যাওয়ার পরে আপার-বার্মার জঙ্গলের দিকে ব্রিটিশ ব্যাবসায়ীদের নজর পড়ে। গঙ্গা অবধৌত এলাকায় রেলপথ পাতার কাজ সুরু হলে ব্যাবসায়ীদের হাত পড়ল হিমালয়ের ঘন জঙ্গলে। বাংলার হাজার হাজার মাইলজোড়া পশ্চিম-তরাই অঞ্চলের শাল জঙ্গলও রেল প্রকল্পর জন্য সাফ করা হতে থাকল। এই জঙ্গলগুলোয় নতুন গাছ বসাবার দায় কেউ গ্রহণ করল না। শাল কাঠ দীর্ঘ, মজবুত অথচ নমনীয় তন্তুর জন্য রেল প্রকল্পগুলোর জন্য আদর্শ কাঠ হিসেবে গণ্যও হতে থাকে। উনবিংশ শতকে শাল কাঠের অপ্রতুলতা সুরু হয়, দামও আকাশ ছোঁয়।
১৮৬০এর পর থেকে টিক আর শাল কাঠের দাম বাড়ায় উত্তর ভারতের রেল উদ্যমীদের নজর পড়ল উত্তর ভারতের পাহাড়ি দেওদার গাছের দিকে। Exploitation of the deodar forests soon became the central focus of the first half century of Forest Department’s work in the Himalayas, first for the continuing depletion of the deodar stands and later for the gradual stabilisation of commercially valuable timber lands in the system of Reserved Forests(Richard Tucker, ‘The British Colonial System and the Forests of the Western Himalayas, 1815-1914’ in Richard Tucker and John Richards (eds), Global Deforestation and the 19th Century World Economy, Durham, 1983, p 158-59.). ১৮৭০-৮০র দশকে উত্তর পশ্চিম ভারতে রেলরাস্তা পাতা শুরু হওয়ার পর হিমালয়ের দেওদার জঙ্গল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
১৮৭০এর প্রথম দিকে ভারতের সবথেকে বড় রেল প্রকল্প, দিল্লি থেকে রাজস্থান রেলপথে ৮ লক্ষ স্লিপারএর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই অযুত পরিমানের স্লিপারের জন্য উত্তর গঙ্গা আর সিন্ধু নদী উপত্যকা, পাহাড়ি পাঞ্জাব এবং কাশ্মীরের জঙ্গল পুরপুরি সাফ হয়ে যায়। একই সময়ে লাহোর থেকে করাচির রেল রাস্তা তৈরি হয় পাঞ্জাবের গম ইউরোপ রপ্তানি করার জন্য। শুধু উত্তরপ্রদেশেই ১৮৭০এ ৭৮০০০ থেকে ১৪৭০০০ গাছ কাটা হয়। ৮০র দশকে এই পরিমান দ্বিগুণ হয়(ঐ)। এক মাইল রাস্তা পাতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১০, ১২ আর ৬ ইঞ্চির ১৭০০ স্লিপার আর ১।৫ টন কাঠের চাবির(উডেন কী)। একটি স্লিপার তৈরির জন্য পুরো একটা বয়স্ক গাছ কাটার প্রয়োজন হত।
জনৈক জার্মান ব্যবসায়ী(ফরেস্ট এজেন্ট) ডীয়েত্রিশ ব্রান্দিস(Dietrich Brandis)কে ভারত সরকার বন দপ্তরের নিরীক্ষক (ইন্সপেকটর জেনারেল) হিসেবে নিযুক্ত করে ১৮৫৬ সালে, প্রথমে বার্মায় পরে ভারতে। ভারতে তিনি ২০ বছর চাকরি করেন।  তিনি বেশ কয়েকটি সমীক্ষা করে ভারত সরকারকে সেই সমীক্ষাগুলো পেশ করেন। তাঁর সমীক্ষার মূল সুরটিই ছিল জঙ্গলকে আরও বেশি ব্যবসায়ী কাজে ব্যবহার কি করে করা যায়। ১৮৭৮এর এক সমীক্ষায় ব্রান্দিস লেখেন ভারতের রেলপথের স্লিপার সরবরাহের জন্য সরকারের উচিত হিমালয়য়ের জঙ্গল ব্যাবহার করা। ১৮৮০র দিকে প্রথমদিকে রেলপথে পাতা স্লিপার বদলানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ল। তিনি ভারত সরকারকে জানান রেলপথ তৈরির জন্য বছরে ৫ লক্ষ স্লিপার প্রয়োজন। অথচ রেল কর্তৃপক্ষ ঠিক এর দ্বিগুণ স্লিপার ব্যাবহার করে। ব্রান্দিসএর বহু আগেই জঙ্গলকে রেলপথের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে ১৮৬৪তে ভারত সরকার বন দপ্তর গঠন করে। মনেরাখতে হবে ভারত সরকার শুধু প্রশাসনিক কাজের জন্য অথবা বন রক্ষা করার জন্য বন দপ্তর তৈরি করে নি। এই দপ্তরের সঙ্গে রেলপথ বিকাশের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ছিল। রেলপথএর বিকাশ প্রয়োজন ছিল ঔপনিবেশিক অর্থনীতি বজায় রাখার জন্য। সেই প্রয়োজনেই বন দপ্তরের সৃষ্টি।
ভারতজুড়ে রেলপথ বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বনের নির্মূলীকরন ঘটতে থাকে। মাদ্রাজ রেলপথ তৈরির জন্য মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির জঙ্গল কাটা হয়। মাদ্রাজে রেল চালাতে কয়লা না ব্যবহার করে কাঠ জ্বালানো হয়। কাঠের থেকে কয়লার দাম বেশি ছিল। কিন্তু কাঠ বেশি ব্যাবহার করতে হত। প্রতি ইঞ্জিন মাইল চালাবার কাঠ ব্যবহার হত ৮৯.৫৩ পাউন্ড, কয়লা ২৬.৭৩ পাউন্ড।  বন ধ্বংসের জন্য সরকার ব্যক্তি নিয়ন্ত্রিত জঙ্গল থেকে কাঠ কিনতে শুরু করে।  তবে জঙ্গল সংরক্ষণের এই উদ্যোগ যতটা না পরিবেশ বাস্তুতন্ত্র বাঁচাবার জন্য, তাঁর থেকে বেশি ব্যবসায়িক কাজে জঙ্গলের কাঠ তৈরির ভাবনায়। আদতে জঙ্গলের কাঠ সংরক্ষণ করে তাকে বাড়িয়ে আবার বিক্রি বা ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা। 
রেলের উত্তুঙ্গ চাহিদায় জঙ্গল ব্যাপকভাবে ধ্বংস হতে শুরু করে। ১৮৫৯-৬০এর রেভেন্যু বছরে, মাদ্রাজ রেলওয়ের জন্য ২৪৫৭৬৩টি বারথ সরবরাহ করা হয়, এবং সবকটি কাঠের তৈরি। এমনকি মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির রেলপথের জন্য ব্রান্দিস প্রস্তাব দেন, সরকারি জঙ্গলের তুলনায় ব্যক্তিগত মালিকানার জঙ্গলের কাঠ ব্যাবহারের জন্য। ফলে শুধু সরকার নিয়ন্ত্রিত জঙ্গলই নয়, ব্যক্তি নিয়ন্ত্রিত জঙ্গল থেকেও সমান পরিমানে কাঠ ব্যবহার হয়েছে।

সুত্রঃ British Imperial Railways in Nineteenth Century South Asia
Laxman D Satya (lsatya_99@yahoo.com) is at the  Department of History, Lock Haven University of Pennsylvania, US.
November 22, 2008Economic & Political Weekly

Down with UID Project - বাতিল হোক ইউআইডি – আধার প্রকল্প


কর্পোরেট জাল ভেঙে                                       

   

ফিরে আসুক গ্রাম্য সৌন্দর্য   

কর্পোরেট দর্শন মানুষকে সংখ্যা বানায়
        


বাতিল হোক মানুষ নিয়ন্ত্রনের, অধিকার হরণের, মানুষকে শুধুই নাম্বার-এ দেগে দেওয়ার ইউআইডি – আধার প্রকল্প।

আধার কার্ড নয়, আধার প্রকল্প যেন রক্তকরবীর রাজা, যে মানুষকে শুধু নম্বর দিয়ে দাগিয়ে দেয়।

আধারের আজও আইনি বৈধতা নেই।

আধার বর্জন করুন।

থাকলে ব্যবহার করবেন না